ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

মুক্তমত

আরো অনেক খোলাসা হতে হবে

আবিদ রহমান, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১১
আরো অনেক খোলাসা হতে হবে

বিচার প্রক্রিয়া তখনই গ্রহণযোগ্য হয় যখন অভিযুক্ত মামলার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ শুনে-বুঝে আত্মপক্ষ সমর্থনে সক্ষম হন। প্রচলিত ধারা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং যুক্তি-তর্ক ও বিশ্লেষণের কৌশলগত প্রয়োগের অভাবেই অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থনে কৌঁসুলি বা আইনজীবী নিয়োগ দেন।

অভিযুক্তর সাথে একান্ত কথাবার্তা বলার অধিকার ও সুযোগ আইনজীবীদের প্রাপ্য।

শনিবার মেধাবী পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসের ‘সউদী বিচার প্রক্রিয়ার সমর্থনের’ পরিপ্রেক্ষিতেই এই লেখা। মিজারুল খোলাসা করে বলেননি, সদ্য কতল হওয়া আট হতভাগ্য বাঙালি যথাযথভাবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেয়েছিলেন কিনা। বাংলাদেশের অজপাড়া-গাঁ থেকে জায়গা-জিরাত বন্ধক-বিক্রি করে সউদি যাওয়া এই বাঙালিরা স্বাভাবিকভাবেই সম্ভবত বাংলাভাষার বাইরে অন্য কোনো ভাষায় ‘কার্যকর কমিউনিকেশন’ জানতেন না। আরবি ভাষায় হতভাগ্যদের জ্ঞান আরো শোচনীয় হবার কথা। যদি ভাষাই না-জেনে থাকেন তাহলে উনারা নিজেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মোকাবেলা কিভাবে করেছেন? কিভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন?  কিংবা সউদী আদালতকে কিভাবে বুঝিয়েছেন নিজেদের অবস্হান?

‘ঘটনা বা দুর্ঘটনা’ একটা অবশ্যই ঘটেছিলো। কিন্তু আটজনের সবাই সম্মিলিতভাবে একজনকে হত্যা করেছে, এটা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য ঠেকে না। কেউ নিশ্চয় অপরাধের মূল হোতা ছিলো, কেউ অনুগত সহযোগী। আবার কেউতো থাকতে পারতেন পরিস্হিতিজনিত কারণে সহযোগী। সবার অপরাধ নিশ্চয় এক পাল্লায় মাপা যায় না। সবাই কিন্তু মূল ঘাতক হতে পারেন না।

জেদ্দাস্হ বাংলাদেশ দূতাবাস কী দোভাষী পাঠিয়ে বিচার কার্যক্রমে হতভাগ্যদের সহায়তা করেছিলেন? ( জানি না আদৌ কোনো নিয়মিত দোভাষী দূতাবাসের আছে কিনা। স্বেছাসেবক দোভাষীর প্রসঙ্গ এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে না)। কোন আইনজীবী অভিযুক্তদের আইনি সহায়তা দিয়েছেন বাংলাদেশ দূতাবাস কি তার নাম-ঠিকানা জানেন?  যদি সবকিছু দূতাবাসের অজ্ঞাতে ঘটে থাকে, তাহলে ফেয়ার ট্রায়াল নিয়ে নিঃসন্দেহ হওয়া যাবে না। ফেয়ার ট্রায়ালের স্বার্থে যদি ধরে নেই, সউদি সরকার দোভাষী ও আইনজীবী সহায়তার আয়োজন করেছিলেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে দূতাবাস কী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মামলার বিস্তারিত সংগ্রহ করেছেন? জেনেছেন কার কী অপরাধ?

‘ল’ অব দ্য ল্যান্ড’ মানতে পারি, মেনে নিতে পারি ‘বিচারিক প্রক্রিয়া’, যদি পুরো প্রক্রিয়ায় থাকে স্বচ্ছতা আর যথাযথ ডকুমেন্টেশন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরো অনেক বিস্তারিত জবাবদিহিতা করতে হবে। সিম্পলি বিবৃতির প্রলেপে ঢেকে দেওয়া যাবে না।

ইউ অল আর ওয়েটিং মোর ডিপ্লোম্যাটিক টুইস্ট ফ্রম দ্য টপ ডিপ্লোম্যাটস। ওয়েটিং অ্যান্ড ওয়েটিং।   ধৈর্য্যের কিন্তু একটা বাঁধ থাকে!

ইমেলঃ [email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।