ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের যে কোনো ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলা রাজপথে রাজপথে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এজন্য তারা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথের অবস্থান থাকবেন, আক্রমণ করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে দলীয় নেতারা এ ঘোষণা দেন।
বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে সকাল থেকে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিয়ে এ সমাবেশে মোবাইল ফোনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপি-জামায়াতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমরা ক্ষমতায় আছি। আমরা আক্রমণকারী হব না কিন্তু তারা আক্রমণ করলে রাজপথে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা মাঠে আছি, মাঠে থাকব। আজকে বিএনপি জামায়াতের নেতৃত্বে মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাচাতে হবে। উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রাখতে হবে। দেশের উন্নয়ন অর্জনকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে বাঁচাতে হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, বিএনপি বলেছিল তারা ৩০ তারিখ মিছিলে মিছিলে সয়লাব করে দেবে। কই তাদের মিছিল তো দেখলাম না। রাজপথে রয়েছে আওযামী লীগের নেতাকর্মীরা। আসলে বিএনপি-জামায়াত কাগুজে বাঘ। তারা সন্ত্রাস করে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চায়। এটা আমরা হতে দিতে পারি না। এই ষড়যন্ত্রকারী, আগুন সন্ত্রাসী, মানুষ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে। এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তারা কোনো সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ড, ষড়যন্ত্র করলে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে হবে। আপনারা পাহারায় থাকলে ঢাকা শহরে আগুন সন্ত্রাসীরা আর সন্ত্রাস করতে পারবে না।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি-জামায়াত মানুষের জানমালের যাতে ক্ষতি করতে না পরে, কোনো মতলব যাতে হাসিল করতে না পারে এজন্য আমরা পাহারাদারের ভূমিকা পালন করছি, তারা সফল হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই বাংলাদেশকে পেছনে ফেলা যাবে না।
তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, সেই জাতীয় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা আবার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের এই ভূমিকে যাতে কেউ ক্ষতবিক্ষত করতে না পারে সে জন্য আমরা পাহারায় থাকব। বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে কিছু করতে পারবে না, লাভ হবে না, আওয়ামী লীগ জনগণের দল।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সাপ যেমন কিছুদিন পর পর চামড়া-খোলস বদলায়, বিএনপির জোটও কিছুদিন পরে পরে খোলস বদলায়। কোনো সময় ২০ দল হয়, ১২ দল হয়, এখন বলছে ৩৩ দল। কিন্তু ৩৩ দলের মধ্যে ৩০টাকে খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে। কারণ কয়েকটি হাতে গোনা দল ছাড়া বাকিগুলো আসলে সাইনবোর্ড সর্বস্ব দল। এই বিএনপির আজকের যে গণমিছিল, এতে মানুষ আতঙ্কিত। তাদের এই গণমিছিলের কর্মসূচিতে ঢাকা শহরের মানুষ আতঙ্কিত। সরকারি দল হিসেবে আমাদের দলের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। দেশে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা-স্থিতি কেউ বিনষ্ট করতে না পারে, সেজন্য আমরা মাঠে আছি। কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় এবং তার মিত্ররাও, আমরা জনগণকে নিয়ে প্রতিহত করব। আমরা রাজপথে ছিলাম, আছি, থাকব। তাদেরকে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে তাই বিএনপি আতঙ্কিত আগামী নির্বাচনেও তাদের ভরাডুবি হবে বলে। বিএনপি-জামায়াত ওঁৎ পেতে বসে আছে কখন ছোবল মারবে। তাই আপনারা সতর্ক পাহারায় থাকবেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তাদের প্রতিরোধ করব। তারা যাতে দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পারে এই জন্য আমরা রাজপথে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের এই অবস্থান আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহনগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা মহানর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত, হাজী মোহাম্মদ শাহীন, আব্দুস সাত্তার মাসুদ, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
এসকে/এমএমজেড