সম্প্রতি আফগানিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আলকায়েদা প্রধান বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড টপটেরর জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ এক অডিও বার্তায় বাংলাদেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ‘ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানানো হয়।
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের নামে তাণ্ডবের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির পতনের স্বপ্ন দেখেছিলো যুদ্ধাপরাধী শক্তি।
জাওয়াহিরির এই বার্তায় রাজপথে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে। আর বাংলাদেশ সরকারকে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার হিসাবে ‘ইসলামবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছেন জাওয়াহিরি। মিশরীয় এই জঙ্গি সংগঠক তার অনুসারী জামায়াত-হেফাজতিদের বিপন্নতা সইবে কী করে! যারা গত কয়েক দশক থেকে তাদের অর্থ এবং মানুষ যোগান দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক লবিস্ট টোবি ক্যাডম্যান ও আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি জামায়াতে ইসলামীর হয়ে বর্তমান সরকারকে হুমকি দেবার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, সন্ত্রাসীদের আওয়ামী লীগকে ভয় করা উচিত।
গত রোববার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জয় লিখেছেন, বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী আয়মান আল-জাওয়াহিরি আমাদের সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন তার সন্ত্রাসী ভাইদের দমন করায়, যাদের ক্যাডম্যান রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
আমার কাছে বিষয়টা খুব মজার মনে হয়েছে, টোবি ক্যাডম্যান এবং আল-কায়েদা উভয়ই জামায়াতের পক্ষ থেকে আমাদের সরকারকে হুমকি দিচ্ছে।
আমরা একজন ভাড়াটে আইনজীবী ও দালাল পেয়েছি, যিনি তাদের পক্ষে, যারা পথচারীদের ওপর নির্বিচারে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। সেই বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে ক্যাডম্যানের অভিযোগ এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-কায়েদা প্রধানের জিহাদের ডাক বাংলাদেশ সরকারের জন্য ভালো হয়েছে মনে করেন জয়। জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ও তাদের আইনি প্রতিনিধিদের সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছে, এটা তাই প্রমাণ করে যে, আমরা ভালো লোক।
আমি অতিশয় আনন্দিত যে, সন্ত্রাসীরা আমাদের একই সঙ্গে ঘৃণা এবং ভয় করে! তাদের উচিৎ আওয়ামী লীগকে ভয় করা, অনেক ভয়।
জয় বলেন, সরকার ও তার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শুধু অধিকার নয়, তাদের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব নাগরিকদের জীবন রক্ষা করা। যদি কোনো সন্ত্রাসী মানুষের গায়ে আগুন দিতে চায় বা বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতে চায়, পুলিশের দায়িত্ব তাদের থামাতে যে কোনো এবং সব ধরনের প্রয়োজনীয় বল প্রয়োগ করা।
যখন একজন নিরীহ নাগরিক এবং একটা সন্ত্রাসীর মাঝ থেকে বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে তখন আমরা অবশ্যই বেছে নেব কীভাবে নাগরিকদের রক্ষা করা যায়।
কথাটি এক অর্থে ঠিক বলেছেন তিনি, রাষ্ট্রক্ষমতায় আওয়ামী লীগ থাকলে যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়, যদি কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী বা জঙ্গি সংগঠন এদেশের মাটিকে ব্যবহার করে প্রশ্রয় না পান, তবে আওয়ামী লীগ তাদের ত্রাস বটে, তারা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার সব ধরনের ষড়যন্ত্র করবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে জেনে বা না জেনে যখন সেই ষড়যন্ত্রের সহায়ক শক্তি হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীর সংশ্লিষ্টতা থাকে – তা ভয়ংকর বিপজ্জনক! এ কারণে সরকার এবং দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সতর্ক ভূমিকা জনগণ প্রত্যাশা করে।
গত বছরের হেফাজতের সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের পতনে ব্যর্থ হয় জামায়াত-বিএনপি। তার ঝাল মেটাতে হাজার হাজার 'তৌহিদী' জনতা হত্যা'র গুজব ছড়ানো পুরনো প্যাচাল নতুন করে আল-কায়েদার বার্তায় প্রচার করে যুদ্ধাপরাধীদের নির্লজ্জ সমর্থন করা হলো।
একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরির ক্ষোভ স্পষ্ট হয়েছে এ বার্তায়। ঘাতকের প্রতি ঘাতকের, ধর্মব্যবসায়ীর প্রতি ধর্মব্যবসায়ীর টান থাকবেই। তবে এক গোয়ালের গরুর লক্ষ্য এক। সেটা আদায়ে ষড়যন্ত্র, দায়িত্ব আর যন্ত্রণা যে একই, এই সহজ কিন্তু ভয়ংকর বাস্তবতা বুঝতে বা মেনে নিতে আমাদের সমস্যা কোথায়? প্রতিরোধের প্রস্তুতি কতোটা আমাদের? কেবলই মতভেদ আর বিচ্ছিন্নতা। আর কতো? দেয়াল সন্নিকটে। পিঠ ঠেকে গেছে। আর বিভ্রান্তির সুযোগ নেই।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক ১৭ ফেব্রুয়ারি কুতুবদিয়ায় নৌবাহিনীর বার্ষিক মহড়া দেখার পর জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পষ্টভাবে বলেছেন, বাংলাদেশে আল কায়দা আগে যে ফেসিলিটিজ পেতো, তা এখন পায় না বলেই হুমকি দিচ্ছে।
তাই আল কায়দার হুমকি সবসময় আছে , তা মোকাবেলায় সরকার প্রস্তুত । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই বলেছেন, এদের বের করে দাও। অনেককে বের করে দেয়া হয়েছে। আগে অনেক সরকারি সংস্থাও তাদের সুবিধা দিয়েছিল। তাই প্রধানমন্ত্রীর জীবনের ঝুঁকি অনেক আগে থেকেই আছে।
প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল তারেকের এ বক্তব্য বাস্তব সত্য বলেই আমরা বারবার জেনেছি।
সারা বিশ্বে আল কায়দা বা মুসলিম ব্রাদার হুড ভয়ংকর সন্ত্রাসের নেতৃত্ব দিচ্ছে, তার জবাবও পাচ্ছে। মুরসির ফাঁসি নিশ্চিত বলে বলছে আমার মিশরীয় অনেক বন্ধু। মানবতার চরম অবমাননার শাস্তি একদিন পেতেই হয়-এ তার প্রমাণ। এ বাস্তবতায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আল কায়েদা বা মুসলিম ব্রাদারহুডের জঙ্গিবাদ এবং সভ্যতার প্রতি তারা কতো বড়ো হুমকি সে সম্পর্কে স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি।
আল কায়দার হুমকি বাংলাদেশের জন্যে নতুন কিছুই নয়। জাওয়াহিরির মরিয়া বক্তব্যের এ বার্তা জামায়াত-বিএনপি প্রেমীদের একাত্মতা নতুন করে মনে করিয়ে দিলো কেবল।
ভারতের বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারিত হয়েছে, জামায়াতে ইসলাম আর ভারতের আম আদমি পার্টি একাট্টা হয়েছে । বাংলাদেশ, ভারত আর পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামী সব সময়ই আল কায়েদার সঙ্গে কাজ করছে। ভারতের আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লীতে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামী তাদের সঙ্গেই আছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের জামায়াতে ইসলাম হিন্দ এর কেন্দ্রীয় কমিটি মারকাজে মজলিশে শুরার প্রভাবশালী সদস্য হাসান রাজা ইসলামিক একাডেমিসহ জামায়াত নিয়ন্ত্রিত অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং তার সভাপতিত্বে দিল্লিতে আয়োজিত এক বিশাল অনুষ্ঠানে তারা আম আদমি পার্টিকে আমন্ত্রণ জানায়।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ছিল জামায়াতের সহযোগী সংগঠন ইউনাইটেড মিল্লি ফোরাম। ছবিসহ এই সংবাদ প্রকাশ করে জামায়াতের সহযোগী এ সংগঠনগুলোকে কাগুজে বাঘের সঙ্গে তুলনা করেছে নর্দান ভয়েজ অনলাইন। জামায়াত আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের অতিথি আম আদমি পার্টির শীর্ষ সংগঠক সঞ্জয় সিং জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে বলেছেন, আম আদমি পার্টি ধর্ম বর্ণ গোত্র ভেদাভেদ করে না। তাই তারা জামায়াতের সঙ্গে একাত্ম।
পাকিস্তানের কোন কোন গণমাধ্যম বাংলাদেশের সাফল্যের সংবাদ গর্বের সঙ্গে প্রচার করছে। ২৩ অক্টোবর ২০১৩ পাকিস্তানের সাংবাদিক মুতাজা হায়দার ডন পত্রিকায় রিপোর্ট করেছেন, ১৯৭১ সালে যে বাংলাদেশকে জুলফিকার আলী ভুট্টো ‘শুয়োরের দেশ’ (শুকরের দেশ) বলেছিলো, পশ্চিম পাকিস্তানিরা ‘ভুখা নাঙ্গা’ বলে যে বাঙালিদের বকা ঝকা করতো, একাত্তরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা অর্জন করে সেই বাংলাদেশ এখন পাকিস্তান, এমনকি ভারতকেও ছাড়িয়েছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতায়।
তাই বাংলাদেশ আর দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুধাপীড়িত দেশ নেই । গ্লোব্যাল হাঙ্গার ইনডেক্স এর জরিপ তুলে ধরে ডন লিখেছে, পাকিস্তান এখনো ক্ষুধাপীড়িত নাগরিকদের মুখে অন্ন জোগানোর চেষ্টায় ছুটাচ্ছে, আর বাংলাদেশ মানব উন্নয়নের ঘোড়ায় লাগাম ছুটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দোর্দণ্ড প্রতাপে।
সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করে জঙ্গি গোষ্ঠী সর্বত্র হত্যা, সন্ত্রাস আর পহরণের তাণ্ডব চালাচ্ছে।
পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ আল আদল ইরান ও ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র সিরিয়ায় বন্দি ৩শ’ সুন্নির সঙ্গে তাদের বিনিময় করার দাবি করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষের কাছে । সুন্নি এ জঙ্গিগোষ্ঠী বলেছে, ইরানি রক্ষীদের আটকের পেছনে তাদের হাত রয়েছে। অজ্ঞাত জায়গায় ৫ জনকে বেঁধে রাখা হয়েছে। এমন একটি ছবি পোস্ট করে তা ইরানি রক্ষীদের বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটি।
শুক্রবার আল আরাবিয়া টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিওতে, আটককৃত ইরানি রক্ষী সার্জেন্ট জামশেদ দানাইফার্দ ভিডিওতে বলেছেন, তারা নিরাপদ ও ভালো আছেন। এদের মুক্ত করতে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে দেশটিতে সেনা অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছে ইরানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুলরেজা রহমানি ফাজলি।
বিবিসি বলেছে, ৮ ফেব্রুয়ারি ওই রক্ষীদের ইরানের সিসতান বেলুচিস্তান অঞ্চল থেকে আটক করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। কঠোরতার সঙ্গে বিষয়টি দেখার ও বন্দিদের মুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ইসলামাবাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন ইরানি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাজলি।
ইরানি রক্ষীদের যে দিন আটক করা হয়, সেই দিনই ইরানে নিযুক্ত পাকিস্তানি শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে ডেকে পাঠায় ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই বিষয়ে ইসলামাবাদ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির নেতাদের ও সদস্যদের (যারা পাকিস্তানে পালিয়ে গেছে) বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে দাবি জানায়।
১৭ ফেব্রুয়ারি একই দাবির পুনারাবৃত্তি করে ফাজলি বলেছেন, অন্যথায় আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের অবশ্যই ইরানকে কাজ করার অনুমতি দিতে হবে।
আবারো পাকিস্তানের ডন পত্রিকার একটি সংবাদ তুলে ধরতে হয়।
২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মোস্ট ওয়ান্টেড এক্সট্রিমিস্ট লিডার আবু জারারা আল ইয়েমিনিকে পাকিস্তানের মুরিরি এলাকার সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্যাকেশন স্পটের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় সৌদি আরবের বিশেষ বাহিনী। ৪টি হেলিকপ্টারে করে এই বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানের পাঞ্জাবের রাওয়িন্ড এলাকায় অবতরণ করে।
সেখান থেকে উটে চড়ে মুরুরি এলাকায় গিয়ে ঘাড়ে ধরে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় শীর্ষ সন্ত্রাসী জারারাকে । জামায়াতে ইসলাম পাকিস্তান এবং অন্যরা ঘটনার বর্ণনা শুনে প্রাথমিকভাবে ধারণা করে, এই গ্রেফতার অভিযান মার্কিন বাহিনীর। জামায়াতে ইসলাম পাকিস্তান এবং জামিয়াত উলামায়ে ইসলাম বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রাস্তায়।
পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন করে বারবার এমন মার্কিনি হামলা বরদাশত করা হবে না। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশের জন্যে দাবি তোলে। এমনও বলে, যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে যদি জারারাও হয়, পাকিস্তান সরকারের লজ্জিত হওয়া উচিত! কারণ, সে একজন মুক্তিযোদ্ধা; আমেরিকার বিরুদ্ধে সে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করছে! কিন্তু জারারাকে গ্রেফতার করেছে সৌদি আরব বাহিনী –এ তথ্য জানার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াতি ঠগবাজ নেতাদের এতোক্ষণের ক্ষুব্ধ মনোভাব আর কুঁচকানো ভুরু বদলে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠে। নিজেদের দেশে ‘বাপের দেশ’ সৌদি আরবের অভিযানে যেন চরম উল্লসিত তারা। ঘটনার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়ে পাকিস্তানের জনগণ এবং সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানায় পাকিস্তানের জঙ্গিবিরোধী অভিযান সফল করা এবং এতে সহযোগিতা করার জন্যে। এবার জামায়াত কার পক্ষে বলবে?
যথারীতি এখানেও একই হঠকারী ভণ্ড আচরণ জামায়াতের। চট্টগ্রামের লালখান বাজার মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি ইজাহার এর মাদ্রাসায় ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর হ্যান্ড গ্রেনেড তৈরির সময়ে শক্তিশালী বিষ্ফোরণে তিন মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হয়। ঘটনার পরপর হেফাজতে ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে মুফতি ইজাহারের সঙ্গে কন্ঠ মিলিয়ে হাস্যকরভাবে বলে, এ ঘটনা সামান্য কম্পিউটার বিষ্ফোরণ এবং পুরোটাই পুলিশের সাজানো । এ মামলায় ইজাহার এবং তার পুত্র হেফাজতের সামরিক শাখার প্রধান হারুণ ইজাহারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, ইজাহার এবং তার পুত্র হেফাজতের কেউ নয়! চমৎকার!
সুমি খান: সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক, [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৪