ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

মওদুদ ও আমার মুনাফ ভাই!

আবিদ রহমান, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১২
মওদুদ ও আমার মুনাফ ভাই!

অনেক রাজনীতিবিদ আছেন যারা সব সময় সরকারে একনিষ্ঠ হয়ে থাকতে আগ্রহী। কিন্তু বারবার সরকার বদল হয়ে যায় বিধায় তারা ‘অগত্যা’ দল বদলে ‘বাধ্য’ হন।

প্রবীণ রাজনীতিক মওদুদ আহমদ ‘সরকারে থাকা প্রীতির’ শীর্ষে। দুর্মুখেরা উনাকে ডাকেন ‘আল পার্টি, নো পার্টি, প্রেসিডেন্ট সেন্ট্রাল কমিটি’। তিনি সব দলেই ছিলেন এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও থাকবেন এমন ব্রতে নিবেদিত।

একমাত্র ব্যতিক্রম জামায়াত। মওদুদ সাহেব এই দলের সদস্য পদ অর্জনে কখনোই সফল হননি। অন্যদল গুলোর নেতা হবার সুবাদে তিনি সেইসব দলের নীতি-নির্ধারণ, রাজনীতি ইত্যাকার বিষয়ে বেশ ওয়াকিবহাল হলেও জামায়াত সম্পর্কে উনার হাতে-কলমের জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। জোটভূক্ত হবার সুবিধায় মওদুদ সাহেব জামায়াতি রাজনীতির ইংগিত-ভাবনা সম্পর্কে কিছুটা হয়তো ধারণা রাখেন। অষ্পষ্ট ধারণা নিয়ে খুব বড় দূরত্বে যাত্রা অসম্ভব।

এক সিনিয়র সম্পাদকের ভাষায় মওদুদ অলয়েজ ওয়ার্কস ফর নেক্সট গভর্মেন্ট। তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে ‘নাজেল’ হবার ব্যর্থ চেষ্টায় ছিলেন কিছুদিন। এধরনের ‘রাজনৈতিক ব্যর্থতা’ উনার জীবনে এই প্রথম। ক্ষমতায় যাবার শেষ সম্বল ও একমাত্র উজ্জ্বল সম্ভাবনা বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট। দাঁত কামড়ে পড়ে থাকা মওদুদ মাঝে মধ্যেই ‘নিরীহ, গোবেচারা ও বুদ্ধিজীবী’ টাইপের ‘বাতচিতে’ নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব সংবাদপত্রের পাতায় টিকিয়ে রাখেন।

জিয়ার সহকর্মী হবার সুবাদে তিনি তারেক রহমানের শিশুকাল দেখেছিলেন। উনার চোখের সামনেই তারেক রহমান একদিন যুবক হয়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির কর্ণধার হয়ে উঠেছেন। কিন্তু মওদুদ সাহেব যে বিগলিত বিনয়ে তারেক-বন্দনা করেন তাতে উনাকে আমার বাবার আমলের কাজের লোক মুনাফ ভাইয়ের বাইরে কিছু মালুম হয় না। আমাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করা মুনাফ ভাই আজো শ্রেণীচরিত্র আর ‘গোলামী মানসিকতায়’ আমার সামনে মোড়া ও চেয়ারে বসেন না। আমি যেন আমার বাবার মতোই উনার সামন্ত মনিব।

মওদুদ সাহেব বুধবার এক সেমিনারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট আবার ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে না। জানি না, বিএনপি’র টোটাল পলিসি মেকিং ও ইমপ্লিমেন্টেশনে মওদুদের অবস্হান কোথায়। প্রভাব কতটুকু। ক্ষমতাসীন হলে চারদলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতের পয়েন্ট অব ভিউ আর পারসেপশন কি হবে, সেটা কী মওদুদ সাহেব জানেন? না জামায়াত মওদুদ সাহেবকে ল-ইয়্যার ফি দিয়ে বিশেষজ্ঞের মতামত নেবে? যতদূর জানি, জামায়াতের তরুণ নেতৃত্ব মওদুদদের মতো নেতাদের বাতিল ও রদ্দিমাল ভাবতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর বুদ্ধিমানদের উচিত রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ। বাস্তবতা  প্রমাণ করে মওদুদ সাহেব বুদ্ধিমানদের কাতারে সামিল নন।

ইমেলঃ [email protected]

বাংলাদেশ সময় ১১২২ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।