ঢাকা: রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভা বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কমপক্ষে ১২-১৪ গুণ বড় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ জাতীয় প্রেসক্লাব নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভা নিয়ে জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল একটা অসাধারণ সভা হয়েছে। পুরো রাজশাহী শহরই জনসভা স্থলে পরিণত হয়েছিল। মাদরাসা মাঠের বাইরে কমপক্ষে আরও ১০-১২ গুণ মানুষ ছিল। বিএনপিও সেখানে সমাবেশ করেছিল।
বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কতগুণ বড় সেটা অনুমান করা কঠিন, তবে বিএনপির সমাবেশের চেয়ে কমপক্ষে ১২-১৪ গুণ বড় তো বটেই। আকাশ থেকে প্রধানমন্ত্রীও সমাবেশটি দেখেছেন। এটি অভাবনীয়, আমাদের ধারনার বাইরে সমাবেশটি হয়েছে। পুরো শহর জুড়ে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা, সমাবেশে যাওয়ার জন্য আগ্রহ আমি দেখেছি- সেটি অভাবনীয়। এতেই প্রমাণিত হয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ও তার দলের প্রতি জনগণের সমর্থন। গতকালের জনসভা সেটিই প্রমাণ করে।
গতকাল (রোববার) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মানুষকে ভোটের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য, ভাতের অধিকারের জন্য, ন্যায় বিচারের জন্য, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম ও লড়াই করতে হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে আমি সবিনয়ে অনুরোধ জানাব, আয়নার নিজের চেহারাটা দেখার জন্য। নিজের দলের চেহারারাটও দেখার জন্য। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে কারা বন্ধ করেছিল, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। সেখানে ন্যায় বিচার নয়, বিচারটাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। সেই বিচারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আর ভোটের অধিকার? জিয়াউর রহমানের সময়, সাত্তার সাহেবের সময়, খালেদা জিয়ার সময়, এরশাদ সাহেবের সময় শ্লোগান ছিল ১০টা হোন্ডা, ২০টি গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা। এখন মানুষ সেই শ্লোগান দেন না। সেই সংস্কৃতি তারাই চালু করেছেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচন বিএনপিই করেছিল। তারা এক মাসের বেশি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। আয়নার নিজের চেহারাটা দেখলেই উনি উত্তরটা পেয়ে যাবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এদেশে মানবাধিকারের লঙ্ঘন শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান যুক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর মরদেহের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছিলেন। সেনা কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন। যারা ক্ষমতা দখল করলো, তাদের প্রচণ্ড বিশ্বস্ত না হলে জিয়াউর রহমানকে কী সেনা প্রধান করা হতো? আমি বিস্তারিত বলতে চাই না। আজকে সেগুলো প্রমাণিত, দিবালোকের মতো স্পষ্ট সত্য। জিয়াউর রহমান নিজের ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য হাজার হাজার সেনাবাহিনীর অফিসারকে বিনা বিচারে ফাঁসি দিয়েছেন। অনেকের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর রায় হয়েছে- এমন ঘটনাও আছে।
তিনি আরও বলেন, মায়ের কান্না নামের একটি সংগঠন, তাদের বোবা কান্না যে আজকে আকাশে-বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, সেটি এখন বিদেশি কূটনৈতিকদের কানেও গেছে, বিদেশেও গেছে। এগুলো সব জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের শিকার।
তারা (বিএনপি) যে ন্যায়নীতির কথা বলেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৩-১৪-১৫ সালে যে মানুষের ওপরে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করেছেন। সেই পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের হুকুমদাতা বিএনপি নেতারা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সেই হুকুমদাতাদের মধ্যে একজন। এভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যার পর এখনও যে তারা ঘুরে বেড়ান এটাই তো জনগণের কাছে একটা আশ্চর্যজনক বিষয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩
জিসিজি/এসআইএ