ঢাকা, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১০ মে ২০২৫, ১২ জিলকদ ১৪৪৬

মুক্তমত

এই নীল মণিহার...

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:১৫, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এই নীল মণিহার... প্রয়াত লাকী আখন্দ

আশি দশকের মাদকতাময় গানের নায়ক লাকী আখন্দের মৃত্যুতে একটি বিশেষ ঘরানার অবসান হলো। এই নীল মণিহার, আবার এসেছে সন্ধ্যা ইত্যাদি হৃদয়স্পর্শী গানের স্রষ্টা দীর্ঘদিন রোগের সঙ্গে লড়াই করে মারা গেলেন আজ শুক্রবার সন্ধ্যায়। 

মুক্তিযোদ্ধা-সুরকার লাকী আখন্দের দোসর ছিলেন অকাল প্রয়াত শিল্পী ও ভাই হ্যাপী আখন্দ। হ্যাপীর মৃত্যুতে একাই গিটার হাতে বছরের পর বছর সুর তুলেছেন লাকী।

স্বাধীনতার পর ব্যান্ড মিউজিকের চরম উত্থানের সময় একটি আলাদা সংগীত প্রবাহ আনেন এই শিল্পী।  

উচ্চনাদ ও যন্ত্রের ব্যবহারের যুগে কণ্ঠের মাধুর্য ও গায়কী দিয়ে তিনি তার বৈশিষ্ট্যকে অটুট রাখেন। সে সময় বিভিন্ন ব্যান্ড নিয়ে ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদরা সুরের উন্মাতাল ইন্দ্রজাল তৈরি করেন। পরে এই ঘরানায় তপন চৌধুরী, শাফিন, হাসান, মকসুদ, জেমস প্রমুখ শিল্পীর আবির্ভাব ঘটে।  

সবার চেয়ে আলাদা থেকে মোহময় সুরের বিস্তার ঘটান লাকী আকন্দ। একটা নস্টালজিক, হারানো সময় ও স্মৃতি তার গানে প্রাধান্য পায়। সুরের বিষণ্ন ঝরনাধারার মতো তার গানের কথায় বেদনার টুপটাপ বৃষ্টির শব্দ শোনা যায়। খুবই আত্মমুখী, নিভৃত ও একান্ত উচ্চারণ লাকী আখন্দের গানগুলোকে উচ্চকণ্ঠী সংগীত-ধারা থেকে বিশিষ্ট করে রাখে।  

অকালে নেশার নীল আঘাতে হারিয়ে যাওয়া ভাই হ্যাপী আখন্দের একটি ছায়া সব সময়ই তার সংগীত প্রচেষ্টায় প্রভাব বিস্তার করে রাখে। তারুণ্যের বেদনাময় আর্তিতে তিনি আধুনিক আঙিকে হৃদয়জ উচ্চারণে স্পষ্ট করতে থাকেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পরম্পরায়। বৈশাখের এক সন্ধ্যায় নিজের গানে খোঁজা সন্ধ্যার মতোই তিনি হারিয়ে গেছেন। একটি স্বর্ণালী রাতে নীল মণিহার নিয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন বাংলা সংগীতের সংখ্যাহীন শ্রোতার স্মৃতি ও সত্ত্বায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।