ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

পলাতক বাচ্চু রাজাকার: ইন্টারপোল সক্রিয়তা কতোদূর?

আইরিন সুলতানা, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৩
পলাতক বাচ্চু রাজাকার: ইন্টারপোল সক্রিয়তা কতোদূর?

মওলানা আবুল কালাম আজাদ তার স্বরূপে তথা বাচ্চু রাজাকার হিসেবে পুন:পরিচিত হয়েছেন একটা লম্বা সময় পরে। এর মাঝে দীর্ঘদিন টিভি চ্যানেলের ধর্মীয় সওয়াল-জওয়াব অনু্ষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আবুল কালাম আজাদ নামে ধর্মানুরাগীদের চোখে রীতিমত প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছিলেন তিনি।



বস্তুত এভাবেই যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তি-গোষ্ঠী-দল একাত্তরের ঘৃণ্য কৃতকর্ম আড়াল করতে ধর্মকেই বর্ম করে ‘পরকালের ব্যাপারি’ সেজেছিল। ধর্মীয় পদবী মওলানা যুক্ত করে আবুল কালাম আজাদ অসংখ্য মুরিদান গড়ে তুলেছিলেন। একেবারে গোড়ায় যখন অনলাইনে-পত্রিকায় আবুল কালাম আজাদের রাজাকারনামা প্রকাশিত হতে শুরু করে, তখন অনেক শিক্ষিত শ্রেণীভুক্তরাও ধর্মান্ধতার বশে এসব অভিযোগ আমলে আনতে চাননি। তবে আলোচনা বিস্তারিত হতে থাকলে বাচ্চু রাজাকার টিভি চ্যানেলের সাওয়াল জওয়াব অনুষ্ঠানে আচমকাই অনুপস্থিত থাকেন।

বাতাসে কানাঘুষা কমে আসলে পুনরায় টিভিতে আবির্ভূত হন। টিভি পর্দায় বাচ্চু রাজাকারের এই পুনরাবির্ভাব কি টিভি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ছিল? নাকি একদিকে প্রগতিশীলতার স্লোগান, অন্যদিকে ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে চ্যানেলের ‘টিআরপি’ ধরে রাখার প্রতিযোগিতার গরল অংক? নাকি অতীতের বাচ্চু রাজাকারকে ভুলে বর্তমানের মওলানা আবুল কালাম আজাদকে প্রতিষ্ঠাকরণের কোনো এজেন্ডাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছিল?

দু:খজনক হলেও এ উপলব্ধি খুব সুস্পষ্ট, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিকে রাজপথে-মাঠে-ময়দানে-অনলাইনে সময়ে সময়ে জিইয়ে রাখা কিছু মানুষ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোনোদিন এই দেশে হবে এমনটা বিশেষ বিশেষ মহলে ব্যবসায়িক-রাজনৈতিক-স্বার্থান্বেষিক দৃষ্টিতে নৈতিকভাবে কখনই প্রাধাণ্য পায়নি।

চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার প্রথম রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ বাচ্চু রাজাকারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন। হত্যা-ধর্ষণ-লুণ্ঠন-অপহরণ-অগ্নিসংযোগ-আটক-ধর্মান্তরিতকরণ, যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞায় স্বীকৃত সব ধরনের অপরাধই প্রমাণিত ছিল বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে।

দুর্ভাগ্য হল, বাচ্চু রাজাকার আজ পর্যন্ত ফেরারি। যার বিরুদ্ধে আইনগত অভিযোগ উত্থাপিত হবে, যার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে, সেই অপরাধী প্রশাসনের চোখে ধুলো ছুঁড়ে কিভাবে গা ঢাকা দিতে সক্ষম হন এবং এখন পর্যন্ত ফেরারিই থাকেন, সে এক বিরাট রহস্য! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার প্রারম্ভে আওয়ামী লীগের ওপর নাগরিক সমাজের দোদুল্যমান আস্থার এ এক কারণ ছিল। তবে পর পর বেশ  কয়েকটি রায়ে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সর্বোচ্চ শাস্তির ঘোষণায় সরকারের সদিচ্ছা জনতার কাছে বলিষ্ঠতা পেয়েছে।

একটার পর একটা রাজাকারনামা প্রমাণিত হচ্ছে, রায় ধার্য হচ্ছে, সরকার দলীয় রাজনীতিবিদরা সন্তোষ প্রকাশ করছেন, নাগরিক সমাজ রায় কার্যকর করার দাবি তুলছেন। আশ্চর্যজনকভাবে এই পুরো চিত্রে বাচ্চু রাজাকার অবর্তমান।

সর্বোচ্চ শাস্তির রায়ের বিরুদ্ধে বাচ্চু রাজাকারের পক্ষ থেকে আপিল করার আইনগত সময়সীমা অতিক্রম হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। সুতরাং এই বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায় এখন পুনর্বিবেচনার  সুযোগহীন রায়। আসামি কারাগারে আটক থাকলে এই রায়ই চূড়ান্ত বিবেচিত হয়ে রায় বাস্তবায়নে বিধি মোতাবেক আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন করা সম্ভব। কিন্তু  বাচ্চু রাজাকার কোথায়? সরকার কেন নীরব? আদালত কি স্বপ্রোণদিত হয়ে বাচ্চু রাজাকারকে আটকের সময়সীমা বেঁধে দেবেন?

কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী মওলানা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের অন্তর্ধান চিত্রনাট্য একদিনে রচিত হয়নি, এটা বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ প্রতিবেদন অনুসরণ করলে বোঝা যায়। গোটা দশেক পত্রিকায় প্রকাশিত বাচ্চু রাজাকার বিষয়ক সংবাদগুলো পাঠ করলে চিত্রনাট্যটির বিভিন্ন অনুচ্ছেদ ধারাবাহিকভাবে লেখা সম্ভব, যেখানে বাচ্চু রাজাকারের নেটওয়ার্ক যতোটা তৎপর, প্রশাসনের ভূমিকা ততোটাই ঢিলেঢালা।

বস্তুত ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকেই বাচ্চু রাজাকার পরিবারবর্গের সঙ্গে মিলিত পরিকল্পনায় দেশত্যাগের ফিকির করেন। তখন রায় ঘোষিত না হলেও তারা নিশ্চিত ছিলেন বাচ্চু রাজাকারের একাত্তরের কুকীর্তি আদালতে প্রমাণিত হবে। এই অংশে আবির্ভাব ঘটে একই নামের এক হোটেল ব্যবসায়ীর। আবুল কালাম আজাদ নামের এই হোটেল ব্যবসায়ী বাচ্চু রাজাকারের পূর্ব পরিচিত ছিলেন। দিনাজপুরের হিলি সিমান্তে তারই মালিকানাধীন ক্যাপিলা হোটেলে বাচ্চু রাজাকারের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়।

এদিকে ৪ মার্চ  সকাল থেকে কোনো এক বিচিত্র কারণে রটে যায়, এক সময়কার ইসলামী ছাত্র সংঘ ও জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে  বাচ্চু রাজাকার আত্মসমর্পণ করবেন। এই খবর (গুজব বলা যেতে পারে) কিভাবে রটলো এবং কে বা কারা রটালো তা পরিষ্কার নয়।

২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২  বাচ্চু রাজাকারের বিরুদ্ধ তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। আর এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, চূড়ান্ত পলায়ন যাত্রা শুরু হয়েছে ৩০ মার্চ থেকে।  

সংবাদ প্রতিবেদন অনুসরণ করে বোঝা যায়, ৩০ মার্চ মাইক্রোবাসের পেছনের সিটের নিচে বাচ্চু রাজাকারকে শুইয়ে নিয়ে গাড়ি পৌঁছে আগারগাঁওয়ের এক বাসায়। চিত্রনাট্যে ড. ইউসুফ নামের আরেকটি চরিত্রের আবির্ভাব ঘটে, যিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক এবং বাচ্চু রাজাকারের পারিবারিক বন্ধু। আগারগাঁওয়ের ড. ইউসুফের বাসায় কিছুক্ষণ অবস্থান করেন সবাই। এরপর সম্ভবত সাবধানতার অংশ হিসেবে গাড়ি বদল করা হয়। এবার ড. ইউসুফের মাইক্রোবাসে করে হিলির উদ্দেশ্যে সেই রাতেই রওনা হন সবাই। এবারো মাইক্রোবাসের ভেতরে বাচ্চু রাজাকারকে শুইয়ে রাখা হয় যেন চলতি পথে কারো নজরে না আসে। ভোররাতে হিলির নিকটস্থ নির্ধারিত হোটেল ক্যাপিলায় অবস্থান নেন বাচ্চু রাজাকার।

২ এপ্রিল সীমান্ত অতিক্রম করে গন্তব্য পাকিস্তানের পথে রওনা করেন বাচ্চু রাজাকার। এর অর্থ ১ এপ্রিল পর্যন্ত হিলিতেই অবস্থান ছিল বাচ্চু রাজাকারের।

অন্যদিকে, ২ এপ্রিল  বাচ্চু রাজাকারের মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে পেশ করা হয়।

৩ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাচ্চু রাজাকারের উত্তরার বাড়িতে গিয়ে তাকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। মূলত যুদ্ধাপরাধী আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতারের আইনি তৎপরতা সে সময় থেকেই দেখা যায়।

৯ এপ্রিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় যে, বাচ্চু রাজাকার ফেরারি। গণমাধ্যমকে এটাও জানানো হয়, বাচ্চু রাজাকার ভারত হয়ে পাকিস্তানে আত্মগোপন করেছেন। বাচ্চু রাজাকারের পাকিস্তান পৌঁছানোর বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হতে পারে বাচ্চু রাজাকারের ছেলে আর শ্যালককে আটকের পর। ৯ এপ্রিল তাদের আটক করা হয়।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর একটি ইংরেজি ও একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাচ্চু রাজাকারকে আদালতে হাজির হওয়ার হুলিয়া জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

যে প্রশ্নগুলোর ধারাবাহিকভাবে উত্তরহীন থেকে যায় তা হল, গত বছরের ২৫ মার্চ আদালত যখন প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন, ধরে নেই সেদিনই নির্দেশনা না থাকায় আটক করা সম্ভবপর না হতে পারে, কিন্তু  তার গতিবিধির ওপর কেন গোয়েন্দা নজরদারি করা হলো না? ৯ এপ্রিল যখন বাচ্চু মিয়ার পরিবারের সদস্যদের আটক করা হয়, ততদিনে বাচ্চু রাজাকার নিরাপদেই গন্তব্যে পৌঁছেছেন। ৬ দিন পেরিয়ে বাচ্চু রাজাকারের বদলে তার পরিবারের সদস্যদের আটক দেখানো কি ব্যর্থতা নয়? প্রশাসনের সর্ষের মধ্যে কোনো ভূত আছে কিনা, যা হতে পারে বাচ্চু রাজাকারকে কোনো না কোনোভাবে পূর্বাভাস দিয়ে সহায়তা করেছে, তা চৌকষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই তদন্ত করে দেখেছেন বলে আশা করা যায়।

বাচ্চু রাজাকার শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের করাচি পর্যন্ত পৌঁছেছেন বলেই বলা হয়ে আসছে।   উত্তরায় নিজের বাসস্থান থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত পলয়ানযাত্রা অনেকটা এ রকম দাঁড়ায়-
ধাপ-১: উত্তরা, ঢাকা> আগারগাঁও, ঢাকা> শেরপুর, বগুড়া (মধ্যরাত)> জয়পুরহাট (রাত ২টা)> হিলি(হোটেল ক্যাপিলা, রাত ৩টা)
ধাপ-২: হিলি সীমান্ত (২ এপ্রিল)> ভারত (২ এপ্রিল)> ভারত (৩ এপ্রিল)> নেপাল> পাকিস্তান

৩ এপ্রিল যখন উত্তরার বাড়িতে গিয়ে বাচ্চু রাজাকারকে পাওয়া যায়নি, তখনই তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ট্র্যাক করা হলো না কেন, এই প্রশ্নের উত্তর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনকে দিতে হবে। বাচ্চু রাজাকার গোয়েন্দা নজরদারিকে স্বাচ্ছন্দেই ফাঁকি দিয়েছেন। সীমান্তের ওপার থেকেও বাচ্চু রাজাকার নিয়মিত তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন ফোনকল করে, নয়তো এসএমএসের মাধ্যমে।

২ এপ্রিল বাচ্চু মিয়া সীমান্তের ওপার থেকে মোবাইলে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ দিন তার ছেলে তাকে এসএমএস করে একটি ফোন নম্বর পাঠান। নম্বরটি বাচ্চু রাজাকারের ফেলে যাওয়া মোবাইলে সংরক্ষিত ছিল। যার নম্বর পাঠানো হয়, তিনি ডাক্তার এমরান এবং নেপাল থাকেন। ফোন নম্বরটি নেপালে যোগাযোগের জন্য ছিল।

৩ এপ্রিলও ভারত থেকে ফোনে যোগাযোগ হয় পরিবারের সঙ্গে এবং বাচ্চু রাজাকারের অবস্থানের কথাও তার পরিবার জানতে পারে। ছেলের পাঠানো এসএমএস থেকে বাচ্চু মিয়া খবর পান, তাকে আটকের আদেশ জারি হয়েছে। আটককৃত বাচ্চু রাজাকারের ছেলে তার জবারবন্দিতে জানিয়েছেন, বাচ্চু রাজাকারকে একটি নতুন সিটিসেল ফোনসেট কিনে দেওয়া হয়েছিল। পত্রিকায় প্রকাশিত নম্বরটি হচ্ছে ০১১৯৩১৭৯২৭২। দুই ছেলেও দু’টি নতুন ফোনসেট নেন। বাচ্চু রাজাকার ওই দুই নম্বরেই যোগাযোগ করেছেন। বাচ্চু রাজাকার ভারতে অবস্থানকালে সেখানকার নম্বর দিয়েও যোগাযোগ  করেছেন। পাকিস্তান থেকেও বাচ্চু রাজাকার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এমন তথ্যও কিছু কিছু প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। পত্রিকায় এসেছে, গোয়েন্দারা এই সব তথ্য সম্পর্কে অবগত। কিন্তু এতো কিছু জানতে পারার পরও বাচ্চু রাজাকার এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গা ঢাকা দিয়ে থাকেন কী করে?

যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের ফোনসেট জব্দ করলে সকল ফোনকল আর এসএমএস তথ্য সহজেই জানা যায়। বাচ্চু রাজাকার যে ফোন সেটটি রেখে গেছেন, সেখানে তার যোগাযোগের সকল রেকর্ড আর নম্বর থাকবে। নেপালে অবস্থানকারী ডাক্তার এমরানের নম্বরটিও সংগ্রহ করা সহজ। ডাক্তার এমরানের সঙ্গে কি যোগাযোগ করা হয়েছে? বাচ্চু রাজাকারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এর মাঝে কোনো ধরনের লেনদেন হয়েছে কিনা, তা তদন্ত করা জরুরি। বাচ্চু রাজাকারের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কোনো আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, র‌্যাব ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বাচ্চু রাজাকারকে ফিরিয়ে আনতে সকল ধরনের আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। এটাও শোনা গেছে, ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সর্বোচ্চ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরেই অবস্থান করছেন।    খুব অদ্ভূতভাবে গণমাধ্যম, টকশো’, স্লোগান থেকেও বাচ্চু রাজাকার বিস্মৃত হয়ে আছেন দীর্ঘ সময়!

কোনো একটি পত্রিকায় সম্ভবত লেখা হয়েছিল, পাকিস্তানের এক জামায়াত নেতার ছায়াতলে আত্মগোপন করে আছেন বাচ্চু রাজাকার। প্রশাসন তো সময় সময় দাবি করেছেই যে, বাচ্চু রাজাকার পাকিস্তানে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসন যখন সবটাই জানেন, তখন  কালক্ষেপণ না করে জামায়াতের সাবেক রোকন (সদস্য) সর্বোচ্চ সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক, যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু আবুল কালাম আজাদ ওরফে  রাজাকারকে অবিলম্বে কয়েদীর পোশাকে নিশ্চিত করাটা জরুরি। বাচ্চু রাজাকারের রায় কার্যকর করাও অত্যাবশ্যকীয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবশ্য অবশ্যই ইন্টারপোলের সহায়তা প্রাপ্তি কতোটা অগ্রসর হলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। সক্রিয় হোক রাষ্ট্র। সক্রিয় হোক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সক্রিয় হোক গণমাধ্যমগুলো। আর বরাবরের মতো সক্রিয় থাকুক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত প্রতিটি সচেতন নাগরিক।

লেখক: ব্লগার, কবি, কলামিস্ট

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৩
এএসআর/জিসিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।