সরকারে কিংবা বেসরকারে থেকে আপনারা যারা আমাদের নিয়ে রাজনীতি করেন,তাদের অভিধা কি দিতে পারি? রাজা বলাতেই তুষ্ট হয়তো আপনারা! সেবা নয় শাসনই মুখ্য হয়ে ওঠে যখন, তখন রাজা বলাটাই অধিক যুক্তিযুক্ত। আজকাল আপনাদের দেখে খুব মায়া হচ্ছে।
মানচিত্র থেকে রাজনীতি যেদিন মসনদমুখি হয়েছে, সেদিন থেকেই তো আমরা হারিয়ে গেছি। শুকনো পাতার মতোই বেওয়ারিশ প্রজাকূল। উড়ে বেড়াই, উড়ছি। আমাদের চোখে মসনদে বসার স্বপ্ন নেই। একটুখানি কেবল চাওয়া, আপনারা শুধু একদিন চড়ুইভাতি খেলার মতো শুকনো পাতার কাছে যাবেন না। চড়ুইভাতির আগে পরের দিনগুলোতেও শুকনো পাতাকে হাতে তুলে নিন সযতনে। বলতে চাইছি-ভোটের একদিনের বাইরেও আপনাদের ভাবনায় একটুখানি জায়গা দিন আমাদের। দেখবেন সবুজ প্রজার চোখের দিকে তাকিয়ে আপনাদের ক্রোধের পারদ কিভাবে নিচে নেমে আসে। এই যে কথোপকথন বা সংলাপের কথা বলা হচ্ছে, সেই কথোপকথন কিভাবে হবে বলুন? যদি প্রতিপক্ষের সঙ্গে সম্পর্কই না থাকে! আপনাদের কথোপকথন বা আলাপ, সংলাপে আমরা ভরসা রাখতেও ভরসা পাই না। কিভাবেই বা পাবো?আপনাদের কথোপকথনের বিষয়তো একটাই--- মসনদে কে রইবেন বা কে আসবেন। সেখানে আমাদের নিয়ে কোনও দীর্ঘশ্বাস ব্যয় করতে রাজি নন আপনারা। তাই আমরা কেবলই শুকনো পাতা হয়ে রই। কুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ি। ক্রোধের আগুনে পুড়ে মরি পোকার মতো।
আমরা পুড়ে মরছি ঠিকই। আমাদের স্বপ্নরা কিন্তু বেঁচে থাকছে। কিন্তু আমরা আপনাদের যে পোড়া চোখ, পোড়া মুখ দেখছি সেখানে কোন স্বপ্ন নেই। আছে লোভ। হয়তো লোভ এবং স্বপ্নের তফাত করতেও ভুলে গেছেন আপনারা। স্বপ্ন আলো ছড়ায়। কিন্তু লোভ ছড়ায় বীভৎস আগুন। সেই আগুনে একের পর এক মানুষপোকারা পুড়ে মরছে। আপনারা তখন বিকৃত উল্লাসে ফেটে পড়ছেন, ভাবছেন এই বুঝি লোভ সুলভ হলো। আম মানুষ যেভাবে ভস্মীভূত হচ্ছেন, তা দেখে যে উল্লাস জানবেন সেখানেই মরণ। রাষ্ট্রকে যে আগুনের দেশ বানাচ্ছেন। আমরা হয়ে পড়ছি আগুনপোড়া দেশের প্রজা। সেখানে শুধু থোকা থোকা পোড়া মুখ আপনাদের। বগুড়া, রাজশাহী, সায়দাবাদে যারা পুড়ছে তারা কেবল নাম নয়-আপনাদের ভাষার একেকটি জিডিপি, সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্বনির্ভর বাংলাদেশ। যেভাবেই বলেন না কেন আপনাদের ইশতেহারের কারিগর তারাই। অতএব তারাই কেবল পুড়ছে না, পুড়ছেন আপনারাও।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৫