এখনই যদি দেশ লকডাউন না করা হয়, তবে যা যা হতে পারে:
১. স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। তাতে করে পুরো চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
২. জানা মতে, খুব অল্প পরিসরে এক সপ্তাহ আগে এ ভাইরাসের ব্যাপারে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। এখনও সব ডাক্তার, নার্স জানেন না কীভাবে চিকিৎসা চলবে এ ভাইরাসের।
৩. আরও জানা মতে, বর্তমানে থানা পর্যায়ে করোনার কিট পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু, এ পর্যায়ে নমুনা ভালোভাবে হ্যান্ডল করতে না পারলে রোগ আরও ছড়াবে। থানা পর্যায়ে ল্যাবও নেই।
লকডাউনের পর করণীয়:
১. স্বাস্থ্যখাতে আরও মনোযোগী হওয়া। আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স ও সিটিজেনস অ্যাকশন ফোরামের মাধ্যমে সমন্বয় করা।
২. দেশের সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৩. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য কঠোর নিয়ম করা। মিটিং, মিছিল সব বন্ধ করা। খোলা জায়গায় জমায়েত বন্ধ করা।
৪. গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্র (পিপিই) সরবরাহ করা।
৫. সব উপজেলায় র্যাপিড রেসপন্স টিম গঠন করা।
৬. দ্রুত থানায় থানায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ও স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত করা।
৭. সব স্থল, জল সীমান্ত ও এয়ারপোর্ট বন্ধ করা।
৮. ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া। অন্তত জীবন বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় খাবার।
৯. আগামী এক মাসের বেতন যার যার অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া।
১০. প্রত্যেক গ্রামে-গ্রামে, মহল্লায় প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার মজুদ রাখা।
দেশের প্রত্যেকটা মানুষ করোনা হুমকিতে। এমনকি যারা ঘর থেকে বের হননি বা হচ্ছেন না তারাও। কারণ পরিবারের কাউকে না কাউকে বের হতে হচ্ছে। বাইরে থেকে প্রতিদিন গৃহপরিচারিকা আসা বন্ধ করে দিলেও, ময়লা নিতে আসা লোকটি বা সংবাদপত্র দিতে আসা লোকটি বা সেই সংবাদপত্র থেকেও করোনা ছড়াতে পারে। আর সেসব বন্ধ করলেও ঘরে পড়ে থাকা আবর্জনার স্তূপও নিরাপদ নয়। এ থেকে অন্য রোগ হলে তার চিকিত্সা করাতে গিয়েও করোনার শিকার হওয়া অস্বাভাবিক নয়। অর্থাৎ করোনা জ্যামিতিক হারে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃদ্ধি পেতে পারে।
সবার আগে মানুষ। মানুষ বাঁচাতে হবে। মানুষ যাতে করোনাতে না মরে, নিঃস্ব হয়ে, অনাহারে না মরে এখন এটাই সরকারের প্রধান ও প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত। যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে রাস্তায় রাস্তায়, ঘরে-ঘরে লাশ পড়ে থাকবে। রাজনীতিবিদ হিসেবে না, সেলিব্রিটি হিসেবে না, সমাজকর্মী হিসেবে নিজেদেরকে ভাবতে হবে এবং সেভাবেই কাজ করতে হবে।
লেখক: আহসান ইমাম,
সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২০
এইচজে