ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তমত

রাকিব মরে জিতেছে, পরাজিত হয়েছে মনুষ্যত্ব

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৫
রাকিব মরে জিতেছে, পরাজিত হয়েছে মনুষ্যত্ব

খুলনা: রাকিব মরেছে, মরেছে বাংলাদেশের বিবেক। রাকিব মরে জিতে গেছে।

পরাজিত হয়েছে মানবিকতা.... পরাজিত মনুষ্যত্ব.... পরাজিত........ বাংলাদেশ।

‘রাকিব মরেনি, মরেছে খুলনার মানুষের বিবেক’ শিরোনামে বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশের পর ফ্রিদি ফারনান্দেস নামের এক পাঠক বাংলানিউজের ফেসবুক পেজে এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।  

তার মতো করে বাংলানিউজের ফেসবুক পেজে অনেকেই এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ আর ঘৃণাভরে অনেকে মন্তব্য করেছেন। এছাড়া রাকিব হত্যাকাণ্ডের পৈশাচিকতার বিষয়টি ইতোমধ্যে ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছে।

সিলেটের রাজন হত্যাকাণ্ডের ক্ষত না শুকাতেই খুলনার টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের শিশু রাকিব হত্যাকাণ্ডের পৈশাচিকতায় স্তম্ভিত গোটা জাতি। যার প্রমাণ এসব পাঠকদের মন্তব্য।

মনির মণ্ডল- শুধু খুলনার মানুষের বিবেক নয়, গোটা মানবজাতির বিবেক মরেছে। তাই যদি না হয় তাহলে কারো বিবেক মরেনি, মরেছে ঐ জানোয়ারগুলোর বিবেক।

মনির হোসেন- রাজন হত্যার বিচারে প্রকাশ্যে ফাঁসি হলে, রাকিবের হত্যাকারীরা এমন কর্মকাণ্ড করার সাহস পেতো না।

আহসানুল মাহাবুব- হজরত শাহজালাল (র.) এর পূণ্যভূমি সিলেটের নাম কলঙ্কিত করার পর এবার খান জাহান আলী (র.) এর পূণ্যভূমি খুলনার নাম কলঙ্কিত করলো কিছু মানুষরূপি কুলাঙ্গার, নরপশু, জালেম, ফেরাউনের বংশধর। এদের দ্রুততম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

আবু নঈম মো. তোহা-শুধু খুলনার না সারা বাংলাদেশের মানুষেরই বিবেক এখন এরকম হয়ে গেছে। কেনো এরকম হলো, ভাবা দরকার।

এম আতিকুল ইসলাম- আমাদের আর বোধ হয় মানুষ বলা যাবে না।

সৈকত- আমরা এখনো ভুলে যাইনি খুলনার কলঙ্ক এরশাদ শিকদারের কথা, আজ আবারো মনে পড়ে গেল সেই পুরনো কলঙ্কিত খুলনার কথা। এরশাদ শিকদার কাঁপিয়েছে গোটা খুলনার মাটিকে। আর এই নরপশুরা কাঁপালো গোটা জাতিকে, এদের একটাই শাস্তি। যেভাবে এই নিষ্পাপ শিশুটাকে মরতে হয়েছে ঠিক একইভাবে এদেরকে জনগণ সাজা দেবে। এভাবেই তাদের উচিৎ বিচার হবে এবং আর কোনো নতুন এরশাদ শিকদারেরা এইসব কাজ করার সাহস পাবেনা।

নির্ঝর বড়ুয়া- ভাই একজনের জন্য কি খুলনার সব মানুষকে দোষ দেওয়া ঠিক হচ্ছে??? তাহলে পুরা দেশেরই যে অবস্থা, তাতে তো বলতে হয়, পুরা জাতির বিবেকই নষ্ট হয়ে গেছে, মরে গেছে মানুষের মনুষ্যত্ব, দেশের সব মানুষ হয়ে গেছে পশু, সেটা আমি কিনবা আপনি, আমরা সবাই, গুটি কয়েক মানুষের জন্য সবাইকে দোষারোপ করা উচিৎ নয়।

মো. শাখাওয়াত- এভাবে একটার পর একটা খুন হবে আর আমরা নির্লজ্জের মতো ক্ষমা চাইতে থাকবো... !!

প্রবাসী বাদশা আলমগীর- ভাই আমরা যারা বিদেশে আছি তারা কিন্তু মুখ দেখাতে পারিনা অন্যদেশের লোকের সঙ্গে। বাংলাদেশের মানুষ আপনারা। যে কাজগুলা করতেছেন। রাজন হত্যা বলেন রাকিব হত্যা বলেন, এখন কিন্তু এই খবরগুলা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। দেশ আধুনিকায়ন হয়েছে। তাই নিজেদের চিন্তাধারার পরিবর্তন করেন।

সাহানা কাদের- Rakib k jevhabe mereche janowar guloke thik shevhabei Mara uchit. Tahole hoyto onno oporadhi ekbar holeo chinta korbe. Ar Ki bolbo Rajon hottar to bichar hoyni. Ekdin shunbo ashamira be kosur khalash!!!

এম আদম আলী শান্ত-painful !!! should hard punishment

নাসির উদ্দিন-Ader k rakib ar moto mara hok ta hole

সোহেল- oder ka o oi baba batas dea mara hok.

বাংলানিউজের ফেসবুক পেজে পাঠকদের এসব মন্তব্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছাড়াও অনেকে সামাজিক অবক্ষয়, মূল্যবোধের অভাব,  ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক লোভ, জ্ঞানচর্চা তথা শিশুদের অধিকার ও শিশু শ্রম আইন সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই শিশু নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিমত করেছেন।

জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে মূল্যবোধ বৃদ্ধি, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা গেলে নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা রোধ করা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।

গত সোমবার পায়ুপথে কমপ্রেসার মেশিন দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়ে রাকিবকে হত্যা করেন টুটপাড়া কবরস্থানের পাশে শরীফ মোটর গ্যারেজের মালিক শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টু। তাদের গ্যারেজ ছেড়ে অন্য কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার ‘অপরাধে’ বিকেলে এ নির্যাতন চালান শরিফ ও মিন্টু।

পরে নির্যাতনকারীরাই গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন রাকিবকে। সেখানকার চিকিৎসকরা রাকিবকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তার পরিবার ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ১২টার দিকে মারা যায় শিশু রাকিব।

নিহত রাকিবের বাবা টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোডের দিনমজুর আলম হাওলাদার মঙ্গলবার সকালে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয়- গ্যারেজ মালিক শরীফ (৩৫), সহযোগী মিন্টু মিয়া (৪০) ও শরীফের মা বিউটি বেগমকে (৫৫)।

নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী এক নারীসহ শরীফ ও তার ভাই মিন্টুকে পিটুনি দেন।   পুলিশ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাদেরকে হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৫
এমআরএম/জেডএস

** ‘রাকিব মরেনি, মরেছে খুলনার মানুষের বিবেক’
** মামলা মনিটরিংয়ে তিন সদস্যের কমিটি মাঠে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।