ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই: সাকি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই: সাকি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নে আয়োজিত গণসংলাপে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি

নির্বাচনের জন্য সংস্কার লাগবে আবার সংস্কার শেষ করার জন্যও নির্বাচন লাগবে। সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়ন গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় গণসংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, অনেকে এখন বলছেন সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচন নিজেই একটা সংস্কার। আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই। নির্বাচনের জন্য সংস্কার লাগবে আবার সংস্কার শেষ করার জন্যও নির্বাচন লাগবে। দুইটার মধ্যে কোনো বিরোধ নাই। যারা সংস্কার বোঝেন না তারাই একথা বলেন। জনগণের সমর্থন ছাড়া সংস্কার করা যায় না। নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য যে আইনি সংস্কার দরকার, সেটা নির্বাচনের আগে করতে হবে আর সংবিধান সংস্কার নির্বাচনের পরে হবে। এই বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি করে যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য কেউ যদি আমাদের রাজনৈতিক ঐকমত্য নষ্ট করতে চায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ খারাপ হবে, তারা বাংলাদেশের ভালো চায় না। মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে কষ্টে আছে, আহতদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত সরকার এখনো করতে পারে নাই সেদিকেও সরকারকে নজর দিতে হবে।

গণসংলাপে জোনায়েদ সাকি বলেন, স্থাপনা ভাঙচুর করলেই ফ্যাসিবাদ চলে যাবে না। ফ্যাসিবাদ রন্ধ্রে রন্ধ্রে আছে, চিন্তায় আছে, ব্যবস্থার মধ্যে আছে সেগুলা বদলাতে হবে। সেগুলো বদলিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করা সম্ভব। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে তোলা।

গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া বলেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে শ্রমিক-কৃষকের নায্য মজুরি ও ফসলের নায্য দাম নিশ্চিত করতে হবে। দেশের অধিকাংশ মানুষের স্বার্থ নিশ্চিত করে এমন বন্দোবস্তে আমাদের পৌঁছাতে হবে।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে জনগণের যে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, তা বাস্তবায়নে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল, সেটা রক্ষা করা দরকার ছিল। কিন্তু নিজেদের গোষ্ঠীস্বার্থে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বরা সেই ঐক্যকে ভেঙে দিয়ে অভ্যুত্থানকে কুক্ষিগত করতে গিয়ে অভ্যুত্থান থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। গোষ্ঠীস্বার্থে অভ্যুত্থানকে ব্যবহার করতে যদি অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয় জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।

সরকার মো. মঈনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও রাকিব মাস্টারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। গণসংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, বাঞ্চারামপুর উপজেলা গণসংহতি আন্দোলনের সংগঠক শামীম শিবলীসহ স্থানীয় নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।