কর্মক্ষেত্রে থাকি আর বাইরে থাকি, অনলাইন সংবাদপত্রের সঙ্গে আপডেট থাকতে হয় প্রতি ঘণ্টায়ই। কত কত খবর পাই প্রতিদিন, তবে হতাশাজনক হলেও সত্য সুখবর খুব কমই থাকে।
তবে আজকের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি একদম বদলে গেছে। বাংলানিউজের হোমপেইজ ওপেন করে ‘খুব খারাপ’ কোনো সংবাদ চোখে পড়লো না। গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে যে খবরটিকে সবচেয়ে বেশি কাভারেজ দেয়া হচ্ছে সেটি হলো গো আজমের গ্রেফতারের সংবাদ। খবরটি দেখে খুব উচ্ছ্বসিত হলাম, নিজের অজান্তেই চিৎকার করে উঠলাম... ‘অভিনন্দন বাংলাদেশ!’
ভালো লাগলো পুরো খবরটি পড়ে। গো আজম অসুস্থ্য, তাকে জেলে পাঠানো ঠিক হবেনা, তিনি ডায়েবেটিকসহ আরোও নানান সমস্যায় আক্রান্ত, হ্যান-ত্যানসহ বিভিন্ন যুক্তি দেখাতে চেয়েছেন তার আইনজীবী। আদালত অন্তত আইনজীবীর এসব প্যাঁচাল শোনেনি, সঠিক একটি সিদ্ধান্তই পেয়েছে দেশবাসী।
দেখলাম, সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতেও খবরটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে। ‘অভিনন্দন, বাংলাদেশ!’ বার্তায় ভরে উঠেছে আমার ফেইসবুক নিউজফিড।
তাই, আজ গোলাম আজমের গ্রেফতারের খবর ঈদের চেয়েও আনন্দের বাংলার মানুষের কাছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের আত্মীয়-স্বজন গো আজমের নেতৃত্বে থাকা কুখ্যাত রাজাকার-আলবদর বাহিনীর দ্বারা খুন-ধর্ষণ বা হত্যার শিকার হয়েছেন কেবল তাঁরাই নন, পুরো দেশবাসী আজ ঈদ উদযাপন করবে- সেটি নিশ্চিত।
ঈদের এ প্রসঙ্গ মাথায় আসতেই ছোটবেলায় পাট্য বইয়ে ঈদ নিয়ে পড়া সেই পরিচিত লেখাটির কথা মনে পড়লো, ‘আজ ঈদ, মদীনার ঘরে ঘরে আনন্দ। পথে পথে ছেলেমেয়েদের কলরব’। এটাকেই একটু পরিবর্তন করে ফেইসবুকে লিখে দিলাম ‘আজ ঈদ, বাংলার ঘরে ঘরে আনন্দ। পথে পথে তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কলরব’।
‘স্ট্যাটাসটি’তে যখন প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, তখন আবারও খুললাম বাংলানিউজ, বুঝলাম আমার একটি ভুল হয়ে গেছে। কেবল বাংলার ঘরে ঘরেই আজ আনন্দ নয়, আনন্দ আজ বিশ্বব্যাপী। ইতিমধ্যে নিউ ইয়র্কে আনন্দ উল্লোসের খবরও পত্রিকার পাতায় এসে গেছে। হয়ত কিছুক্ষণের মধ্যে আসবে অন্যান্য দেশগুলোর খবরও। বাংলানিউজের পাতায় অন্তত সে খবরগুলো দেখার অপেক্ষা করছি।
লেখক: সাংবাদিক ও ব্লগার
আন্তর্জালিক যোগাযোগ: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, ১১ জানুয়ারি, ২০১১