ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

অনলাইন সাংবাদিকতা নিয়ে কিছু কথা

দিনা পারভিন, বাংলানিউজ পাঠক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১২
অনলাইন সাংবাদিকতা নিয়ে কিছু কথা

বিশ্বায়নের যুগে দ্রুত বদলে যাচ্ছে বিশ্ব। একটি কম্পিউটার আর ইন্টারনেট থাকলে আর কি প্রয়োজন? হাতের মুঠোয় বিশ্ব।

এক ক্লিকেই ঢু মারা যায় সারা দুনিয়ায়।

উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশে প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার না হলেও আমাদের দেশে কম নয়। দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের বেশিরভাগই এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কারণে হাটে মাঠে যেতে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও আমি তরুণদের দেখেছি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে।

যাদের কম্পিউটার নেই তারা মাল্টিমিডিয়া ফোনে ইন্টারনেট ইউজ করছে। ফেসবুক ইউজ করছে। প্রযুক্তির এ প্রসারের কারণে আমার মনে হচ্ছে গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কয়েক বছরের পরে আর থাকবে না।

আমি সাংবাদিকতা করি না। যদিও এ পেশা সম্পর্কে কৌতূহল ছোটবেলা থেকেই। মাহমুদ মেননের লেখার সূত্র ধরেই আমার এ লেখা।

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার লেখাটি আমার পড়া হয়নি। মাহমুদ মেননের লেখা থেকে কিছু অবগত হয়েছি উনি কি লিখেছেন।

আসলে আমিও মনে করি ও বিশ্বাস করি-সংবাদের প্রতিযোগিতার এ যুগে অনলাইন সাংবাদিকদের অফিসে বসে থাকার সুযোগ নেই। দ্রুত সংবাদ প্রকাশ করতে হয়। দৈনিক পত্রিকায় হয়তো তার প্রয়োজন হয় না। আমি মনে করি অনলাইন সাংবাদিকরাই দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকদের কষ্ট কমিয়ে দিয়েছে। আমার মতে বর্তমানে দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকদের মনে হয় আলস্য সাংবাদিক। আমার পাশের ফ্ল্যাটেই এক সাংবাদিক থাকেন, যাকে দেখি সারাদিন ঘুমিয়ে বিকেলে তার পত্রিকা অফিসে যেতে। দুষ্টুমি কারে আমি তাকে একদিন বলি-সাংবাদিকতা করে এতো আরামে থাকেন কি করে? উনি আমাকে বলেন,সন্ধ্যায় নিউজ দিলেই হয়ে যায়। আমি বলি, সারাদিন বাসায় থেকে কোথায় নিউজ পাবেন। উনি বলেন, আসমান থেকে। পরে তিনি আমাকে বলেন, অনলাইন ডেইলিগুলো থেকে তিনি নিউজ পেয়ে যান। সেগুলো পরিবর্তন করে দিয়ে দিলেই হয়ে যায়।

এখানে আমি বুঝতে পারি যারা অনলাইনে সাংবাদিকতা করছেন তাদের এমন ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নেই। দ্রুত সংবাদ পরিবেশনের কারণেই মানুষ এখন অনলাইনের দিকে ঝুকছে।
যেমন- আমার বেলায় আমি বলি, বছর দুয়েক আগেও হকার দরজার ফাঁকে পেপার দিয়ে যেতো। চা খেতে খেতে পত্রিকা পড়তাম। এখন হাতে ধরে পত্রিকা পড়া হয় না। অনলাইনে দেখি। কারণ, আমি এক ক্লিকেই মুহূর্তের মধ্যে সংবাদ পাই। একজন পাঠক হিসেবে আজকের সংবাদের জন্য আমি আগামীকালের পত্রিকার জন্য অপেক্ষা করবো কেন? তবে হ্যাঁ, দৈনিক পত্রিকায় বিভিন্ন কলাম ও বিশ্লেষণ জাতীয় সংবাদ থাকে। মানবিক সংবাদ থাকে। যা অনলাইন ডেইলিতে কম।

বাংলানিউজের রিডার আমি কয়েকমাস ধরে। নিউজ দেখেই বুঝা যায় এখানে দ্রুত আপডেটের জন্য মাঠে থাকতে হয়। ‍অবশ্য সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা যদি বলে থাকেন বাসায় বসে নিউজ করা যায় তবে তা আমার কাছে ভুল মনে হয়। অন্তত নিউজ দেখে। এই যেমন রাজধানীতে একটি দুর্ঘটনা ঘটলে মুহূর্তের ঘটনা মুহূর্তে পাই।

বাংলানিউজের সব কিছুই যে ভালো লাগে তা নয়, যেমন- সব বিভাগ থাকলেও নারীদের কোনো বিভাগ নেই। নারীদের বিভাগ কেন রাখেননি তা হয়তো কর্তৃপক্ষই জানে। একজন পাঠক হিসেবে আমি দাবি জানাই নারী বিভাগ খোলা হোক।

বাংলানিউজে কারো কারো লেখা আমার খুব ভালো লাগে। যেমন -ফজলুল বারীর বিভিন্ন বিষয়ে কলাম। আহসান কবীরের একটি রিপোর্টও চমৎকার লেগেছে। পা না থাকা একজন রিকশাওয়ালাকে নিয়ে একটি লেখা অসাধারণ লেগেছে। সাংবাদিক সাগর-রুনির ওপর কয়েকটি মানবিক রিপোর্টও ভালো লেগেছে। বাংলানিউজে আদিত্য আরাফাতের কয়েকটি রিপোর্টই অসাধারণ লেগেছে। যেমন- নারী দিবসে কিষাণীদের নিয়ে রিপোর্টটি ৮ মার্চে নারী দিবসের সেরা রিপোর্ট। বিভিন্ন পত্রিকায় নারী দিবসের রিপোর্টে গতানুগতিক বিষয় উঠে এসেছে। এ রিপোর্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম সরকারের কাছে নারী কৃষকদের সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। স্পেশাল থ্যাংকস আদিত্য আরাফাত। থ্যাংকস বাংলানিউজ। পরিশেষে মাহমুদ মেননের সাথে আমিও বলতে চাই অনলাইন সাংবাদিকতা অফিস- সাংবাদিকতা নয়। মাঠেই থাকতে হয়। বাংলানিউজের মাধ্যমে অনলাইন সাংবাদিকতা বিকশিত হোক। বাংলানিউজের নিয়মিত পাঠক হিসেবে এটাই প্রত্যাশা।

দিনা পারভিন: উন্নয়ন কর্মী

বাংলাদেশ সময় ১২৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।