ঢাকা: কয়েকজন সচিব এবং উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সঠিক রাস্তায় চলতে দেবেন না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে শফিউর রহমান নামে একজনের নিয়োগ হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র, সংস্কার ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘আপনার (অধ্যাপক ইউনূস) সারা জীবনের অর্জন কিন্তু এরা শেষ করে দেবে। আপনি দয়া করে এদের কাছ থেকে সাবধানে থাকবেন। আমরা আপনার সম্মান রক্ষা করে দেশটাকে সুন্দর করতে চাই। আপনি সফল হলে দেশটা ভালো হবে। আপনার সফলতা আমরা চাই। আপনার সফলতার ওপর নির্ভর করছে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। ’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘খুব দ্রুত নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু, আমি আশা করছি নির্বাচনটা হবে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী এই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন দেবে। ড. ইউনূস বলেছেন, নির্বাচন ডিসেম্বর না হলেও জুনের মধ্যে হবে। এই কথাটাই আমাদের একটা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘একবার বললেন ডিসেম্বর, এরপরে আবার বললেন জুনের কথা। ড. ইউনূস ভোট ডিসেম্বরে বলার পরপরই, অন্য আরেকজন বলে দিল ভোট জুনে হবে। পরে আপনি (ড. ইউনূস) তাকে ইন্ট্রোডিউস করলেন। এই বিষয়টাকে সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট যুক্তি আছে। এই নির্বাচনটা যেন না হয়। আমার মনে হচ্ছে, সম্ভবত নির্বাচন খুব তাড়াতাড়ি ওনারা করবেন না। নির্বাচন দ্রুত দেওয়ার কোনো লক্ষণ আমি দেখি না। ’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘কয়েকটা দল বলা শুরু করেছে, এইটা না হলে নির্বাচন হবে না, ওইটা না হলে নির্বাচন হবে না। যদি এগুলো বলতে থাকে তাহলে নির্বাচন কেমনে হবে! কেউ কেউ আবার বলেই ফেলেছেন যে, আমরা নির্বাচনে যাব না। কয়েকদিন আগে হলে আপনারা নির্বাচনে গেলেই কি আর না গেলেই কি! আপনাদের বাংলাদেশে কে চিনতো! এখন ধমক দেন আপনারা নির্বাচনে যাবেন না। এগুলো করে কোনো লাভ নেই। নির্বাচনটা যথাসময়ে হবে, এটা আমরা আশা করতে পারি। খুব দ্রুত নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু, আমি আশা করছি নির্বাচনটা হবে। ’
তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের যে নির্বাচন ব্যবস্থা, এটা কিন্তু ধসে পড়া। এই নির্বাচন ব্যবস্থাকে ড. ইউনূস ঠিক করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু, নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা যাবে না। যদিও এখন কিন্তু নির্বাচন নিয়ে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হচ্ছে। ’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাক্টিভিস্টদের উদ্দেশ্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এদের কাজ হলো দেশের মধ্যে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে রাখা। এদের থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। জাতির বিবেক এখনো অন্ধ হয়ে যায়নি। দুই-একজন লোকের কথায় সব শেষ হয়ে যায়নি। শেষ হয়ে যাবে না। ’
তিনি বলেন, ‘আমার সম্পর্কে বেশ কিছু কথা ব্লগাররা লিখতেছে। তাদের আজেবাজে লেখা দেখে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়। এরপর দেখলাম, শুধু আমি না, তারা আমাদের ইশরাক, মির্জা ফখরুল, আমীর খসরু, সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং শেষ পর্যন্ত তারেক রহমানকে নিয়েও বলছে। তারা কিন্তু, অন্য কোনো জুনিয়র নেতাদের নিয়ে কিছু বলছে না। শুধু বিএনপির মধ্যে যাদের মানুষ পছন্দ করে, এদের বিরুদ্ধে লিখতেছে কয়েকটা লোক। আমি মনে করি এরা দেশ ও জাতির শত্রু। ’
গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
ইএসএস/এমজেএফ