কৃষকের অ্যাপটি মূলত স্মার্টফোনে ব্যবহারোপযোগী একটি অ্যাপ্লিকেশন/সফটওয়্যার। এটি ডিজিটাল ধান/খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যেটি শুধুমাত্র কৃষকরা ব্যবহার করবে।
কৃষক ঘরে বসেই এই অ্যাপের মাধ্যমে সরকারের কাছে ধান বিক্রয়ের আবেদন করতে পারবেন। কৃষক আবেদন করার পর আবেদনটি কী অবস্থায় আছে তিনি তা এই অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন। কৃষক যদি কৃষক নির্বাচনী লটারিতে বিজয়ী হন এবং বরাদ্দাদেশ পান সেটিও তিনি ঘরে বসেই জানতে পারবেন। কৃষক যখন ধান সরবরাহ করবেন তখন তিনি অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন তার WQSC (Weight Quality Stock Certificate বা ওজন মান মজুদ সনদ) এর অবস্থা কী? এছাড়াও তিনি মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে তার আবেদনের অবস্থা জানতে পারবেন। এটির নিবন্ধন প্রক্রিয়া খুবই সহজ। নিবন্ধন শুধু মাত্র একবারই করতে হবে। নিবন্ধনের সময় সংশ্লিষ্ট কৃষকের জাতীয় পরিচয়পত্রটি নির্বাচন কমিশন থেকে যাচাই (অনলাইনে) করা হয়ে থাকে।
ধান/খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের সাথে (কৃষকের অংশ) নিবিড়ভাবে কাজ করে। প্রথমে কৃষক নিবন্ধন আবেদন করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিবন্ধন আবেদনটি যাচাই বাছাই করে অনুমোদন করলে সংশ্লিষ্ট কৃষক ধান বিক্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন। আবেদন করার পর কৃষক নির্বাচনী লটারি অনুষ্ঠিত হয়। সেই লটারিতে কৃষক নির্বাচিত হলে তিনি ধান জমা দেয়ার জন্য বরাদ্দাদেশ পাবেন। বরাদ্দাদেশে উল্লেখ থাকে কী পরিমাণ ধান কোন এলএসডিতে সরবরাহ করতে হবে। ধান সরবরাহ করা হলে সংশ্লিষ্ট কৃষকের WQSC এর প্রক্রিয়া শুরু হয়। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক WQSC মঞ্জুর করলে কৃষক ব্যাংক থেকে তার প্রাপ্যতা/টাকা বুঝে নিবেন।
এটি ব্যবহারের ফলে সরকারি সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে TCV (Time-Cost-Visit) সূচক বৃদ্ধি পাবে। পূর্বে যেমন কৃষককে ধান বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্যের জন্য উপজেলা অফিসে যেতে হত। বর্তমানে কৃষক ঘরে বসেই সেসকল তথ্য পেয়ে যাবেন। যেহেতু কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে কৃষক সকল তথ্য জানতে পারছে, সেহেতু হয়রানি অনেকাংশে কমে যাবে। এছাড়া কৃষকের আবেদনের অবস্থা কি তা জানা যাবে। কৃষকের বরাদ্দাদেশ জারি হলে তা ঘরে বসেই দেখা যাবে, এটার জন্য উপজেলা খাদ্য অফিসে গিয়ে খোঁজ নেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এছাড়াও এটি ব্যবহার করে কৃষক তার মতামত বা অভিযোগ করতে পারবেন। WQSC প্রস্তুত হওয়া মাত্র কৃষক ব্যাংক থেকে খুব সহজেই তার প্রাপ্যতা বুঝে নিতে পারবেন। যেহেতু জাতীয় পরিচয় পত্র নির্বাচন কমিশন থেকে যাচাই করা হয়ে থাকে তাই ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্রধারী কেউ নিবন্ধিত হতে পারবে না।
এবারের আমন মৌসুমে পাইলট প্রকল্পের আওতায় ১৬টি জেলার ১৬টি উপজেলায় কৃষক আ্যাপ চালু হয়েছে। এই আ্যাপের মাধ্যমে কৃষক ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে ধান বিক্রির যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে। গত ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত এই আ্যপের মাধ্যমে ১৬টি জেলায় মোট ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৯৮৯ জন কৃষক নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ধান বিক্রির আবেদন করেছেন ৭৬ হাজার ৫৮৩ জন । এখন পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এ কৃষক আ্যাপ চালু করা হবে।
সুমন মেহেদী, সিনিয়র তথ্য অফিসার খাদ্য মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ সময়: ০০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২০
এজে/