ঢাকা: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, তার সংগঠন বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি করে না। কিন্তু এই সংগঠনকে জিজ্ঞেস না করে কোনো রাজনীতি বাংলাদেশে হবে না।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় মিলনায়তনে ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সম্মানে’ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
আল্লামা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেন, জেলাগুলোর কমিটি গঠন হওয়ার পর সারাদেশের সব কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের নিয়ে হেফাজতে ইসলাম একটি জাতীয় কনভেনশনের ঘোষণা দেবে। এর মধ্যদিয়ে সংগঠন আগামী বাংলাদেশের মুখ (ভবিষ্যৎ) দেখার ঘোষণা দেবে। আমার আখেরি কথা, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে রাজনীতি করে না। তবে হেফাজতে ইসলামকে জিজ্ঞাসা না করে বাংলাদেশে কোনো রাজনীতিও হবে না।
তিনি বলেন, শাপলা চত্বরের গণহত্যায় হেফাজত যে মামলা করেছিল সেটিকে অন্তর্বর্তী সরকার আমলে নিয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। আজকে এই মামলা আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুনি হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। শাপলা চত্বরে হেফাজতের ভাইদের রক্ত ঝরানোর দায়ে খুনি হাসিনাকে শাপলা চত্বরে ফাঁসির কাস্টে ঝুলন্ত হিসেবে দেখতে চাই। এই বিচারও বাংলাদেশে কার্যকর হবে ইন শা আল্লাহ।
মামুনুল হক আরও বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাস ও অবদান। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্নে হেফাজতের আবির্ভাব ঘটে। যখন শাহবাগে বেলেল্লাপনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিল। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে দুটি সরকার ব্যবস্থা ছিল। একটি হাসিনা সরকার। অন্যটি ইমরান এইচ সরকার। তখন ইমরান বিদেশি প্রভুদের ইশারায় শাহবাগ থেকে যা বলত, তাই ছিল সরকারের অলিখিত নির্দেশ। সচিবালয় থেকে শুরু করে সকল কিছুই তাদের ইশারায় চলত।
তিনি বলেন, যখন বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদ পুরো দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছিল ইমরান এইচ সরকাররা তখন আল্লামা আহমেদ শফির ডাকে ধূমকেতুর বেগে হাজির হয়েছিল হেফাজতে ইসলাম। সেদিন আল্লামা শফির নির্দেশে যদি হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বরে না আসত তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সেদিন বিপন্ন হতো। এজন্য হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মানুষের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
মামুনুল হক আরও বলেন, ৫মে হেফাজতের ইতিহাস রক্তের। হেফাজতের নেতাকর্মীরা সেদিন রক্ত দিয়ে বাংলাদেশকে পরিষ্কার করেছে শাহবাগীদের ষড়যন্ত্র থেকে। সেদিন ফ্যাসিবাদ সরকার হেফাজতকে দমন করার জন্য সমস্ত রাষ্ট্র যন্ত্রকে ব্যবহার করেছিল। বহু হেফাজত কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৩ সালের ৫মে খুনি হাসিনা যখন বর্বরতম হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তখন আমি নিজেও জেলে ছিলাম। সেদিন হাসিনা দুনিয়ার সব থেকে বর্বরতম হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। পাশাপাশি সব থেকে নির্লজ্জের মতো এটিকে ধামাচাপা দিতেও চেয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস জালিমের বিচার আল্লাহ এ দুনিয়াতেই করেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর সভাপতি মুহাম্মদ জুনায়েদ আল হাবিব, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৫
ইএসএস/এমজে