ঢাকা: বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন স্থান, সড়ক এখন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের খণ্ড মিছিল আর স্লোগানে মুখরিত। বিশেষ করে গুলিস্তান ও পল্টন এলাকায় কিছুক্ষণ পরপরই আওয়ামী নেতাকর্মীদের খণ্ড মিছিল দেখা যাচ্ছে।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে। এ সময় তারা বিএনপির দলীয় কার্যালয় নয়াপল্টন এলাকাতেও মিছিলের উত্তাপ ছড়ায়। বিশেষ করে কাকরাইল থেকে বিজয়নগর মোড়ে তাদের জোরালো স্লোগান দিতে দেখা যায়। এরপর তারা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে নিজেদের কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে যান।
এসব মিছিলে আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগানের বাইরে বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে একের পর এক স্লোগান দিতে থাকেন দলের নেতাকর্মীরা। হেঁটে, মোটরসাইকেলে বা ভ্যান-রিকশায় এসব মিছিলে নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, যুবক-বৃদ্ধ সব ধরনের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় কেন্দ্র করে রাজধানীর কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড় থেকে কার্যালয়ের দিকে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। পল্টনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয় তৈরি হয়েছে সকাল থেকেই। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত অন্তত চার শতাধিক পুলিশ মোতায়েন আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
এদিকে বিভিন্ন চেকপোস্টগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হচ্ছে না। বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশ শেষ করে ঘরে ফিরবে সেই প্রত্যাশা। শুক্র ও শনিবার সরকারিসহ অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি। যে কারণে দুদিন রাজধানীতে চাপ কম। আর চেকপোস্ট পরিচালনা নিরাপত্তার স্বার্থে, পুলিশের রুটিন ওয়ার্ক।
এর আগে বেলা ১১টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। সমাবেশ ঘিরে গোটা রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তা বিধানে শুধু পুলিশের পক্ষ থেকে ৩৪ হাজার জনবল মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এছাড়া সমাবেশ ঘিরে মাঠে সরব রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আজ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার কর্মী পাহারাদার হিসেবে কাজ করছে। বিকেল পর্যন্ত দুষ্টু লোকদের সভা শেষ না হওয়ার পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেকটা ছুটির আমেজে রয়েছে রাজধানীতে। ঢাকার সড়কে বাস চলছে না বললেই চলে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললেও অন্যান্য দিনের চেয়ে সেগুলোর সংখ্যাও কম।
সকালে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে যারা বাসা থেকে বের হয়েছেন তাদের পড়তে হয়েছে বিপাকে। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে একটি বাসের দেখা মিলছে। অবশ্য রাস্তায় মানুষের সংখ্যাও অন্যান্য দিনের চেয়ে কম।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২২
এইচএমএস/ইএসএস/আরবি