ঢাকা, শুক্রবার, ৮ কার্তিক ১৪৩২, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

রাজনীতি

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নতুন নাম ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:১৯, অক্টোবর ২৩, ২০২৫
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নতুন নাম ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ বিষয়ক জাতীয় সম্মেলন। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) নতুন নামে যাত্রা শুরু করলো ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ হিসেবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর মিন্টু রোডের আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ বিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে (২০২৫) এ নতুন ছাত্র সংগঠনের নাম ঘোষণা করা হয়।

নতুন সংগঠনের ঘোষণা দেন জুলাই শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আক্তার সেবন্তি। তবে সম্মেলনে জাতীয় ছাত্রশক্তির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।

এর আগে অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে হবে। ক্যাম্পাসে ‘গণরুম’ ও ‘গেস্টরুম’ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন রাজনৈতিক দলের তাবেদারি না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, এনসিপি যদি ভুল পথে যায়, ছাত্ররাই সঠিক পথ দেখাবে। সরকারকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করে নতুন বাংলাদেশের জন্য শহীদদের ঋণ শোধ করতে হবে।

জুলাই সনদ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আখতার হোসেন বলেন, বড় একটি দলের প্রভাবে সরকার আইনি ভিত্তি ছাড়াই জুলাই সনদ ঘোষণা করেছে। আইনি ভিত্তি ও পথরেখা ছাড়া এনসিপি এতে একমত নয়। সনদের বাস্তবায়ন কোনো ভাগবাটোয়ারার বিষয় নয়; একবার স্বাক্ষর হয়ে গেলে ৯০’র মতো প্রতারণা হতে পারে।

এ সময় তিনি আওয়ামী লীগকে অভিযুক্ত করে বলেন, আওয়ামী লীগ বিদেশে বসে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। তারা সংগঠিত প্রতারক চক্র; তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ আর নেই।

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সংস্কার ও মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে রাজনৈতিক দলগুলো এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের আশা পূরণে ছাত্রদেরই এগিয়ে আসতে হবে। নতুন প্রজন্মই রাজনীতিতে পরিবর্তনের সূচনা করবে।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, যারা লোভ সামলাতে পারে না, তাদের এনসিপির কোনো সংগঠনে প্রয়োজন নেই। গণতন্ত্রের যাত্রা দীর্ঘ—এই পথচলায় ছাত্ররাই মানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের শক্তি।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, জুলাই-আগস্টের চেতনা যেন ম্লান হয়ে না যায়, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। ছাত্রদল সবসময় জুলাইযোদ্ধাদের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি ছাত্র সংগঠন বর্তমানে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে, আওয়ামী লীগের ভোট নিয়ে রাজনীতি করছে। গুপ্ত ও মুনাফিক ছাত্রসংগঠনের মতো আচরণ না করার আহ্বান জানাই।

রাকিব আরও বলেন, গেস্টরুম ও গণরুম কেন্দ্রিক রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। বাগছাস, এখনকার জাতীয় ছাত্রশক্তি ও এনসিপি একই ধারার নীতিতে রাজনীতি করবে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার তুষার বলেন, ছাত্ররা দেশের ঐতিহাসিক চাওয়া-পাওয়া পূর্ণ করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। গণঅভ্যুত্থান হোক বা একদফা আন্দোলন—প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ছাত্র সমাজই নেতৃত্ব দিয়েছে। একদফা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এনসিপির রাজনীতি শুরু হয়েছে; এটি ছিল বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত।

এমএমআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।