ঢাকা: বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র জবাই (হত্যা) করে। তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গাবতলী এস এ খালেক প্রোপার্টি চত্বরের সামনে ‘একদফা’ দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জনগণকে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যারা আমাদের আন্দোলন সংগ্রামে আছেন আপনাদের ধন্যবাদ। যারা এখনো রাস্তায় নামছেন না, তাদের প্রতি আমার একটি অনুরোধ। ১৯৭১ সালে যাদের যুদ্ধে যাওয়ার বয়স ছিল আমরা যুদ্ধে গিয়েছিলাম। আজকে আমরা গৌরব করে বলি, আমি একজন মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু যারা সেদিন যায় নাই, তারা এখন আক্ষেপ করেন। এই সরকারের পতন অবশ্যই হবে। বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। এই সরকারের পতন হবেই হবে। যারা আন্দোলনে আছেন তারা গৌরব করে বলবেন, আমরা স্বৈরাচারের পতন করেছি। যারা এখনো আন্দোলনে আসেন নাই তারা দয়া করে আসেন। যারা মুক্তিযুদ্ধে যায়নি, তাদের মতো আক্ষেপ করবেন। আহা এই স্বৈরাচারের পতনে থাকতে পারলাম না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, আজকে শুধু সংসদ নির্বাচন নয়, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও কারচুপি হয়। এমনকি ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও কারচুপির সংবাদ পত্রিকায় ছাপা হয়। তারপরও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ন্যায্য হয় না। শত শত আসনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ন্যায্য হয়। অবশ্যই হয়। তারা (আওয়ামী লীগ) মানতে রাজি হয় না, এ কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি হবে। মানুষের ওপর তারা অত্যাচার নির্যাতন করেছে। আমাদের দলের হাজারের ও বেশি নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলা হয়েছে। কয়েকশ’ নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তারা দেশটাকে জ্বালিয়ে দিয়েছে। দেশের সকল জাতীয়তাবাদী দল দাবি জানিয়েছে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার যোগ্য এমনিতেই। বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন বলে, একজন নারী, তিনি অনেক বয়স্ক ও বিশিষ্ট নাগরিক, তার চিকিৎসা জন্য জামিন পাওয়া বাধা হওয়ার কারণ নাই। তাকে বিনা অপরাধে সাজা দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশীভূত হয়ে। প্রতিহিংসার কারণে তার চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তারা বলে বাংলাদেশে ভালো চিকিৎসা হয়। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কেন কানের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যায়। তাদের দলের সাধারণ সম্পাদক কয়দিন পর পর চেকআপের জন্য সিঙ্গাপুরে যান। আসল কথা হল আমাদের দেশে সব চিকিৎসা সম্ভব নয়। দেশনেত্রীর (খালেদা জিয়ার) চিকিৎসকরা বলেছেন, তার স্বাস্থ্যে বিভিন্ন জটিলতা আছে। তার চিকিৎসা দেশে করা সম্ভব না। তার চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয় জানার পরও দেশের বাইরে যেতে দিচ্ছে না। তাহলে আপনি চানটা কি? আপনি কী চান তার মৃত্যু হোক? বাংলাদেশের মানুষ তা চায় না। দেশের মানুষ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তাদের মাঝে আবার ফিরে পেতে চায়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডাক্তার ফরহাদ হালিম ডোনার। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি কমিটির সদস্য সেলিনা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান খান, কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি বিএনপি নাজিমউদ্দীন আলম, কেন্দ্রীয় কমিটি বিএনপি প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় কমিটি বিএনপিসহ সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, শ্রমিকদল কেন্দ্রীয় কমিটি ভারপ্রাপ্ত সাধারণ মোস্তাফিজুর রহমান, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটি ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, সেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটি সিনিয়র সহ সভাপতি ইয়াসিন আলী, সেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহামুদ জুয়েল, মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণত সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটি সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩
এমএমআই/এসএএইচ