ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

জনগণ ও সরকার আজ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
জনগণ ও সরকার আজ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে: ফখরুল শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়েজিত আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: আজকে জনগণ ও সরকার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্দোলন, গণতন্ত্রের জন্য যখন মানুষ মরছে, যখন আন্দোলনের জন্য মানুষ রাস্তায় নেমে গেছে, যখন দেশের মানুষ প্রায় ঐক্যবদ্ধ, সেই সময় এই সরকার চেষ্টা করছে কী করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে পুলিশ, র‌্যাব, আওয়ামী গুন্ডা-সন্ত্রাসীদের দিয়ে বেআইনিভাবে সেই আন্দোলনকে নস্যাৎ ও দমন করা যায়।

রোববার (২১ মার্চ) জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম শফিউল আলম প্রধানের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়েজিত ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে শফিউল আলম প্রধানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আজকে আমরা এমন একটি সময়ে এসে উপস্থিত হয়েছি, যে সময়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ সরকার কাউকে দিচ্ছে না। কারণ এই সরকার ইতোমধ্যে নিজের মাথাটি বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা একটি ক্রান্তিকালে এসে পৌঁছেছি। এই সময়ে নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হবে, নাকি দীর্ঘকালের জন্য একটি ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত হবে। একদিকে বাংলাদেশের মানুষ, আরেক দিকে একটি শাসক গোষ্ঠী। যারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে অন্যায়, বেআইনিভাবে ব্যবহার করে জনগণকে অত্যাচার নির্যাতন করে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা নানা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়। মিডিয়া আজ কথা বলতে পারে না। এটা দিয়ে শেষ রক্ষা হবে না। সবাই মিলে যদি প্রতিবাদ না করে, তাহলে দেশ রক্ষা হবে না। আমাদের অধিকার নিশ্চিত হবে না।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, কয়দিন আগে আওয়ামী লীগের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন—পরিকল্পিত নির্বাচন চাই না। তার মানে আওয়ামী লীগ পরিকল্পিত নির্বাচন করে। আজকে আবার পত্রিকায় বড় করে এসেছে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তার রিপোর্টে বলেছে—বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন অব ডিফল্ড লোনস। খেলাপি ঋণের মধ্যে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে। আগে শ্রীলঙ্কা চ্যাম্পিয়ন ছিল।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, এই সরকার আর এক মুহূর্ত দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে, দেশের অবস্থা খারাপের দিকে যাবে। তারা জুডিশিয়ারি ও ইলেকশন কমিশন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে তারা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে, যাতে জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি না হয়। সেজন্য ব্যাঙের ছাতার মতো বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ তৈরি করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।

ভালো মানুষেরা কেউ আওয়ামী লীগে থাকতে পারেন না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী দলে থাকতে পারেননি। তাকে মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগে যারা ছিলেন, তারা কেউ থাকতে পারেননি। তারা আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে, অন্যান্য দল তৈরি করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে যারা ছাত্রলীগ করতেন, তারা বাধ্য হয়েছেন বের হয়ে আসতে। কারণ আওয়ামী লীগে যারা ছিলেন, তারা ছিলেন সম্পূর্ণ দুর্নীতিপরায়ণ, গণবিরোধী, জনগণের বিরুদ্ধে তারা অবস্থা নিচ্ছিল।

শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, শফিউল আলম প্রধান কোনো সাধারণ নেতা ছিলেন না। যারা তার সংস্পর্শে এসেছেন, তারা জানেন, শফিউল আলম প্রধান একজন ত্যাগী, দেশপ্রেমিক, বিপ্লবী নেতা ছিলেন। তিনি পরাধীনতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছেন। নীতির প্রশ্নে তিনি কখনো আপস করেননি। তিনি নিঃসন্দেহে বর্তমান প্রজন্মের কাছে অনুকরণীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২৩
এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।