ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

আমাদের প্রতি দয়া করুন

হাবীব ইমন, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫
আমাদের প্রতি দয়া করুন ছবি: ফাইল ফটো

মালিবাগের কাছাকাছি থাকি আমি। কিছুক্ষণ আগে আবুল হোটেলের পাশে পেট্রোল বোমা ঢেলে বাসে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।

বাসায় যাওয়ার পথে বাস থেকে নামার আগে এ ঘটনাটি ঘটে। একজন কী দুইজন আহত হয়েছে। দগ্ধ হয়েছে। শরীরের অনেকটা ঝলছে গেছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট এখন পুরো বাংলাদেশের একটি প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে। এই হাসপাতালের প্রতিটি চিকিৎসক, সেবক, কর্মকর্তা-কর্মচারী দগ্ধদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে কঠোর পেশাদারির মধ্যে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছে।

ইতিমধ্যে মধ্যে কথা হলো সদ্য যোগ দেয়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাধারণ অগ্নিকাণ্ড বা দুঘর্টনায় পুড়ে যাওয়া মানুষের সেবা দেয়ার অনুভূতি এক রকম, আর রাজনীতির শিকার হওয়াদের সেবা দিতে গিয়ে হয় ভিন্ন অনুভূতি। একেকজন দগ্ধ মানুষকে দেখে নিজের ভেতরটিও পুড়তে থাকে। প্রাণপণ চেষ্টা করছি, তাদের বাঁচিয়ে তুলতে, কিন্তু অনেককেই শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায় না। এর চেয়ে কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না।  

কিছু তরুণ দেশব্যাপী হইচই করছে। পেট্রোল বোমা মারছে। গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। মানুষ মারছে। সরকার দুষছে বিরোধীদলকে, বলছে, ‘আমরা করি না। ’ আর সরকারের বাইরে দলও দুষছে সরকারকে, বলছে, ‘আমরা করি না। ’ কিন্তু কী হচ্ছে এসব আমরা জানি না। তাহলে মানুষ পোড়াচ্ছে কারা?
শান্তিময় ছোট্ট সবুজ দেশটা আজ কোথায় যাচ্ছে, অশান্তি দেশে পরিণত হচ্ছি সারাবিশ্বে। একদল তরুণ বোমা মেরে কী প্রমাণ করতে চাইছে? বেহেশতের জন্য? সাধারণ অসহায় মানুষের রক্ত মেখে কি বেহেশতে যাওয়া যায়? আনন্দময় কৈশোর এখনও পার হয় নি এদের। কিংবা যৌবনের উত্তাল-উচ্ছ্বল সময় পেরুবার আগে তাদের হাতে উঠে এসেছে নৃশংসতার চাবিকাঠি। পেট্রোল বোমা, ককটেল বোমা নিয়ে জীবনহানি খেলায় মেতেছে। তাদের সাধারণ অনুভূতি-ধর্মীয় অনুভূতির উপর দুর্বলতা তৈরি করে নৃশংসতার কাজে এদেরকে জড়িত করা হচ্ছে। ‘মরলে শহীদ হবে, আর ফ্যামিলির দেখা-শোনা’র দায়িত্ব তাদের। আর তাতে সহজ-সরল মনে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ছে। অবুঝ উন্মাদনায় দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে, ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। ওরা ভুল পথে হাঁটতে শুরু করেছে। এদেরকে ফিরিয়ে আনা দরকার।

হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘মূল জিহাদ হলো নফসের বিরুদ্ধে। ’ অর্থাৎ ত্রুটির বিরুদ্ধে। যারা জিহাদের নামে বোমা মারছে, তারা কি নিজের সঙ্গে জিহাদ করছে? ২০১৩ সালের ৫ মে রাতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে দিক-নির্দেশনাহীন অবস্থায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা মাদ্রাসার ছোট ছোট শিশুদের রেখে পালিয়ে যায়, যাতে তারা প্রচণ্ড ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। বেশিরভাগ শিশুই জানেনা তারা কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে এসেছে। আটক হওয়া শিশুরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশ্নের উত্তরে বলেছে, তারা ১৩ দফার কিছু জানে না-বোঝে না। হুজুররা বলেছেন তাই তারা এসেছে।

দুই.
প্রতিদিন এখন স্বামীহারা নারী, বাবাহারা সন্তানদের, সন্তানহারা মায়ের ছবি দেখছি। দগ্ধদের ছবি দেখছি। লজ্জায়, ঘৃণায় আমি সংকুচিত হই। তাঁরা বলছেন, ‘যারা স্বার্থের রাজনীতি করে, তাদের কাছ থেকে কীই-বা আশা করা যায়? দেশের জন্য ত্যাগের মানসিকতা কারও নেই। একদল পোড়ায়, একদল মলম লাগায়। কী লাভ তাতে? নির্বাচনের আগেও মানুষ পুড়ে মরেছে। ক্ষমতা নিয়ে মারামারি হচ্ছে আর আমরা বলির দান হচ্ছি। ’

ঢাকার কমলাপুরে একটি লেগুনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দগ্ধ মোহাম্মদ সেলিম বলছিলেন, ‘সারা গায়ে মরিচের মত জ্বলে। এখন আর চিৎকার করার শক্তিও পাইনা।

আপনার সাথে কথা বলছি, কিন্তু সারা শরীরে বেদনা। ’ দগ্ধ সেলিমের পাশে বসে ছিলেন উৎকণ্ঠিত তার মা রহিমা বেগম। এক মহাজনের কাছ থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে লেগুনাটি কিনে দিয়েছিলেন সেলিমকে। প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি দিতে হয়। তার লেগুনাটি ভস্মীভূত হয়ে গেছে। সেলিম যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন, তখন গত সপ্তাহেই কিস্তির জন্য তাদের বাড়িতে এসে কয়েকবার ঘুরে গেছেন মহাজন।

একজন উপার্জনক্ষম মানুষ একা মারা যান না। তার উপর নির্ভরশীল সবারই মৃত্যু ঘটে। স্বজনহারা কান্নার সঙ্গে এই বেদনা উচ্চকিত হয়, আমার এখন কী হবে! আমি কোথায় যাবো! কীভাবে বাঁচবো! সম্প্রতি একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে টানা অবরোধে পাঁচটি পেশার করুণ দশা। ৫০ লাখ পরিবহন শ্রমিক বিপাকে আছে, ২২ লাখ ৭৫ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে, ২৬ লাখ নির্মাণ শ্রমিকের ভরা মৌসুমে কাজ নেই, ১৭ হাজার চাল কলের ৭০ লাখ চাতাল শ্রমিকের কাজ বন্ধ, অসংখ্য হকারের আয় কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে। বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজনে চরম ব্যস্ততার বদলে বসে হচ্ছে ফুল বিক্রেতাদের।  

তিন.
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর প্রয়ানে তাঁর প্রতি সহমর্মিতা জানাই। কোনো মৃত্যুই আমাদের কাছে কাম্য নয়। আজ খালেদা জিয়া পুত্র হারায় শোকাহত। এখন এটি তাঁকে উপলব্ধি করতে হবে, তারই ঘোষিত কর্মসূচিতে প্রতিদিন কত মায়ের বুক খালি হচ্ছে।
বিএনপি এখনও জনপ্রিয় একটি দল। কোকোর জানাযায় বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিই প্রমাণ করে। তবে বিষয়টাকে মারুফ কামাল খান কিংবা শিমুল বিশ্বাসদের ভাষায় ‘নীরব প্রতিবাদ’ বলাটা রাজনৈতিক সংজ্ঞায় সঠিক হয়নি। বিএনপি-র কেউ কেউ এটাকে শোডাউন বলে তালি বাজাচ্ছে। এসব বক্তব্য অনুর্বর মস্তিষ্কে পদ্মফুলে গোবর ছাড়া আর কিছুই নয়। এরা যে কীসব রাজনীতি করে, বুঝি না। ভারতের সুজাতা সিং-কে বহিষ্কার আনন্দে ওরা ফেসবুকে উল্লাস প্রকাশ করছে। যেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে, আগুনে পুড়ে ঝলসে যাচ্ছে, এটি নিয়ে তাদের কোন দুঃখ প্রকাশ নেই। হবে না কেনো, পরাবিশ্বের শক্তিতে দুটো দলই মত্ত। জনগণকে তারা ফ্যাক্টর মনেই করে না। সম্ভবত এই জন্য মানুষ মরলে তাদের বিকার হয় না। খালেদা জিয়ার পরিবারের প্রতি সমবেদনা অথবা সম্মান জানানো মানে এই নয় জানাযায় মানুষ প্রতিবাদ জানাতে গেছে। বিএনপি করেন না এমন অনেক মানুষও তো জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। এটাও মনে করা ঠিক হবে না, অর্থপাচারকারী ও জেল পলাতক কোকোকে মহানায়কের সম্মানে চিরবিদায় জানিয়েছে বাংলাদেশ।  

সে যাই হোক, শেখ হাসিনা নয়, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী চলে গেলেন গুলশানে বিএনপি-র চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে। সন্তানের মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে। খালেদা জিয়া শয্যাশায়ী হলেন। তিনি নাকি ওষুধ খেয়ে নিদ্রায় গেলেন। কিন্তু তার কোনো নেতা কি ছিলো না প্রধানমন্ত্রীকে অর্ভ্যথনা জানাতে? ওই দিন প্রধানমন্ত্রীকে অর্ভ্যথনা জানালে অনেক কিছু হয়ে যেতো তা আমি বলবো না। কিন্তু বিএনপি পক্ষ থেকে একটি রাজনৈতিক শিষ্টাচার তো দৃষ্টান্ত দেখানোর সুযোগ ছিল।

প্রধানমন্ত্রী গুলশানে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে খালেদা জিয়ার সহকারী শিমুল বিশ্বাস বাইরে প্রেস ব্রিফিং করেছেন। গেটে তালা লাগানো বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীকে এইভাবে ফেরত যেতে হয়েছে। এটা শেখ হাসিনার সাথে নয়, রাষ্ট্রের সাথে চরম অবমাননা করেছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রীর পদটা তো একটা প্রতিষ্ঠান ... প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করা মানে তো বাংলাদেশের মানুষকেই অসম্মান করা ...

চার.
বিএনপি নেতৃতাধীন ২০ দলের জোট টানা অবরোধ দিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে বোনাস হিসেবে হরতালও দিয়ে যাচ্ছে। এগুলো সবই হাস্যকর। অবরোধ-হরতাল দুটোর ছোট-বড় কার্যশক্তি নিয়ে তারা তাল পাকিয়ে আছে। নাকে তেল লাগিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম হয় কীনা আমি জানি না। কখনো এমন আন্দোলন দেখি নাই। সাধারণ মানুষ পথে নেমেছে। প্রতিবাদ করছে এখন তাদের ডাকা কর্মসূচীতে সহিংসতার বিরুদ্ধে। চারিদিকে মানুষের মধ্যে এখন সরব প্রতিবাদ। খবরে প্রকাশিত হয়েছে, বোমাবাজকে মানুষ ধরে পেটাচ্ছে। বিএনপি বলছে, এসব বোমাবাজি সরকার করছে। রাজশাহীতে বাসে বোমা মেরে পলায়নরত শিবিরের নেতাদের ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে, বোমা বানাতে গিয়ে ছাত্রদল কর্মীর হাত উড়ে গেছে। এগুলোকে কি বলবেন আপনারা? 
বিএনপি-র কাছে আমার একটা প্রশ্ন আছে, আমার মতো অনেক মানুষেরই এ প্রশ্ন, মানুষ পোড়ানো, মানুষ মারা ছাড়া এই অবরোধ, হরতালে তাদের অর্জনটা কি?  পেট্রোল বোমা মেরে সরকার বিরোধী আন্দোলন সফল করা যায় না, পৃথিবীতে এমন কোনো নজির আমাদের কাছে নেই, যেখানে সন্ত্রাস করে কোনো পক্ষ তাদের দাবি আদায় করতে পারে। একটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাধারণ মানুষকে কখনো ‘টার্গেট’ করা যায় না, তাদেরকে করতে হয় সহকর্মী বা সহযোদ্ধা। এরকম কোন উদ্যোগ বিএনপির নেই। মামলার দিনে হরতাল দেয়া তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব আরো বেশী প্রকট হয়ে ওঠে।
দুই দলকে বলছি, অনুগ্রহ করে একটু কান পেতে আপনারা শুনুন, ‘জানটা বাইর হইয়া যাইতাছে। আল্লাহ আমারে শক্তি দাও। ’ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে বিছানায় শুয়ে থাকা দগ্ধ একজন রোগীর বিলাপ। জানি না আমজনতার এসব আহাজারিতে আপনাদের চোখ ভিজে কীনা। হৃদয় কী এতোই পাষণ্ড হয়ে উঠছে! 

পাঁচ.
গণতন্ত্রের পক্ষে রাজনৈতিক বিতর্ক খুবই ফলপ্রদ। এর ভেতর দিয়ে মতামতের প্রতিফলন ঘটে। বাক স্বাধীনতার পূর্ণ বিকাশ লাভ করে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক চাপান-উতোর নতুন কিছু নয়। নির্বাচনের প্রাককালে তো বটেই। যে-কোনও ইস্যুতেই সারাবছর ধরে তা চলে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা কথার পিঠে কথা বলার সময় কোনও ভব্যতা-সভ্যতার ধার ধারছেন না। ফলে বিতর্ক রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে খেউড়ে। বলাই বাহুল্য, সেসব বাণী অসৌজন্য এবং রুচিহীনতার পরিচায়ক। তার চেয়েও বড় কথা, নেতাদের উক্তি প্রায়শই অপমানজনক, উস্কানিমূলক কিংবা প্ররোচনাভিত্তিক। তবে রাজনৈতিক নেতাদের এই অপরাধ করার উৎসাহ দিচ্ছি আমরা নিজেরাই। হাততালি দিয়ে, ঢেউয়ের মতো গর্জন করে সভা-সমাবেশে প্রদত্ত নেতানেত্রীদের এই সমস্ত উস্কানি, প্ররোচনা, অসভ্যতাকে সমর্থন করছি, প্রশ্রয় দিচ্ছি। পরম তৃপ্তিতে ভাবছি, ফাটিয়ে দিয়েছেন নেতা। অথচ কখনো ভাবছি না, সুস্থ বিতর্ক আর অসুস্থ খেউড়য়ের পার্থক্য। আজও আমরা ভাবি না, অনাগত ভবিষ্যতে কী পরিণতি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে! 

ছয়.
দেশের মানুষ বৃহত্তম দুটি দলের প্রতি বিরক্ত হচ্ছে। বিন্দুমাত্র আগ্রহ তাদের নেই। একটি দুঃসসময় চলছে, এই দুঃসময়েও একে অন্যকে দুষছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। সমঝোতায় বসতে রাজি নয়। ‘রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন’ করে চলেছে। হায় রে রাজনীতি! এক দল ক্ষমতায় বসবে, অপর দল বের হয়ে আসবে, এই চলবে। আমরা সাধারণ মানুষ আপনাদের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর ধারে কাছে যাই না। আমরা বোমাবাজি-মানুষ পোড়া, মানুষ মারার রাজনীতি থেকে মুক্তি চাই। অনেক রক্ত ঝরেছে। আমাদের ছাত্ররা পড়তে পারছে না। স্কুলে যেতে পারছে না। বড় সেশন জটে পড়ে গেছে ওরা। যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কখনো সেশনজটে পড়ে না, তারাও আজ পড়েছে জটে। ফেব্রুয়ারি ২ থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার কি হবে, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। শিক্ষা নিয়ে এখন তাদের মাথাব্যথা নেই তাদেন, বিএনপি-র ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহম্মদের এ বক্তব্যে : ‘কিসের পরীক্ষা, কিসের কী?’

চিকিৎসক দম্পতি সাইফুল ইসলাম ও শারমিন সিদ্দিকার বড় ছেলে আড়াই বছরের শিশু সাফির নারায়নগঞ্জে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়েছে। মাথা, মুখ, গলা, ডান হাত, দুই পা পোড়া ওর। গোটা শরীর ব্যান্ডেজ। বাবা সাইফুল ইসলামের দুই হাত পোগা। মায়ের হাত ভাঙা। সাফিরের মা বলছেন, ‘আপনারা এসব বন্ধ করুন। ’
তাঁর মতো করে আমিও বলি, ‘এইবার আপনারা আমাদের প্রতি দয়া করুন। ’

হাবীব ইমন : কলামলেখক, কবি, [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।