ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড এবং শিশু মেঘ

নাজনীন নাহার, সাংবাদিক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১২
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড এবং শিশু মেঘ

আমি এখনও জানি না এটা ডাকাতি না রহস্যজনক হত্যা, গণমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশিত হচ্ছে এখন পর্যন্ত। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডই হোক কিংবা ডাকাতি ----সত্য এটাই যে,সাংবাদিক সাগর সারওয়ার ও মেহরুন রুনি আর নেই।

আমরা হয়তো ক’দিনেই  বিষয়টি ভুলে যাবো কিংবা শোক আয়োজনে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে অনেক উদ্যোগ।

কিন্তু সাগর-রুনিতনয় মেঘ? ছোট একটা শিশু হঠাৎ ঘুম ভেঙে হাতড়ে বিছানায় মাকে না পেয়ে তার খোঁজে বিছানা ছেড়ে যদি দেখে নিকষ কালো রাত্রিতে রক্তে লাল মেঝেতে পরম নিন্দ্রায় শুয়ে আছে তার বাবা-মা, একবার ভাবুন দৃশ্যপট!

আমাদের বুক কি সত্যি কাঁপে? আমাদের কি সত্যি মায়া হয় কিংবা কোন কষ্ট? জানি না। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, ফখরুল ইসলাম- ‘দেশে যে আইন শৃংখলার অবনতি হয়েছে- এটা  তারই প্রমাণ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব -‘সমাজে যারা বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চায় তারাই এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে’।

দলীয় আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণ, রাজনীতির খেলা। আমরা এই খেলার দর্শক ছাড়া কিছুই নই। তাহলে শিশু মেঘের রাত প্রহরে কান্নার শব্দ, গোঙানির শব্দ, গহিন কালো অন্ধকার ভেদে কি রাজনীতিবিদদের কানে বা জনগণের কানে পৌঁছেছে? আমরা এখনও এতটা নিশ্চল কেন? কেন এখনও এধরনের ঘটনা ঘটে? আমরা কিভাবে এত স্থির থাকতে পারি?  হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলে গিয়ে কিভাবে  এধরনের রাজনৈতিক বাক্যব্যয় করতে পারি?

আমি জানি না এই হত্যাকান্ডের সঠিক তথ্য কবে জানা যাবে। জানি না কবে এর কি সু(?)বিচার হবে। শুধু এটা জানি শিশু মেঘ কোনদিন আর মায়ের আঁচলের শীতল ছায়ায় ঘুমাতে পারবে না। কোনদিন আর পাঞ্জাবী পরে বাবার সাথে ঈদের নামাজ পড়বে না। রাতের পর রাত অবুঝ শিশুর নির্লিপ্ত নয়নের কোল বেয়ে ঝরে যাবে অশ্রু। আর আবার আমরা সব ভুলে যাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।