ঢাকা, রবিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জুন ২০২৪, ২২ জিলহজ ১৪৪৫

মুক্তমত

খাঁটি সাংবাদিক এবিএম মূসা

এবিএম মূসার জন্মদিনে বাংলানিউজের জন্য লিখেছেন, আতাউস সামাদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১২
খাঁটি সাংবাদিক এবিএম মূসা

বাংলাদেশের বিখ্যাত সাংবাদিক এবিএম মূসা আজ মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২, তাঁর জীবনের ৮২তম বছরে পদার্পণ করলেন। আজ তাঁর ৮১তম জন্মদিন।

পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে মোনাজাত করি তিনি যেন মূসা ভাইকে অন্তত শতবর্ষী করেন। মূসা ভাইয়ের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ অনেকের মধ্যে একজন এই ক্ষুদ্র ব্যক্তির তরফ থেকে সর্বশক্তিমানের কাছে এটি সামান্য চাওয়া। একই সাথে স্নেহময়ী ভাবী সিতারা মূসারও আরোগ্য কামনা করি।

তারুণ্যে দু’জন জুটি বেঁধেছিলেন গোপনে এবং তার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ভাগ্যের কিছুটা অনিশ্চয়তার মাঝে। সেই থেকে তাঁরা দু’জন একে অপরের হাত শক্তভাবে ধরে আছেন।

দেশের জন্য মূসা ভাইয়ের যে টান, যে কর্তব্যবোধ, ক্ষমা করে দেবেন মূসা ভাই, তা বোধহয় ভাবীর জন্য এই গভীর ভালোবাসার চেয়ে একটু বেশি, কমতো নয়ই। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মূসা ভাই কৌশলে অবরুদ্ধ বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ভাবী ও বাচ্চাদের ঢাকায় রেখে। বিদেশে গিয়ে প্রকাশ্যেই কাজ করেছেন বাংলাদেশের যুদ্ধ ও এখানকার বিপন্ন মানুষদের খবর প্রচার করতে। মূসা ভাই যখন ঢাকা ছাড়েন তখন তিনি তৎকালীন পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকার বার্তা সম্পাদক। ঐ পদ, তুখোড় ও নির্ভীক সাংবাদিক এবং তৎকালীন সারা পাকিস্তানের সাংবাদিকদের নেতাদের একজন হিসেবে হানাদার পাকিস্তানিরা তাঁকে খুব ভালভাবেই চিনতো। তাঁর ওপর পাকিস্তানি মিলিটারি প্রশাসনের চাপও ছিল তাদের মন মতো করে পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায় খবর ছাপানোর জন্য। ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিধাহীন ভক্ত এবং মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নে যাঁর চোখ ভরা তাঁর পক্ষে পরিবার ও চাকরি ত্যাগ করে স্বাধীনতার জন্য কলমযুদ্ধে নামা অবশ্য যুক্তিগ্রাহ্য। এই সংগ্রাম করতে করতে সাংবাদিক এবিএম মূসা রণাঙ্গনে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাঁর কিছু রিপোর্ট (অন্তত একটি আমিও শুনেছি) তাঁর পরিচয় দিয়েই বিবিসি’র সংবাদে উদ্ধৃত হয়েছিল।

এই প্রসঙ্গে আমি বন্ধু সাংবাদিক প্রয়াত সলিমুল্লাহ’র কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। একাত্তরে সে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় কাজ করতো। পাকিস্তানি সামরিক কর্তৃপক্ষ তাকে হুকুম করেছিল লায়ালপুরে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাক্ষ্য দিতে হবে। কখন তাকে ঢাকা থেকে বিমানে রওয়ানা হতে হবে তারা সেই দিনক্ষণও ঠিক করে দিল। সলিমুল্লাহ নির্দ্দিষ্ট সময় বাড়ি থেকে বেরও হলো তবে সে বিমানবন্দরের পথে না গিয়ে রাস্তা থেকেই উল্টো দিকে নিরুদ্দেশের পথে যাত্রা করলো। যাবার আগে সে তার স্ত্রীকে বলে গিয়েছিল যে, সে পাকিস্তান যাবে না বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে না। সে পালাবার চেষ্টা করবে তার স্ত্রী যেন নিজেই নিজেকে রক্ষার ব্যবস্থা নেয়। সলিমুল্লাহ সীমান্ত পার হবার রাস্তা জানতো না। তাই পূর্বদিকে যে পথ গেছে তাই ধরে চলেছে। সহৃদয় বাঙালিদের সাহায্যে এক সময় সীমান্ত পেরিয়ে সে স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রে যোগ দিয়েছিল।

মূসা ভাই এই বৃদ্ধ বয়সেও বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে, বিশেষত চ্যানেল আই-তে গভীর রাতের সংবাদ বিশ্লেষণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। টেলিভিশনের পর্দায় দেখতেই পাই যে মূসা ভাই ক্রমশ দুর্বল ও কৃশকায় হয়ে পড়েছেন। একটু চিন্তিত হয়ে একদিন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে, এখনো অত রাতে টিভি স্টুডিওতে যান কেন? আসা, যাওয়া, জেগে থাকার ধকল তো অনেক। উত্তরে মূসা ভাই বলেছিলেন, এ কাজটা করি প্রয়োজনীয় কথাগুলো বলার তাগিদে। বলতে পারো এ আমার জন্য নিঃশ্বাস নেবার একটা পথ। ’

আর আমরা বলতে পারি মূসা ভাই কথা বলেন রাখঢাক না করেই তবে সযতনে শালীনতার সীমার মধ্যে থেকে। প্রথম আলো পত্রিকায় তিনি যে মন্তব্য ও ভাষ্য লেখেন সেগুলোর ভাষা সর্বতোভাবেই সাংবাদিকের, কোনো রাজনীতিবিদ-সাংবাদিকের নয়। আর উপসংহারে এসে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেন তা প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপন করে এবং সেগুলো বিশ্লেষণের পর। লক্ষ্যণীয় হলো, মূসা ভাই খুব ভালো মতই বোঝেন যে তিনি কী বলেছেন এবং জানেন যে তাঁর অভিমতটি কী কিন্তু তাঁর লেখায় নিজের মতামতটা অন্যের ওপর চাপিয়ে দেবার কোনো রকম চেষ্টা থাকে না।

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মূসা ভাই আমাদের যেভাবে রিপোর্টিং করতে নির্দেশ দিতেন তা পঞ্চাশ বছর পর এখনও অনুসরণীয়। তিনি বলতেন, ‘যা লিখবে তা নিজে দেখে লিখবে। যা দেখতে পাও নাই তা লিখতে হলে প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে শুনে নেবে। প্রত্যক্ষদর্শীকে নির্ভরযোগ্য মনে না হলে অথবা কোনো প্রত্যক্ষদর্শীকে সরাসরি না পেলে অন্তত দু’টি ভিন্ন সূত্র থেকে খবরের তথ্য ও সত্যতা যাচাই করে নেবে। ’

মজার বা সত্যি বলতে কী, কঠিন ব্যাপারটা ছিল, এর সবই করতে হতো ডেড-লাইন বা নির্দ্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে। কোনো সমস্যা সম্পর্কে রিপোর্ট করার দায়িত্ব দেওয়ার সময় মূসা ভাই স্পষ্ট বলে দিতেন যে শুধু সমস্যার বিবরণ দিলেই হবে না, সমস্যাটার সমাধান কী এবং তা কীভাবে করা সম্ভব সেকথাও থাকতে হবে সংশ্লিষ্টদের জবানীতে, বিশ্লেষকদের অভিমত উল্লেখ করে এবং রিপোর্টার তার অনুসন্ধানের মাধ্যমে যে জ্ঞানলাভ করেছে তার আলোকে তার নিজস্ব পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।

রিপোর্টের ভাষা কেমন হবে সে সম্পর্কেও মূসা ভাইয়ের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল যে, আমরা কাউকে কোনো কিছু জানাতে হলে যেভাবে বলি সেভাবে লিখতে হবে, অর্থাৎ সবচেয়ে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি সবার প্রথমে বলতে হবে। লিখতে হবে সহজ-সরল ভাষায়, যতদূর সম্ভব পরিচিত শব্দ ব্যবহার করতে হবে। পঞ্চম বা ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়া ব্যক্তিও (সেই সময় ইংরেজির ওপর  জোর দেওয়া হতো) যেন আমাদের কাগজ পড়ে বুঝতে পারেন কী লেখা হয়েছে। রিপোর্টার নিজে যেসব তথ্য প্রয়োজনীয় মনে করবেন তার সবই তিনি লিখতে পারেন কিন্তু বার্তা সম্পাদক ও তার সহকারীরা রিপোর্ট পড়ে ঠিক করবেন যে এসবের কতটুকু ছাপা হবে, অর্থাৎ পাঠকের প্রয়োজন মেটানো এবং পত্রিকার পাতায় স্থান সঙ্কুলান করার মধ্যে সমন্বয় করে সম্পাদনার কর্তব্য ও অধিকার বার্তাকক্ষের। তিনি বলতেন, একটি রিপোর্টের প্রথম পাঠক বার্তাকক্ষের কর্তব্যরত সহ-সম্পাদক। কোনো রিপোর্ট নিয়ে তার যদি কোনো প্রশ্ন, কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও বাড়তি তথ্যের চাহিদা না থাকে তাহলে ধরে নেওয়া যাবে যে, রিপোর্টার সঠিকভাবে তার দায়িত্ব পালন করছে। অবশ্য একই সঙ্গে তিনি রিপোর্টারদের সতর্ক করে দিতেন যে, কেউ যদি তাদের রিপোর্টে অসত্য তথ্য থাকার বা একপেশে হবার অভিযোগ তোলেন তাহলে তা খণ্ডন করার মতো তথ্য-প্রমাণ যেন তাদের হাতে রাখেন, বাকি লড়াই তার ‍ও সম্পাদকের। এরকম ক্ষেত্রে পত্রিকার মালিকের অনুযোগকেও একইভাবে মোকাবিলা করতেন তিনি।

এবিএম মূসা চট্টগ্রামে কলেজে পড়ার সময়ই সাংবাদদাতা হয়েছিলেন। ঢাকা এসে প্রথমে স্পোর্টস রিপোর্টার, তারপর বার্তা সম্পাদক। আবার বার্তা সম্পাদক থাকার সময়ও লন্ডনের দি টাইমস, দি সানডে টাইমস ও বিবিসির সংবাদদাতা ছিলেন। ফলে রিপোর্টিং-এর টান অগ্রাহ্য করতে পারেন নাই কখনো। ষাটের দশকের শুরুতে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সময় নিজের গাড়িতে করে আমাদের বিপদসঙ্কুল জায়গায় নিয়ে গেছেন। গভীর রাতে বুড়িগঙ্গায় পঞ্চবটিতে লঞ্চডুবি হয়েছে জেনে আমাকে তার গাড়িতে করে ফতুল্লা থানায় নিয়ে গেছেন সেখানে অবস্থানরত উদ্ধার পাওয়া সারেং ও কিছু যাত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য; আর ফিরে এসে আমাকে রিপোর্ট লিখতে বলে অফিসেই বসে থেকেছেন তা সম্পাদনা করার জন্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে জেনে আবারও তার গাড়িতে করেই ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে নিয়ে গেছেন সেখানে। ফেরার সময় কোনো রকমে শীতলক্ষ্যা নদী পার হবার শেষ ফেরিটি ধরেছেন। দুরন্ত বেগে গাড়ি চালিয়েছেন রাতের বেলায়। অথচ রিপোর্টটি আমার বাই-লাইন।

মূসা ভাই রাজনৈতিক আচরণের দিক থেকেও উদার মনের মানুষ। কম্যুনিস্ট সাংবাদিক নেতা কে জি মোস্তাফা যখন কারাগার থেকে বেরিয়ে কর্মহীন তখন আওয়ামী লীগ পন্থী মূসা ভাই তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যান কট্টর কম্যুনিস্ট-বিরোধী হামিদুল হক চৌধুরীর মালিকানাধীন পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায় গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সহ-সম্পাদক পদে। একইভাবে সদ্য প্রয়াত ফয়েজ আহমদকে ১৯৬২ (অথবা ৬৩-তে) কারামুক্তির পর নিয়ে আসেন অবজারভার গ্রুপের নতুন সাপ্তাহিক পূর্বদেশ পত্রিকায়। সেখানে কালবিলম্ব না করে একের পর এক সাড়া জাগানো রিপোর্ট করতে থাকেন ফয়েজ ভাই।

বাংলাদেশ পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত হবার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম মহাপরিচালক হন এবিএম মূসা। তখনই শিল্পীদের বিরুদ্ধে গণহারে ‘দালালির’ অভিযোগ এনে কালো তালিকাভুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। পরে তিনি দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকার সম্পাদক হন। সেই সময়ে আমি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে কর্মরত ছিলাম। তিনি আমাকে খবর দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী কিংবদন্তিতুল্য ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করতে। আনুষ্ঠানিক সংবাদ-সাক্ষাৎকারের অনুমতি মিলল না তবে একজন বিদেশি সম্পাদকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে রাজি হলেন ইন্দিরা গান্ধী। ২০ মিনিটের সেই সাক্ষাৎকারে একটি বিশেষ প্রশ্ন করার অনুমতি চেয়ে নিলেন সম্পাদক এবিএম মূসা। সঙ্গে এও বলে নিলেন যে, অন্তত এই প্রশ্নটির উত্তর ছাপাতে দিতে যেন রাজি থাকেন ইন্দিরা।
 
প্রশ্নটি ছিল- ‘পাকিস্তান এখনও বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি, এই অবস্থায় আপনি কি বিভিন্ন জরুরি সমস্যার ব্যাপারে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মাঝে মধ্যস্থতা করবেন?’

প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী উত্তর দিলেন, ‘তা করবো, যদি দুই দেশই তাতে সম্মত থাকে। ’ তাঁর এই উত্তর পরদিন বড় খবর হয়েছিল সারা দক্ষিণ এশীয় উপমহাদেশে। এর কিছুদিন পরই যুদ্ধবন্দী প্রত্যর্পণ ও পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদের দেশে ফেরা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। এসব বৈঠক বাংলাদেশের দাবি ও মতামত তুলে ধরতেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা। এরকম বৈঠকের আগে ভারতীয় কোনো না কোনো উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ঢাকায় এসে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করে যেতেন এবং দিল্লিতে বৈঠক হলে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে বা অঘোষিতভাবে দিল্লিতে থাকতেন যাতে তাদের সঙ্গে সহজেই ভারতীয়রা সলা-পরামর্শ করতে পারেন।

মূসা ভাইয়ের কাছে আমাদের শেখার আছে অনেক কিছু। তিনি গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছিলেন সরকারের কাছ থেকে একটা টেলিভিশন স্টেশন প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স পেতে কিন্তু পাননি। সম্পাদকের পূর্ণ কর্তৃত্ব ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে দৈনিক পত্রিকা-বাংলা বা ইংরেজি- সম্পাদনা করতেও রাজি ছিলেন তিনি। তেমন কোনো প্রস্তাব পাননি তিনি। পাবেন কী করে, এবিএম মূসা তো বিপজ্জনক সাংবাদিক। স্মরণ করুন, ফয়েজ আহমদকেও সরকার প্রধানের সঙ্গে মতান্তরের জন্যই বাসস ছাড়তে হয়েছিল। আরও লক্ষ্য করুন, দুজনেরই দেশে খ্যাতির পাশাপাশি বিদেশেও ব্যাপক পরিচিতি আছে। ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বিখ্যাত সাংবাদিক এস এম আলীর তেমন অবস্থা। তাকেও কিন্তু অনেক দিন সরাসরি সাংবাদিকতা নয় এমন চাকরি করতে হয়েছিল। নীতি আর বাস্তবতার সংঘর্ষ সবসময়ই সাংবাদিকদের জন্য কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে থাকে। তবে মূসা ভাই একটা রেডিও বা টেলিভিশন প্রতিষ্ঠান করতে পারলে এখনকার তরুণ সাংবাদিকরা অনেক কিছু শিখতে পারতেন সেখান থেকে।

মূসা ভাইয়ের একান্ত ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশের সাংবাদিকরা যেন তাদের পেশাদার ইউনিয়ন পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ হন। গত বছর তাঁর জন্মদিনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সংবর্ধনায় সাংবাদিকদের প্রতি একতাবদ্ধ হবার আহবান জানান। মাত্র ৬ দিন আগে শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক-রাজনীতিক নির্মল সেনও একই আহবান জানিয়েছেন। মনে হচ্ছে, সাংবাদিকরা কিছুটা হলেও সেই পথে অগ্রসর হচ্ছেন। এবার মূসা ভাইয়ের জন্মদিনে হয়তো সেই সংবাদটাই আসছে বড় উপহার হিসাবে। মূসা ভাই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন। আল্লাহর কাছে তার আশু রোগমুক্তি কামনা করি।

লেখক- উপদেষ্টা সম্পাদক-দৈনিক আমার দেশ

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।