ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

আড়াই কোটি তরুণ ভোটারের কাছে প্রত্যাশা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
আড়াই কোটি তরুণ ভোটারের কাছে প্রত্যাশা তরুণ্যের ভোট

২০০১ সালে আমি প্রথম ভোট দিই! ১৭ বছর আগে আমি ছিলাম বয়সে খুবই তরুণ। রীতিমতো এক্সাইটেড ছিলাম জীবনের প্রথম ভোট দিতে পেরে! তারপর থেকে প্রতি নির্বাচনে আমি ভোট দিয়ে আসছি। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি ভোট দেবো।

এই নির্বাচনে খুব দারুন একটা ঘটনার সামনে আমরা দাঁড়িয়েছি। প্রায় আড়াই কোটি তরুণ প্রথমবারের মতো এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

তরুণদের জন্য এটা বিরাট গৌরবের ও দায়িত্বপালনের বিষয়।

যারা ভোট দিতে যাচ্ছে তাদের আগাম অভিনন্দন। আরা যারা এখনো সংশয়ে আছো তাদের বলছি, তোমরা অবশ্যই ভোট দেবে। রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্বপালনের এ এক বিরাট সুযোগ। যোগ্য নেতা নির্বাচনের এ এক বিরাট সুযোগ।

এমন এক সময়ে এবারের নির্বাচন হচ্ছে যখন জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। একটা অর্থনৈতির ট্রানজিশন পিরিয়ডে আমরা আছি । স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার সবকটি শর্ত পূরণ করেছি । আমরা উন্নত দেশ হওয়ার সঠিক পথেই আছি ।

স্বাধীনতার ৪৭ বছরে যতটা সামনে আগানোর কথা ছিল ততটা হয়তো আমরা যেতে পারিনি কিন্তু এই মুহূর্তে যেখানে আছি সেখান থেকে কেবল আমরা সামনে এগুনোর চিন্তাই করতে পারি। একটা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে ২৫০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এখন আমাদের। সবার সম্মিলিত প্রচষ্টায় আমরা এখানে এসেছি। আমাদের ন্যাশনাল ব্র্যান্ড ভ্যালু এখন ২৫৭ বিলিয়ন ডলার। এই সূচকে আমাদের অবস্থান এখন বিশ্বে ৩৯ তম। এশিয়ার বহু দেশের আগে আমাদের অবস্থান। আমাদের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। মাথা পিছু আয় বেড়েছে। বেড়েছে শিক্ষার হার। গড় আয়ু। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা ঈর্ষনীয় সাফল্য দেখিয়েছি । যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন নতুন উড়াল সড়ক তৈরি হয়েছে। ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়েছে। খেলাধুলায় আমরা সাফল্য পাচ্ছি । বেড়েছে আমাদের রফতানি এবং রিজার্ভ। আমরা বিলিয়ন ডলার অর্থনীতি থেকে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতি দিকে এগিয়ে যাচ্ছি ।

হ্যাঁ, আমি মানছি আমাদের দেশে হয়তো উন্নত দেশগুলোর মতো গণতন্ত্র চর্চা হয় না । ভিন্ন মত হজম করার মতো উদারতায়ও হয়তো পিছিয়ে আছি আমরা । রাস্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো এখন ততটা শক্তিশালী হয়ে উঠেনি। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আমরা এখন আটপৌরেই রয়ে গেছি । আছে বেকার সমস্যা। আছে শ্রেণী বৈষম্য । সেসঙ্গে ব্যাংকখাত ও শেয়ারবাজারে অস্থিরতা।

তারপরও বলব আমরা এগিয়েছি। যখন দেশের বাইরে ইউরোপে কিংবা এশিয়ার অন্য কোনো দেশে বা মিডিলইস্টে যাই আমাদের প্রতি দেখি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কতটা বদলেছে। আমাদের এখন তারা সমিহের চোখে দেখে।

আমাকে অনেক তরুণ প্রশ্ন করে, কাকে ভোট দেবো? আমি বলি, কাউকে ভোট দেব না!

দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, কালো টাকার মালিক, মাদকব্যবসায়ী ও অসৎ মানুষকে ভোট দেবে না।

ভোট দেওয়ার আগে তোমরা নিজেদের বুদ্ধি বিবেচনা কাজে লাগাও । দেশ হিসাবে আমরা আরো সামনে এগুতে চাই । যদি তুমি নৌকা পছন্দ করো আর তোমার বন্ধু ধানের শীষ, তবে একে অপরকে সহ্য করতে শিখো। সবার আগে দেশকে ভালোবাসতে শিখো। মনে রেখ, ঐক্য মানেই সাদৃশ্য নয় । চিন্তার মিল নয়। বরং বিভিন্ন ধরনের বৈসাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও একে অপরকে সহ্য করার নামই ঐক্য। সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নামই ঐক্য ।

আগামী নির্বাচনে তোমাদের ভোট হোক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পক্ষে। তোমাদের ভোট হোক দেশের পক্ষে। তোমাদের ভোট হোক ভালো মানুষের পক্ষে । মনে রেখো, তোমরাই আগামীর বাংলাদেশ।

লেখক: তানভীর শাহরিয়ার রিমন, সংগঠক ও অনলাইন একটিভিস্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।