পাবনা (ঈশ্বরদী): বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ হত্যায় উৎসাহী একটি রাজনৈতিক দল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ কসাইয়ের ভূমিকা পালন করছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পাবনার ঈশ্বরদী শহরের দরিনারিচা সূর্যের ধানেট খোলা মাঠে কারাগারে আটক ঈশ্বরদীর বিএনপির ৪৭ নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলিবর্ষণ ও হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি বিএনপির ওই ৪৭ নেতাকর্মী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গতকালও যুবদলের ঠাকুরগাঁও জেলার সদস্য সচিব আকরামকে হত্যা করেছে। এখনো তাদের ভয় বিএনপি। এখনো তাদের ভয়,যুবদল-ছাত্রদলকে। তাই তারা হত্যায় উৎসাহী হয়ে উঠেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ঈশ্বরদীতে ৪৭ নেতাকর্মীদের অনেকেই ফাঁসির আসামি, অনেকের যাবজ্জীবন জেল। এটা তো মিথ্যা, এটা তো জালিয়াতি। সেদিন শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ওইদিন ট্রেনে ছিলেন। তার একটা বই সারা বাংলাদেশের মানুষ পড়েছে। ‘আমার ফাঁসি চাই’ নাম বইটার। সেটায় লেখক মতিউর রহমান রিন্টু বলেছেন, শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তোরা গুলি করবি আমার কম্পার্টমেন্টের দিকে’ তারা তাই করেছে। তারপর শেখ হাসিনা ট্রেন থেকে নেমে হরতাল দিয়েছেন। সেটাকে টেনে নিয়ে জাকারিয়া পিন্টু, বাবলুসহ ৪৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এটা তো জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার একটা প্রক্রিয়া।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতু দেখায়, ফ্লাইওভার দেখায়,এটা লুটপাটের জন্য। বাংলাদেশে অর্ধেক জেলায় আইসিইউ নাই! ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রতিদিন আড়াই হাজার রোগী যায়, তার জন্য মাত্র আইসিইউ হচ্ছে ২০টি। শেখ হাসিনা হাসপাতাল করেননি। জনগণের জীবনকে বাঁচানোর জন্য কিছু করেননি। তিনি জনগণকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার কাজ করছেন, লুটের কাজ করছেন, দুর্নীতির কাজ করছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী ও পাবনা জেলা বিএনপির সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য কে.এম আনোয়ারুল ইসলাম, সেলিম রেজা হাবিব, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মান্নান মাস্টার,
আনিসুল হক বাবু, নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার প্রমুখ।
ইফতার মাহফিলে শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ৪৭ নেতাকর্মীদের মধ্যে ৩৩ নেতাকর্মীদের পরিবারের মাঝে অটোরিকশা বিতরণ করা হয়। এবং তাদের সুস্থতা ও মঙ্গল কামনায় দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে ট্রেনে ঈশ্বরদী থেকে সৈয়দপুর দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলের নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের মুহূর্তে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। সেই মামলায় বিএনপির ৯ নেতাকর্মীর ফাঁসির আদেশ, ২৫ জনের যাবজ্জীবন, ১৩ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। বর্তমানে সবাই জেল হাজতে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৪
এসএএইচ