নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, ওই অনুষ্ঠানে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। ফেসবুকের সুবাদে একটি ছবি চোখে পড়লো।
![অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া ক্রেস্ট। ছবি: সংগৃহীত](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/mn220171217103034.jpg)
এর ঠিক নিচে লাল রঙের বাংলা হরফে লেখাঃ
[হুমায়ুন কবির খান
১৬ই ডিসেম্বর ২০১৭
সার্বিক সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতায়ঃ]
কথাগুলো কেমন হলো? আপনাদের মুক্তিযুদ্ধ? এরকম একটি সংবর্ধনা পত্র লেখার আগে একটু সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল না? অনেক দিন আগে ‘খাঁটি গরুর দুধ’ নাকি ‘গরুর খাঁটি দুধ’ নামক ভ্রান্তি সংশোধন পড়েছিলাম। এখন আবার সেটা মনে পড়লো। ‘অংশগ্রহনের’ বানান সঠিকভাবে লেখা নেই কেন? ‘কারনেই’ বানান কি ঠিক আছে? ‘আজ বাংলাদেশ আছে’- এই বাক্যের শেষে ‘আছে’ শব্দটি কি বাহুল্য নয়?
আসুন এবার সংবর্ধনা পত্রের ভাষা কেমন হওয়া উচিৎ ছিল, সেটা দেখি। অন্যকোনো শব্দ সংযোজন না করে, শুধু নির্ভুলভাবেও যদি লিখি, তাহলে কেমন হয়?
‘মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের অংশগ্রহণের কারণেই আজ বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্মের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই সশ্রদ্ধ সংবর্ধনা। ’
‘হুমায়ুন কবির’ নামটি যেখানে এবং যেভাবে লেখা আছে। তাতে কি বোঝায়? তিনি কে? আয়োজক নাকি বীর মুক্তিযোদ্ধা? এই সংবর্ধনা পত্রখানি পাঠ করে কি বোঝা যায়? দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে- মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আশা করেছিলাম, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা জানানোর ভাষাটা অন্তত শুদ্ধ হবে। হুমায়ুন কবির সাহেব যদি মুক্তিযোদ্ধা হন, তাকে যদি সংবর্ধনা দেয়া হয়, তাহলে তাঁর নামের আগে “বীর মুক্তিযোদ্ধা” কথাটি নেই কেন? আমি বিশ্বাস করি, এসব অবহেলাজনিত বিচ্যুতি উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের নজরে এসেছে, আহত করেছে অনেক। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারেন নি।
প্রিয় আয়োজক, আপনারা পার্টি সেন্টার ভাড়া করে সংবর্ধনার আয়োজন করতে পারলেন, দুই তিনশ’ মানুষকে আমন্ত্রণ করতে পারলেন; একেকজন অতিথিকে বাংলাদেশি টাকায় দুই হাজার টাকার বেশি খরচ করে খাওয়াতে পারলেন; কিন্তু দুটি সঠিক বাক্য লেখার ব্যাপারে আপনারা সতর্ক হতে পারলেন না? আপনারা কি ভাবছেন? একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কি আপনাদের দেয়া এই অবহেলাভরা সংবর্ধনা পত্রখানি, তাঁর বাসার শো’কেসে সাজিয়ে রাখবেন?
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৭
জেডএম/