ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

শেখ হাসিনাই জাতির শান্তি ও প্রগতির প্রতীক

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৫
শেখ হাসিনাই জাতির শান্তি ও প্রগতির প্রতীক এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

আজ ঐতিহাসিক ১৭ মে। ১৯৮১ সালের এই দিনে ভারত থেকে দেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন এদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেত্রী, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তার এই প্রত্যাবর্তন জাতির জন্য কতটা শুভকর ছিল তা ৩৪ বছর পর আজ আমরা অনুভব করতে পারছি। তার নেতৃত্বেই আজ দেশ-জাতি এগিয়ে চলেছে শান্তি ও প্রগতির পথে।

১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে এবং ৩ নভেম্বর আমার বাবা শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হেনাসহ জাতীয় চার নেতা জেলখানায় স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের হাতে নিহত হওয়ার দীর্ঘ ৬ বছর পর ১৯৮১ সালের এইদিনে দেশে আসেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগেই ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। শেখ হাসিনা ১৭ মে বঙ্গবন্ধুর রক্তে রঞ্জিত বাংলায় প্রত্যাবর্তনকালে সারাদেশের গ্রাম-গঞ্জ থেকে মুক্তিকামী লাখ লাখ জনতা ছুটে এসেছিলেন রাজধানী ঢাকায়।

সেদিন স্বাধীনতার অমর স্লোগান ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়েছিল ঢাকার আকাশ বাতাস। জনতার কণ্ঠে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম, পিতৃ হত্যার বদলা নেবো’, ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা-স্বাগতম’ শেখ হাসিনা তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই।

সেদিন দেশে এসে লাখো জনতার প্রাণঢালা ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছিলেন নেত্রী হাসিনা। ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দ‍ অশ্রুতে অবগাহন করে শেরেবাংলানগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। আমার হারাবার আর কিছুই নেই। এখন আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই। ’

সেই থেকে রাজনীতির মাঠে পথচলা শুরু। ৬৮ বছর পেরিয়ে জীবনের পড়ন্ত বেলায় আজ জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তৃতীয়বারের মতো দেশ পরিচালনা করছেন তিনি।

‘রূপকল্প ২০২১’-এ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে ‘রূপকল্প ২০৪১’ এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি আধুনিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তিনি।

তিন তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে শান্তি, গণতন্ত্র ও মানবতার জন্য কাজ করায় দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। বাবার মৃত্যুর পর ভঙুর দলকেও পরিণত করেছেন দেশের সর্ববৃহৎ শক্তিশালী দলে। দেশের গণতন্ত্রকে দিয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে বিচারের ব্যবস্থা করেছেন ৭১’র সেই মানবতাবিরোধী অপরাধের। ইতোমধ্যে কুখ্যাত দুই আলবদর নেতার ফাঁসি হয়েছে। এগিয়ে চলেছে বিচার প্রক্রিয়া। শুধু তাই নয়, নিজেও হয়েছেন বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রনায়কদের একজন। নিজেকে গঠন করেছেন এক প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক হিসেবে। সুনাম-সুখ্যাতি ছড়িয়েছে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও। এই কৃতিত্বকে অনেকে ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’ আবার কেউ কেউ বাঙালি জাতির ‘শান্তির প্রতীক’ বলেও ভূষিত করেছেন।

তবে দেশের এই অবস্থান একদিনে আসেনি, তা নেত্রীর অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষ‍ার ফসল। এজন্য তাকে অনেক দুঃখ, কষ্ট-যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে। বাবা-মা, ভাইসহ আপনজনদের হারিয়েছেন সেই ২৮ বছর বয়সেই। আল্লাহর অসীম কৃপায় বেঁচে যাওয়া (জার্মানিতে থাকায়) একমাত্র বোন শেখ রেহেনাকে নিয়ে তার পথচলা শুরু।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাত্রিতে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও পরবর্তী ৬ বছর লন্ডন ও দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় তাদের দু’বোনকে। এরপর নেতাকর্মীদের পীড়াপীড়িতেই ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে হাল ধরেন বাবার রেখে যাওয়া দলের। নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে ধীর পায়ে এগুতে থাকেন আগামীর পথে। ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আরোহণকে অবৈধ ঘোষণা করে নেতাকর্মীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন।

১৯৮৩ সালে পনেরো দলের জোট গঠন করে তারই নেতৃত্বে দেশজুড়ে সামরিক শাসক এরশাদবিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে উঠায় ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের ৩১জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। চোখ বেঁধে তাকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ১৯৮৬ সংসদ নির্বাচনে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হন তিনি।

১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে গৃহে অন্তরীণ করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুরু হওয়া ৮ দলের মিছিলে জনতার ওপর পুলিশ ও বিডিআর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় ৯ জন নেতাকর্মী নিহত হন। এরপরও তাকে দমাতে পারেনি কোনো বাধা। শান্তিপূর্ণভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরে ১৯৯০ সালে তিনি এক গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।

১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর আন্দোলনের জোয়ার ঠেকাতে সারা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং শেখ হাসিনাকে ধানমন্ডির বাসায় গৃহবন্দি করা হয়। ৪ ডিসেম্বর জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত জনসভায় ভাষণ দেন শেখ হাসিনা। পরে অভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। স্বৈরশাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তি পায় বাংলাদেশ। পরে ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হন।

এরপর খালেদা সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৯৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা মিন্টো রোডের বিরোধীদলীয় নেতার বাসভবন ত্যাগ করেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২৮ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ থেকে আওয়ামী লীগের সদস্যরা একযোগে পদত্যাগ করেন। চলতে থাকে আন্দোলন। কিন্তু বিএনপি সরকার থেকে একপেশে  জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করলেও তার দল এবং জোট তা বর্জন করে। পরে বিএনপি সরকার সংবিধান সংশোধন করে একপর্যায়ে পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সুনামের সাথেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেন তিনি।

এরপর ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে কথিত তত্ত্বাবধায়কের সাজানো নির্বাচনী নাটকে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করা হয়। এরপরও গণতন্ত্রের স্বার্থে তিনি  সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।

এর পর আমরা কী দেখলাম? তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মদতে তারেক-পিন্টুর সরাসরি সহযোগিতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যান আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী। এ সময় আমাদের শ্রদ্ধেয় পরীক্ষিত নেত্রী আইভি রহমানসহ আরও ২৪জন নেতাকর্মী মারা যান। এই ভয়াবহ হামলার বিচার না করে বরং সেদিন খালেদা-তারেকরা জজমিয়ার নাটক তৈরি করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা পারেননি, আজ সেই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে। ইনশাল্লাহ এই বিচারও স্বল্প সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।

সেই দুর্দিন কাটাতে শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে ধীরে ধীরে ফের এগুতে থাকেন আগামীর পথে। পরে ড. ফখরুউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি কারা অন্তরীণ থাকেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সাধারণ নির্বাচনে এদেশের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তারপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। জীবনের ক্ষণে ক্ষণে এক কঠিন পিচ্ছিল পথ পেরিয়ে এক অন্যরকম সময় পার করেছেন তিনি। সেটা যেন ৭৫’র চেয়েও কোনো অংশে কম ছিল না।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার সব ধরনের অপচেষ্টা আর বিরোধীদের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে গেল বছরের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন।

এরই মধ্যে বিএনসহ বিশ দলীয় জোটের সৃষ্ট আন্দোলনের নামে বোমাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে  উপেক্ষা করে আজ এই অবস্থানে নিয়ে এসেছেন দল ও দেশকে।   গণতন্ত্রকে দিয়েছেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। গেল ২৮ এপ্রিলেও তিন সিটি নির্বাচনেও মানুষের ভালোবাসায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। সব মিলেই দেশ আজ শান্তি ও প্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে।

ফলে সেই ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা দেশ ও জাতির জন্য যে কতটা শুভকর হয়েছে তা আজ জাতি অনুভব করতে পারছে। বরাবরের মতো দিনটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো সাত দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশেই নেত্রীর অবদানকে আমরা স্মরণ করছি। স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠবাঙালি সেই মহান পুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে।

সবশেষে বলবো, মাননীয় নেত্রী, আপনি  সেইদিন ফিরে এসেছিলেন বলেই আজ আমরা স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে বসবাস করছি। আজ আমরা নেপালের  ভূমিকম্পে সাহায্য পাঠাতে পারছি, শ্রীলঙ্কাকায় চাল রপ্তানি করেছি, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল জয় করেছে বিশ্বকে, সেও আপনার জন্যই। সিট মহলের মতো সমস্যা সেটাও আপনি সফলতার সঙ্গে সমাধান করেছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামবাসী আজ শান্তিতে বাস করেছে। ঐতিহাসিক পানি চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন মরুময়তার হাত থেকে। জন কেরি, বান কি মুনকে না করে দিয়েও রাজাকারের বিচার দেখেছি আমরা। আর কী চাওয়ার আছে আমাদের আপনার কাছে?

সব হারিয়েও আপনি ১৯৮১ সালের এই দিনে দেশে ফিরেছিলেন শুধু আমাদের দিতেই। ফলে এ দেশ যতদিন থাকবে জাতির পিতার নামটির পাশে আপনার নামটিও লিখা থাকবে এদেশের মানচিত্রে। আপনি সুস্থ থাকুন। জনগণ আগামী দিনেও আপনাকেই রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে চায়।
 
এদেশের মানুষ আপনাকে ভালবাসে, আপনার কর্মকে অনেক অনেক ভালোবাসে। দেশ ও জাতির কল্যাণে, গণতন্ত্রের উন্নয়নে ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়ায় অসামান্য অবদানের জন্য  মহান আল্লাহ  আপনাকে দীর্ঘায়ু দান করুন। এই কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন: রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৫
টিআই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।