ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মুক্তমত

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস

.. | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৪
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস

আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। বর্তমান দুনিয়ায় গণতন্ত্র একটি বিশ্বজনীন মতাদর্শ হলেও দিবসটির প্রচলন হয়েছে বেশি দিন হয়নি।



বিশ্বের বিভিন্ন দেশ দিবসটি ভিন্ন ভিন্ন দিনে পালন করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরে, নাইজেরিয়ায় ২৬ মে।
তবে ২০০৭ এর ১৫ সেপ্টেম্বর দিবসটির প্রচলন হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করে আসছে জাতিসংঘ ও তার সদস্য দেশগুলো। দিবসটির উদ্দেশ্য হল গণতান্ত্রিক আদর্শ-নীতির বিকাশ ও সম্প্রসারণ।

দিনটিতে জাতিসংঘ তার সকল সদস্য রাষ্ট্রকে নিজ নিজ জনগণের মাঝে গণতন্ত্রের গুরুত্ব, তাৎপর্য, নীতি ও আচরণসহ গণতন্ত্রাকি ব্যবস্থা সম্পর্কে গণসচেতনা ছড়িয়ে দেয়ার আহবান জানায়।

পটভূমি
১৯৯৭ সালে ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকদের মধ্যে সংলাপের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ‘ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন’ (আইপিইউ) গণতন্ত্র বিষয়ে ‘ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অন ডেমোক্রেসি’ নামের একটি প্রস্তাব আনে। তাতে গণতন্ত্রের নীতি, আদর্শ, উপাদান, গণতান্ত্রিক সরকারের চর্চা এবং গণতন্ত্র সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরির বিষয়ে ঘোষণা দেয়া হয়।    

ফ্রান্সের এই প্রস্তাবেরও আগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। ফিলিপাইনে ফার্ডিনান্ড মার্কোজের ২০ বছরের স্বৈরশাসনের পতনের মধ্য দিয়ে দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরে আসার পর এ সম্মেলন হয়। ১৯৮৮ সালে ফিলিপাইনে নতুন করে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কোরাজন সি. আকুইনোর উদ্যোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এ সম্মেলন হয়। সম্মেলনের নাম ছিল ‘দি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন নিউ এন্ড রিস্টোরড ডেমোক্রেসিজ বা আইসিএনআরডি।
41_63215690
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট, পার্লামেন্ট সদস্য, সুশীল নেতৃবৃন্দ এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে গণতন্ত্র সম্পর্কে তিনটি মৌলিক দিক তুলে ধরা হয়। এক. সরকারে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া, দুই. পার্লামেন্ট, তিন. সিভিল সোসাইটি বা সুশীল সমাজ। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার, পার্লামেন্ট ও সুশীল সমাজ—এই তিন পক্ষের অংশগ্রহণকে এই সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণভাবে দেখা হয়।  

২০০৬ সালে আইসিএনআরডি এর ষষ্ঠতম সম্মেলনটি হয় কাতারের রাজধানী দোহায়। কাতারের এই সম্মেলনে গণতন্ত্রের মৌলনীতি ও মূল্যবোধ কার্যকরকরণ ও সম্প্রসারণে একটি কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। এর অংশ হিসেবে একটি উপদেষ্টা বোর্ডও গঠন করা হয়। বোর্ডে কাতার একটি ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ এর প্রস্তাব আনে।

পরবর্তীতে কাতারের নেতৃত্বে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়। সেইসাথে জাতিসংঘভুক্ত সদস্যদেশগুলোর কাছে এ বিষয়ে পরামর্শ ও প্রস্তাবও আহবান করা হয়। পরে ফ্রান্সের আইপিইউ ১৫ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক দিবস হিসেবে নির্ধারণে প্রস্তাব করলে প্রস্তাবটি ২০০৭ সালের ৮ নভেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়।    

২০০৮ থেকে দিবসটি আন্তর্জাতিকভাবে যথারীতি উদযাপিত হয়ে আসছে। সেসময় গণতন্ত্রের সব দায় দায়িত্বপূর্ণ প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসেবে পার্লামেন্টকে ঘোষণা করা হয়।

এবার আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হল, গণতন্ত্রে তরুণদেরকে যুক্ত করণ। আজ দিনটি উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বিশেষ বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি গণতন্ত্রের ইতিহাসে তারুণ্যের শক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।