ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তমত

পরীক্ষার চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি

মুহাম্মদ আবদুল কাহহার, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫
পরীক্ষার চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি ছবি: রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

একটু পরই সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে, এসএসসি পরীক্ষা সময় মতো হবে কি হবেনা। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষাকেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা বেশি চিন্তিত।


২০ দলীয় জোট ইতোমধ্যে তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার না করে বরং বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু সরকার দেশবাসীকে এখনও তার সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি। এতে করে দুশ্চিন্তা বহুগুণে বেড়েছে।

পরীক্ষা পিছিয়ে নেয়া হতে পারে বলেই অনেকেই ভাবছেন। কেননা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া এর আওতাধীন কামিল স্নাতকোত্তর ১ম পর্ব পরীক্ষা-২০১৩ (শিক্ষাবর্ষ ২০১২-২০১৩) এবং ২য় পর্ব পরীক্ষা-২০১৩ (শিক্ষাবর্ষ ২০১১-২০১২)-এর পরীক্ষা আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকুলে না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করেছে।

২০১৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে নেয়া হয়েছিল। কারীগরি বোর্ডের পরীক্ষা পেছানো হয়েছে, এছাড়া ২০১৩ ও ২০১৪ বছরের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা কয়েক দফায় পেছানো হয়েছিল। হরতাল-অবরোধে পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়া নতুন কোন রেকর্ড নয়। রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হওয়ায় শঙ্কা কাটছেনা, আরো ঘনিভূত হচ্ছে। এমতাবস্থায় পরীক্ষার সময়সূচি ঠিক রাখা বিতর্কিত রেকর্ড গড়বে। শিক্ষার্থীরা বেঁচে থাকলে পরীক্ষা দিতে পারবে। পরীক্ষার চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। পরীক্ষা পেছানো হলে হয়তো সাময়িক ক্ষতি হবে, তবে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির চেয়ে সাময়িক ক্ষতি মেনে নেয়া শ্রেয়।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলা হলেও তা বাস্তবাযন করা সহজ নয়। শুধু পরীক্ষা কেন্দ্রে নিরাপত্তা দেয়াই যথেষ্ট নয়। মহানগর ও জেলা শহরগুলোর চিন্তা না করে গোটা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভাবা উচিত।
গ্রামাঞ্চলে অনেক কেন্দ্র এমন আছে যেখান থেকে কেন্দ্রে পৌঁছ‍ুতে ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বা পরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা  হরতাল-অবরোধের মধ্যে কোথাও কোথাও পরিবহন সঙ্কটে ভুগবে। যে কারণে যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছুতে পারবেনা।

দেশের কোথাও যদি কোন শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবক সহিংসতার শিকার হন, তাহলে তার দায়ভার কে নেবেন? গোটা দেশে যদি একজন শিক্ষার্থীর উপর হামলা হয়, ওই পরিবারের জন্য সেটা হবে খুবই অমানবিক, মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। সুতরাং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা পিছিয়ে নেয়াটাই যুক্তিসঙ্গত হবে বলে মনে হয়। আশাকরি রাজনৈতিক চিন্তার উর্ধ্বে থেকে সরকার বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা করে দেখবেন।

মুহাম্মদ আবদুল কাহহার: সিনিয়র শিক্ষক, গজমহল ট্যানানি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজারীবাগ, ঢাকা, [email protected] 

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।