ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

আত্মবিশ্বাস না থাকলে সাফল্য শুধু স্বপ্নেই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
আত্মবিশ্বাস না থাকলে সাফল্য শুধু স্বপ্নেই

পৃথিবীর সব মানুষ একটি বিষয়ের প্রতি আসক্ত আর তা হলো ‘সফলতা’। আবার পৃথিবীর ৮০ শতাংশ মানুষের ‘সফলতা অর্জনের পরিকল্পনা’ শুধু স্বপ্নেই বা মুখেই রয়ে যায়।

আজ সফলতার গল্প বলতে গেলে আমাদের সামনে অসংখ্য সফল ব্যক্তির নাম চলে আসে, যা কোনোভাবেই ২০ শতাংশের  ওপরে নয়। তাহলে কেন ৮০ শতাংশ মানুষ তার স্বপ্নের বা সাফল্যের দ্বার প্রান্তে এসে থেমে যাচ্ছে বা সফলতা অর্জনের পরিকল্পনা অংকুরেই শেষ হয়ে যাচ্ছে?

স্বপ্নের বা সাফল্যের দ্বার প্রান্তে এসে থেমে যাওয়া বা সফলতা অর্জনের পরিকল্পনা শুরুতেই শেষ হয়ে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে অসংখ্য কারণ চিহ্নিত করেছেন এবং এ সবগুলোই বিভিন্ন সোস্যাল সাইটগুলোতে পাওয়া যায় বা জানা যায়।

আমরা যদি আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করি, তাহলে অন্যতম একটি কারণকে সামনে নিয়ে আসতে পারি, আর তা হলো আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস হচ্ছে আমার নিজের দক্ষতা, যোগ্যতা, জ্ঞান, বিচার বা বুদ্ধির ওপর পূর্ণ আস্থা বা বিশ্বাস।

আমরা সবাই জানি যে আত্মবিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা অধিকাংশই জানি না এর গুরুত্বের পরিমাপ বা ডিগ্রি। আমরা হয়তো কল্পনাও করতে পারবো না আমাদের জীবনে আত্মবিশ্বাসের গুরুত্ব কতখানি। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এমনভাবেই গঠিত যে শিশু বয়স থেকেই আমরা এক ধরনের ভয়, বাধা বা নিষেধের বলয়ে আবদ্ধ থেকে বড় হই এবং যার ফলশ্রুতিতে

আত্মবিশ্বাস নামক শব্দটি আমাদের জন্য অপরিচিত একটি বিষয়ে পরিণত হয়।

আত্মবিশ্বাস আমাদের সমগ্র জীবনকে ভালভাবে পরিবর্তন করতে পারে। কারণ এটা আমাদের নিজের ওপর বিশ্বাসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং শুধু ঝুঁকি নিতে শেখায় না বরং বাস্তবায়নের পথ বের করে দেয়। আবার আত্মবিশ্বাসের অভাবে আমাদের সামাজিক সম্পর্ক, কর্মজীবন, কৃতিত্ব এমনকি আমাদের মেজাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

নিম্নলিখিত তালিকা আমাদের আত্মবিশ্বাসের গুরুত্বের একটি ভাল ধারণা দেবেঃ
• আপনি যত বেশী আত্মবিশ্বাসী তত কম হতাশা অনুভব করবেন প্রত্যাখানে বা ‘না’ শব্দে। হোক সেটা সামাজিক সর্ম্পকের ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগত জীবনে, কর্মক্ষেত্রে আমরা ‘না’  শুনলেই ঘাবড়ে যাই, হতাশ হয়ে যাই, এমনকি নিজের দক্ষতা, যোগ্যতাকেও অবিশ্বাস করি শুধু আত্মবিশ্বাসের অভাবে।
• আত্মবিশ্বাস মানুষকে ঝুঁকি নিতে শেখায়। যার ফলে আত্মবিশ্বাসীরা একের পর এক সুযোগের সম্মুখীন হন।
• আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনও সমালোচনার দ্বারা প্রভাবিত হন না, বরং খারাপ সমালোচনাকে উপেক্ষা বা হাসির ছলে উড়িয়ে দেন।
• আত্মবিশ্বাস মানুষকে অযথা উদ্বিগ্ন হতে বিরত রাখে এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার কৌশল বের করতে সহায়তা করে।
• ঈর্ষা মানুষকে ধ্বংস করে- এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এটা কি জানি একমাত্র আত্মবিশ্বাস মানুষকে ঈর্ষা থেকে বিরত রাখে।
• আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন না। হোক সেটা সামাজিক, ব্যক্তিগত বা কর্মক্ষেত্র বিষয়ক।

যে কোন সাফল্যের পূর্ব শর্ত হচ্ছে, পরিবর্তনকে গ্রহণ করা বা উন্নতির ধারায় সবসময় নিজেকে বেগবান রাখা। আমরা এটাও জানি,  যে কোনো পরিবর্তন বেদনাদায়ক বা চ্যালেঞ্জিং। আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পিছপা হন না। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের স্বপ্নের বা সাফল্যের দ্বার প্রান্তে এসে থেমে যাওয়া বা সফলতা অর্জনের পরিকল্পনা শুরুতেই শেষ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ আত্মবিশ্বাসের অভাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।