বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা! পরীক্ষার্থীদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। একে আমরা ‘ভর্তি যুদ্ধ’ নামেও সম্বোধন করতে পারি, যে যুদ্ধে লড়াই করে সারা বাংলাদেশের লাখ-লাখ কোমলমতি শিক্ষার্থী।
অনেকেই ভাবছেন এটা আবার কেমন কথা! তাহলে বিষয়টা একটু বিশ্লেষণ করা যাক- গেরিলা পদ্ধতির যুদ্ধে যেরকম দেখা যায় পূর্বনির্ধারিত কোনো জায়গায় যোদ্ধারা ঝটিকা আক্রমণ করে এবং দ্রুত সরে পড়ে, আবার নতুন কোনো জায়গা টার্গেট করে সেখানে ঝটিকা আক্রমণ করে এবং এভাবে চলতে থাকে।
আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি ঠিক হবার পর দেখা যায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় একই দিনে পড়েছে, আবার কখনও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেদিন পরীক্ষা অন্য আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক তার পরদিন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয়ত দেশের একেক প্রান্তে অবস্থিত।
স্বভাবতই আমাদের দেশের ভর্তি পরীক্ষার্থীরা গেরিলা যোদ্ধাদের মতো একদিন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধ (পরীক্ষা) শেষ করেই পরের দিন দেশের অন্য এক স্থানে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধের জন্য ধাবিত হয়। আর একই দিনে যদি দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থাকে তাহলে ভর্তি পরীক্ষার্থীরা একটিতে অংশগ্রহণ করে যুদ্ধ করতে পারলেও অন্যটিতে বিনা যুদ্ধেই পরাজিত হয়।
এরকম গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করে প্রকৃত যুদ্ধে জয়ী হওয়া গেলেও ভর্তি যুদ্ধে পরাজিত হবার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ একজন পরীক্ষার্থী এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটতে ছুটতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাহলে সে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে কখন? এক্ষেত্রে অনেকে বলতে পারেন পরীক্ষার আগে যদি প্রস্তুতি নিতে হয় তাহলে এতদিন কি সে পড়াশুনা করেনি?
আগে পড়াশুনা করলেও পরীক্ষার আগের দিনের পড়াশুনাটা যে গুরুত্বপূর্ণ সেটা পড়াশুনা জানা লোক মাত্রই জানেন। উদাহরণের মাধ্যমে এটাকে আরেকটু বোধগম্য করা যাক- মনে করুন একটি কাস্তেতে বহু আগে থেকে ধার দেওয়া আছে, কিন্তু বেশ কিছুদিন সেটি ব্যবহার করা হয় নাই, সেক্ষেত্রে কাস্তেটিতে যদি পুনরায় একটু ধার দিয়ে ব্যাবহার করা হয় তাহলে অবশ্যই সেটি শাণিত হবে এবং তার কার্যক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। একজন পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। তাহলে এই গেরিলা পদ্ধতিতে ভর্তি যুদ্ধের প্রতিকার কি? প্রতিকার একটিই তা হল- সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা।
ইতোমধ্যেই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’র (শাবিপ্রবি) সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা-২০১৩ নিয়ে অনেক কিছুই ঘটে গেছে, অনেক গুণীজন অনেক কিছু লিখেছেন, বলেছেন। তথাপি এই বিষয়ে আমি কিছু লিখবার চেষ্টা করলাম, কারণ এই বিষয়টির সাথে আমিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম।
কোনো বিষয়ে অনেক কষ্ট করেও যদি ফল পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তাহলে দুঃখিত হওয়ায় যেকোনো মানুষের জন্য স্বাভাবিক।
যবিপ্রবি ও শাবিপ্রবি’র ভর্তি পরীক্ষা-২০১৩ সমন্বিত ভাবে সংগঠিত করার লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল’র উদ্যোগে ও শাবিপ্রবির আমন্ত্রণে আমাদের উপাচার্য মহোদয়ের নের্তৃতে একটি দল (ডিন, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান গণ ও প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে গঠিত) সন্ধ্যা সাতটায় রওনা দিয়ে সারারাত জার্নি করে পরদিন সকালে শাবিপ্রবিতে পৌঁছায়।
এরপর সারাদিন এই বিষয়ে একের পর এক মিটিং করে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। কোনো রকম বিরতি বা বিশ্রাম না নিয়েই ঐদিন সন্ধ্যায় আবার যশোরের উদ্দেশে যাত্রা করা হয় এবং উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে একমত হন। আমাদের এত কষ্ট শুধুমাত্র ভর্তি পরীক্ষার্থীদের তথা তাদের অভিভাবকদের ‘কিছুটা’ কষ্ট, দুশ্চিন্তা, সময় ও অর্থ লাঘবের জন্যই।
‘কিছুটা’ শব্দটি ব্যবহার করলাম কারণ, এই সমন্বিত প্রয়াস প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র যবিপ্রবি ও শাবিপ্রবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
প্রথমেই আসি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কি, সে বিষয়ে- এটি এমন একটি পরীক্ষা পদ্ধতি যার মাধ্যমে একজন পরীক্ষার্থী একটিমাত্র ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেই তার যোগ্যতা অনুযায়ী বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে (মেডিকেল ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত) ভর্তির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারবে। তবে উক্ত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অবশ্যই তার ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে এবং ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী যেকোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।
এখন আসা যাক কেন এই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা? এই পদ্ধতিতে পরীক্ষার মূল লক্ষ্যই হল পরীক্ষার্থী তথা তাদের অভিভাবকদের অর্থ, কষ্ট ও সময় লাঘব করা এবং বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া। একটি উদাহরণের মাধ্যমে এটিকে আরও একটু বোধগম্য করে তোলা যাক। ধরা যাক, একজন দরিদ্র কৃষক এর একটি মেধাবী মেয়ে আছে, যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক। এখন আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে ধরনের ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি প্রচলিত আছে তাতে করে ঐ দরিদ্র কৃষকের মেধাবী মেয়েটির পক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ৩৪টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক-পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা আদৌ কি সম্ভব? না, বাস্তবে এটা কখনই সম্ভব নয়, এমনকি ১৭টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও পৃথক-পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।
উপরন্তু যেহেতু সে একটি মেয়ে, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে, আমার মনে হয় না ঐ অভিভাবক তার মেয়েটিকে একা একা দেশের অন্য প্রান্তের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দিতে সম্মত হবে। কারণ আমাদের দেশ, এখনও আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আর মেয়েটির সঙ্গে তার অভিভাবককেও যদি ভ্রমণ করতে হয় তাহলে এই ভ্রমণ ব্যয় হবে দ্বিগুণ, যা ঐ দরিদ্র কৃষকের পক্ষে বহন করা শুধু দুরহ নয় বরং অসম্ভব।
আবার মনে করা যাক কোনো পরীক্ষার্থীর পক্ষে এত টাকার ভ্রমণ ব্যয় যোগানো সম্ভব, তথাপি এত অল্প সময়ে ৩৪টি বা তার অর্ধেক ১৭টি স্থানে সে ভ্রমণ করবে কখন, আর পরীক্ষার প্রস্তুতিই বা নিবে কখন? ধরে নিলাম কোনো পরীক্ষার্থী সব রকম ভ্রমণ প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে দেশের অন্য কোনো প্রান্তের স্বনামধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য পৌঁছাল এবং পরদিন উক্ত পরীক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, কিন্তু রাত্রে সে থাকবে কোথায়? এই অচেনা শহরে যদি তার পরিচিত কেউ না থাকে তাহলে সে যাবে কোথায়?
এই বিষয়ে আরেকটি বাস্তব উদাহরণ উপস্থাপন করা যাক- গত বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আগেরদিন রাজশাহী শহরে এতো সংখ্যক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের সমাগম হয়েছিল যে রাজশাহী শহরের সব আবাসিক হোটেলে তাদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই নিরুপায় হয়ে অনেকেই রেল স্টেশনে রাত্রি যাপন করেছেন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। আর যে পরীক্ষার্থী রেল স্টেশনে রাত্রি যাপন করল আর পরদিন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করল তার পরীক্ষাটি কেমন হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
এখন আসা যাক ভর্তি পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাস্তব চিত্র সম্পর্কে, ধরা যাক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একটি বিভাগে ৪০টি আসন রয়েছে এবং উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আগেই উক্ত বিভাগে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। পরবর্তীতে ঐ বিভাগের ভর্তিকৃত ১০ জন শিক্ষার্থী তাদের ভর্তি বাতিল করে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তাদের পছন্দের কোনো বিভাগে ভর্তি হল। এমতাবস্থায় পূর্বের বিশ্ববিদ্যালয়টির উক্ত বিভাগের ৪০টি আসনের মধ্যে ১০টি আসন ফাঁকা থেকে যায় অনেকসময়ই। যদি ৩৪টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গড়ে ১০টি করে বিভাগের ১০টি করে আসনও ফাঁকা থাকে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে মোট ফাঁকা আসন সংখ্যা হয় ৩৪০০টি।
যেখানে বর্তমানে একটি আসনের বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে গড়ে ২০-৪০ জন পরীক্ষার্থী বা তারও বেশি, সেখানে উক্ত বছর ভর্তি পরীক্ষা শেষে ৩৪০০টি আসন ফাঁকাই থেকে যায়। কিন্তু সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হলে এই সমস্যাটি থাকবে না।
কিভাবে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে- এই বিষয়ে অনেকেরই ভিন্ন মতামত থাকতে পারে কেউ বলবেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসাথে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসাথে এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসাথে।
তবে একান্তই আমার মতে এইরকম গ্রুপিং এ না গিয়ে সহজেই একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। তা হলো- সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদের পরীক্ষা একসঙ্গে আলাদা-আলাদা দিনে নেওয়া যেতে পারে। যেমন- সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একদিনে হবে, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা একদিনে অনুষ্ঠিত হবে, মানবিক অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা একদিনে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এক্ষেত্রে মেধাক্রম অনুযায়ী পরীক্ষার্থী তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।
আমারা যেহেতু কয়েকবার দুর্নীতিতে বিশ্ব রেকর্ড করেছি তাই এক্ষেত্রে কথা উঠতেই পারে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। সব বিশ্ববিদ্যালয় যদি সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে সম্মত হয় সেক্ষেত্রে প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধে বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
উক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে অনেক আগে থেকেই সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কথা বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে শাবিপ্রবির অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অবদান অনস্বীকার্য যিনি অনেক আগে থেকেই এই বিষয়ে প্রাণান্ত প্রচেষ্টা করে চলেছেন। আর এ কারণেই সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা কথাটা উল্লেখ করলে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর নাম এমনিতেই চলে আসে, আর এর ধারাবাহিকতায় আমার লেখার শিরনামটি এমন।
বড় বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এমতাবস্থায়, সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ যে সম্ভব এবং পরীক্ষার্থীদের তথা অভিভাবকদের কষ্ট, অর্থ, ও সময় লাঘব এবং বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই প্রথমবারের মতো যবিপ্রবি ও শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যে সিদ্ধান্ত কে ইউজিসি তথা সর্ব স্তরের জনসাধারণ স্বাগত জানিয়েছিল।
এক্ষেত্রে অনেকেই হয়তোবা গভীর কোনো রহস্যের গন্ধ খুঁজে ফিরছেন- কেন সব বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ না করে শুধু যবিপ্রবি ও শাবিপ্রবি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হলো?
আসলে এখানে রহস্যের কোনো অবকাশই নেই, এটা সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের একটা যুগান্তকারী প্রথম পদক্ষেপ। ঐতিহ্যবাহী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে সমস্যার কথা বলে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের অনীহা প্রকাশ করছে, সেই সমস্যাগুলো যে আদৌ কোনো সমস্যা না, তা প্রমাণেরও এটি একটি পদক্ষেপও বটে।
এই সমন্বিত পদক্ষেপটি সফল হলে একথা নির্দিধায় বলা যায় যে, পরের বার আরও বেশি সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের ঠিক আগ-মুহূর্তে এমন উদ্যোগকে আবার কেন অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হলো তা আমার বোধগম্য নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় বলতে আমি বুঝি একটি অসাম্প্রদায়িক উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে সব দেশের, সব অঞ্চলের যোগ্য শিক্ষার্থীদের বিচরণ থাকবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে আদৌ আঞ্চলিককরণ এর কোনো সুযোগ আছে কিনা তা আমার জানা নেই।
লেখক: ইঞ্জিনিয়ার ইমরান খান
শিক্ষক, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইল: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৩