ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তমত

লতিফের দাম্ভিকতাতেই সর্বনাশ

নঈম নিজাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪
লতিফের দাম্ভিকতাতেই সর্বনাশ লতিফ সিদ্দিকি

ঢাকা: টাঙ্গাইলের সিদ্দিকী পরিবারের সঙ্গে আমার অনেক দিনের একটা সম্পর্ক। ছোটবেলা থেকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলাম।

একজন মানুষ দুবার দেশপ্রেমের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। ‘বাঘা বাঙ্গালী’ ছবিটি দেখেছিলাম মুগ্ধ নয়নে। বীরত্বগাথা এক ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর পায়ের তলায় এক স্টেডিয়াম অস্ত্র জমা দিচ্ছেন এক বীর যোদ্ধা। সেই যোদ্ধা দেশ ছেড়ে ভারত যাননি। নিজ দেশে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। পাকিস্তানি সেনাদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে এই বিশ্বকে তাক লাগিয়েছিলেন।

১৬ ডিসেম্বর বিজয় মুহূর্তে জেনারেল নিয়াজির বাড়িয়ে দেওয়া হাত প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ভারতীয় জেনারেল ওবান পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন নিয়াজিকে। বলছিলেন, এই হলো টাইগার সিদ্দিকী। নিয়াজি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে হাত বাড়ালেন। টাইগার সিদ্দিকী গর্জে উঠেছিলেন। বলেছিলেন, লাখো লাখো মানুষকে হত্যার নির্দেশ দাতার সঙ্গে হাত মেলাতে পারি না।

ইতিহাসের এখানেই শেষ নয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনকের নৃশংস হত্যাকাণ্ড মেনে নিতে পারেননি। আবারও অস্ত্র হাতে তুলে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তারপর দীর্ঘ নির্বাসন। দেশে ফিরলেন এরশাদের পতনের পর। আর তখন থেকেই আমার সঙ্গে কাদের সিদ্দিকীর সম্পর্ক। এই সূত্রে সম্পর্ক মুরাদ সিদ্দিকীর সঙ্গেও। আর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে পরিচয় একই সময়ে। যদিও লায়লা সিদ্দিকীর নির্বাচনে অংশ নেওয়া, সংবিধান সংশোধনীতে ভোট দান, লতিফ সিদ্দিকীর মুক্তি সব চোখে দেখা। কিন্তু লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে সম্পর্ক কখনোই উন্নত হয়নি।

আওয়ামী লীগে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দ্বিতীয় দফা উত্থান কাদের সিদ্দিকীর বিদায়ের পর। কিন্তু এ সময় তিনি ভাইবোনদের কাছে টানেননি। বিএনপির শাসনকালে মুরাদ সিদ্দিকীকে আওয়ামী লীগে নেওয়ার কথা ছিল। মনোনয়ন প্রশ্নে যোগাযোগও হয়েছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সঙ্গে। কিন্তু বাধা দিয়েছিলেন লতিফ সিদ্দিকী নিজে। এমনকি সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র কয়েক হাজার ভোটে হেরেছেন মুরাদ সিদ্দিকী। ভাইয়ের বাড়ি গিয়ে ফিরে এসেছেন মন খারাপ করে। কোনো সহায়তা পাননি।

আওয়ামী লীগের গত ৬ বছরের শাসনকালে লতিফ সিদ্দিকী ছিলেন মহাদাপুটে মানুষ। ওয়ান-ইলেভেন থেকে লাইম লাইটে এসে ষাটের দশকের এই নেতা এক ধরনের অহমিকা নিয়ে চলতেন। মন্ত্রণালয়ে, রাজনীতিতে তার পথ চলা ছিল লাগামহীন। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে থাকাকালীন সময়ে যা খুশি তা করেছেন। রাম রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। ধরাকে সরা জ্ঞান ছিল। মন্ত্রণালয়ের শত শত একর জমি বিলিয়েছেন জমিদারি স্টাইলে। সরকারের বস্ত্র অথবা জুট মিল ছেড়ে দিয়েছেন সাদা কাগজে লেখা দরখাস্তের ওপর। সচিব প্রশ্ন তুলেছিলেন নীতিমালা নিয়ে। নিজের হাতে তিনি লিখে দিয়েছিলেন নীতিমালা বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করো। মতিঝিলের দামি জমি দান করেছেন চট্টগ্রাম সমিতিকে। ফাইলে লিখেছেন, চট্টগ্রামের মেয়ের পাণি গ্রহণ করেছি, তাই এই জমি চট্টগ্রাম সমিতিকে বরাদ্দ দেওয়া যায়। একজন মন্ত্রী এভাবে ফাইলে লিখতে পারেন না। সব কিছুর একটা নিয়ম আছে, নীতি আছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে এভাবে নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করা যায় না। জমিদারি স্টাইলে মন্ত্রণালয় চালানো যায় না। রাজনীতি করা যায় না। লতিফ সিদ্দিকী তা করেছেন। তিনি শপথ ভঙ্গ করেছিলেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিনে আমরা গত এক বছর লতিফ সিদ্দিকীর সেই সব কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক খবর প্রকাশ করেছি। আমার ধারণা ছিল সরকার সতর্ক হবে। ব্যবস্থা নেবে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং ফিফথ ডিভিশন (গত ৫ জানুয়ারির পর থেকে যারা আওয়ামী লীগ) আমাদের সমালোচনা করল। আমরা আরও বড় সর্বনাশের অপেক্ষায় থাকলাম। সেই সর্বনাশই হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। লতিফ সিদ্দিকী জ্যাকসন হাইটসের খাবার বাড়ি রেস্টুরেন্টের নিচের হলরুমে টাঙ্গাইল সমিতির অনুষ্ঠানে অকারণে অতি কথন করলেন। এই রেস্টুরেন্টটি আমার পরিচিত। লতিফ সিদ্দিকীর বিতর্কিত বক্তব্যের কিছুদিন পর কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন এবং আমি একই স্থানে অনুষ্ঠান করেছি। বক্তব্য রেখেছিলাম প্রবাসী সাংবাদিক ও সংস্কৃতি কর্মীদের সামনে। সেই অনুষ্ঠানে আমাকে একজন প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কি এর মধ্যে কোনো ষড়যন্ত্র খুঁজে পান? জবাবে বললাম, এটা একজন ব্যক্তির অতি দাম্ভিকতা।

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন আর নির্বাচন করবেন না। কিন্তু তারপরও তাকে মনোনয়ন দেওয়া ঠিক হয়নি। আবার মন্ত্রী হয়ে তিনি বেসামাল হয়ে পড়েছিলেন। একজন মন্ত্রী হিসেবে তিনি যা খুশি তা বলতে পারেন না। আরেকজনের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর আঘাত করতে পারেন না। কারণ তিনি শপথ নিয়েছিলেন, আবেগ, অনুরাগ, বিরাগের বশীভূত হয়ে কিছু করবেন না।

আমাকে একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী বলেছিলেন, অর্থ এবং ক্ষমতা মানুষকে অহংকারী করে তোলে। আমি জানতে চেয়েছিলাম দুটি এক সঙ্গে আসলে কি হয়? জবাবে তিনি বলেছিলেন, তখন বেশির ভাগ মানুষ ভার ধারণ করতে পারেন না। জড়িয়ে পড়েন নানামুখী পাগলামিতে। মানুষকে মানুষ মনে করেন না। টাঙ্গাইল সমিতির অনুষ্ঠানে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর এত কথা বলার কথা ছিল না। মূল অনুষ্ঠানেও বলেননি। সাইডটক করতে গিয়ে তিনি বেসামাল কথাবার্তা বলেছেন। নিউইয়র্কের অনুষ্ঠানগুলোয় সবসময় অনেক প্রবাসী সাংবাদিক থাকেন। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে শুরু থেকে কোনো সাংবাদিক ছিলেন না। আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন সাংবাদিক শেষ দিকে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন। তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই ঝামেলা শুরু। তারপরও লাগামহীন বক্তব্য। আর এই বক্তব্য রেকর্ড করেছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের পত্নী। তার ল্যাপটপ থেকে সাংবাদিকরা ভিডিও রেকর্ড সংগ্রহ করেন এবং ঢাকাতে পাঠান। আমার বিশ্বাস ছিল আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দুঃখ প্রকাশ করবেন। এই বক্তব্য কীভাবে দিয়েছিলেন তারও একটা ব্যাখ্যা দেবেন। কিন্তু বিস্ময় নিয়ে দেখলাম তিনি কোনোটাই করলেন না। দাম্ভিকতা নিয়ে বসে থাকলেন।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরলেন ভারতে। শান্তি নিকেতনের শ্যামল ছায়ায় কিছুদিন কাটালেন। তারপর ফিরলেন দেশে। তার এই ফিরে আসা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি সঠিক কাজ করেছেন। আইনের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। আইন ও আদালত এখন তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। বিশ্বাস করি, ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করার দায়ে তার শাস্তিও হবে। কিন্তু ভালো লাগেনি আদালতে কিছু আইনজীবীর বাড়াবাড়ি, উচ্ছৃঙ্খলতা ও জুতা মিছিল। এগুলোর প্রয়োজন ছিল না। সাধারণ মানুষ আর আইনজীবীর মধ্যে পার্থক্য আছে। একজন অপরাধী যখন আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তখন সব আইনজীবী আদালতে দাঁড়িয়ে তার বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারেন। কিন্তু জুতা মিছিল আবেগতাড়িত বিষয়।

বায়তুল মোকাররম, লালবাগ, চট্টগ্রামে মিছিল হয়েছে, আইনজীবীরা সেখানে গিয়ে মিছিলে অংশ নিতে পারতেন। বক্তৃতা দিতে পারতেন। কিন্তু আদালতের আঙ্গিনাকে আমরা সবসময় শান্তিপূর্ণ দেখতে চাই। বিশৃঙ্খলা নয়। আইন তার গতিতে চলবে। আদালত চলবে স্বাধীনভাবে। এখানে মিছিল, সমাবেশ আমাদের ব্যথিত করে।

বিশ্বাস করি, মানুষের জীবনে আবেগ থাকবে। কিন্তু তারও একটা মাত্রা থাকবে। মাত্রা অতিক্রম করলেই তা পড়বে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে বাড়াবাড়ি করলে তার পরিণাম ভালো হয় না। ইতিহাস তাই বলে। কিন্তু ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেওয়াই ইতিহাসের শিক্ষা। তাই অতি কথন বন্ধ হয় না। ফ্রিস্টাইলে সরকারের সর্বনাশ হয়। প্রশ্নবিদ্ধ হয় অনেক কিছু। বিগত পাঁচ বছরের সঙ্গে এবারের মেয়াদকে মেলায়ে চললে হবে না। পাঁচ বছরের বিতর্কিতদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসানো যাবে না। বাস্তবতায় থাকতে হবে। আইনের শাসনকে তার গতিতে চলতে দিতে হবে। সরকারকে উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব হতে হবে। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে থাকতে হবে দৃঢ়।

বিতর্কিতদের এক মুহূর্তও রাখা যাবে না সরকারি দলে। ছাত্রলীগ, যুব লীগের লাগাম টেনে রাখতে হবে। জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপিদের বিরুদ্ধে। নতুন করে কোনো গডফাদারের সৃষ্টি জনগণ দেখতে চায় না। জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। গত বছর এমন দিনের তুলনায় এখন পরিস্থিতি অনেক ভালো। কিন্তু এতে খুশির কিছু নেই। জনগণ একবার নিজেদের বঞ্চিত মনে করলে তার পরিণাম ভালো হয় না। মনে রাখতে হবে, আলোর বিপরীতেই থাকে অন্ধবার। প্রেমের অপরপ্রান্তে কষ্ট। যাযাবরের দৃষ্টিপাতে এমনই দেখতে পাই। দৃষ্টিপাতে যাযাবর লিখেছেন, ‘প্রেম জীবনকে দেয় ঐশ্বর্য, মৃত্যুকে দেয় মহিমা। কিন্তু প্রবঞ্চিতকে দেয় কি? তাকে দেয় দাহ। যে আগুনে আলো দেয় না, অথচ দহন করে। ’

প্রেমের তীব্র আনন্দের আলোই দহন করে। তীব্র দহনের জ্বালা বোঝা যায় বঞ্চনার পর। এর আগে নয়। আনন্দের উচ্ছলতায় বাস্তবতা বোঝা যায় না। নিজের ভুল চোখে পড়ে না। মনে হয় যা করছি সবই ভালো। অপরে কেন মাথা ঘামাচ্ছে। অপরের মাথা ঘামানোকেই বিরক্তিকর মনে হয়। ক্ষমতাসীনদের অবস্থান এখনো এক কঠিন চোরাবালিতে। বিএনপি অনেক কিছু করার ক্ষমতা এখন রাখে না। আওয়ামী লীগের সমস্যা আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সর্বনাশও করে আওয়ামী লীগ। অন্য কারও দরকার নেই। ইতিহাসের দিকে তাকালেই বেরিয়ে আসে এক কঠিন চিত্র। এই সর্বনাশা চিত্র বোঝা যায় না চেয়ারে বসে।

আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ঢাকা আসার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশেষ সংবাদদাতা শাবান মাহমুদের সঙ্গে। শাবানকে তিনি বলেছিলেন, মিডিয়াই সর্বনাশ করেছে। এই মতের সঙ্গে একমত হতে পারলাম না। মিডিয়া কারও সর্বনাশ করে না। মিডিয়া শুধু সবার ঘটনা তুলে ধরে। সিদ্ধান্ত নেয় জনগণ। রাজনীতিবিদদের ভুল তুলে ধরাই মিডিয়ার কাজ। মিডিয়া কখনো ভুল করলেও জনগণ ভুল করে না।

কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগরের কাছে একটি গল্প শুনেছিলাম। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দুই দিনের জন্য কানাডা গিয়েছিলাম। আমাকে নিয়ে ঘুরেছেন স্নেহভাজন দুই সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর ও শহীদুল ইসলাম মিন্টু। টরেন্টো সিটি মেয়রের গল্পটা তাদের কাছে শোনা। এবারের আগেরবার কানাডার টরেন্টো শহরে মেয়র ইলেকশনে দাঁড়িয়ে গেলেন ফোর্ড। নিজ দলের বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহ। বব ফোর্ডের আবার চরিত্র ভালো না। তাই কানাডার মিডিয়া তার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধারে মেতে উঠল। বব ফোর্ড মিডিয়ার সমালোচনাকে কানে তুললেন না। প্রার্থী হিসেবে চলে গেলেন জনগণের কাছে। মিডিয়া এতে আরও ক্ষুব্ধ। টিভি, রেডিও আর সংবাদপত্রে শিরোনাম হতে থাকল ফোর্ডের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। কবে তিনি নিজ স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন, কবে শুড়িখানায় মদ খেয়ে করেছিলেন মাতলামি, ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্যের কারণে জরিমানা, বান্ধবীর সঙ্গে লং ড্রাইভে গিয়ে ঝগড়া কোনো কিছু বাদ গেল না। বব পাত্তা দিলেন না মিডিয়াকে। মনোযোগ দিলেন নির্বাচনে। মিডিয়ার চোখে ফোর্ড তখনো তৃতীয়। তার গো-হারার আগাম খবরও প্রকাশ হলো। মিডিয়ার সাফ কথা, দল থেকে বিদ্রোহ করা এই মাতালকে কেউ ভোট দেবে না। কিন্তু মিডিয়ার এই ধারণাকে বদলে দিয়েছিল টরেন্টোবাসী। তারা ভোট দিল ফোর্ডকেই। এই বিজয়ে কালি পড়ল মিডিয়ার মুখে। নির্বাচনের পর টরেন্টোর একটি দৈনিক রিপোর্টও করল, মিডিয়া জনগণের চোখের ভাষা বুঝে না।

পাদটীকা : মানুষের জীবনে দুঃখ থাকে। কষ্ট থাকে। আনন্দও কম থাকে না। আনন্দ ও কষ্টের মাঝামাঝি কোনটা বেশি, কোনটা কম বুঝি না। প্রিয় মাহবুবুল হক শাকিলকে আমি আখ্যা দিয়েছি প্রেমিক পুরুষ হিসেবে। মেধাবী এই তরুণ প্রেমের কবিতা লিখলেই হতে পারত বিখ্যাত। সেদিন হঠাৎ একটি সাদা কাগজ নিয়ে কিছু লিখে আমার হাতে গুঁজে দিলেন। পরে পড়লাম। পাঠকদের জন্য তুলে ধরলাম শাকিলের সেই কয়েক লাইন- চলে যাওয়া মানেই ধ্রুব সত্য, চলে যাওয়া রাজসিক/প্রণয়ে কিংবা বিরহে। লিখে যাবেন আপনারা আমার রাজনীতির পোস্টমর্টেম। বেদনার পদাবলি, দুঃখ-সুখ আর উচ্ছৃঙ্খল, আমার যাপিত জীবন।





লেখক : সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন



 
বাংলাদেশ সময়: ০৯১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।