ঢাকা: আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে নতুন ভোটাররা প্রার্থী হতে পারবেন না। এক্ষেত্রে ২০ নভেম্বরের পরে যারা ভোটার হচ্ছেন, তাদের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আইন অনুযায়ী, এ নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কোনো ধরনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হওয়া যাবে না। যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি নন কিন্তু নতুন ভোটার, তারা প্রার্থী হতে পারবেন না।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসির সহকারী সচিব রওশন আরা স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে পাঠানো ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ২০ নভেম্বরের পর যারা নতুন ভোটার হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন, তারা ২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
চিঠিটির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সব মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব অথবা সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পুলিশ হেড কোয়াটারসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরে পাঠানো হয়েছে।
জেলা পরিষদ নির্বাচন আইন অনুযায়ী, একটি জেলার অন্তর্ভুক্ত সব স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই হবেন জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার। অর্থাৎ সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়র ও কাউন্সিলররা বা সদস্যরা ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও পাঁচজন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত করবেন। তবে তারা প্রার্থী হতে পারবেন না। এ নির্বাচনে প্রার্থীর নিজেরও ভোট প্রয়োগের সুযোগ নেই।
গত ২০ নভেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়, যাচাই-বাছাই ৩-৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ৫-৬ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১১ ডিসেম্বর ও প্রতীক বরাদ্দ ১২ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ ২৮ ডিসেম্বর।
পার্বত্য তিন জেলা ছাড়া সব জেলাতেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জেলা প্রশাসকরা।
২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নতুন করে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। এরপর জোট সরকারের আমলে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করছে।
দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি জেলায় ১৫টি ওয়ার্ডে ভাগ করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে একটি করে ভোটকেন্দ্র। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। জেলা পরিষদের ভোটার রয়েছেন প্রায় ৬৭ হাজারের মতো। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় ৫৯ হাজার, উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার, পৌরসভায় সাড়ে পাঁচ হাজার ও সিটি করপোরেশনের প্রায় ছয়শ’ ভোটার রয়েছেন।
নির্বাচন উপলক্ষে সব জেলায় আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোটার স্থানান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে সংস্থাটির এ আদেশও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, নতুন ভোটারদের জেলা পরিষদ নির্বাচনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ না থাকলেও নতুনদের ভোটার করে নিতে একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। এক্ষেত্রে ১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভোটার করে নেবে ইসি। এজন্য ভোটার হতে ইচ্ছুককে সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।
এ সময় স্থানান্তরের আবেদনও করা যাবে। তবে স্থানান্তরের আবেদন যে ভোটার এলাকায় স্থানান্তরে ইচ্ছুক, সে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছেই আবেদন করতে হবে।
এ বিষয়ে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান বাংলানিউজকে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনাগুলো মাঠপর্যায়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে সব প্রতিপালনে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।
** জেলা পরিষদ নির্বাচন: কোন জেলায় কে আ’লীগ প্রার্থী
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৬
ইইউডি/এএটি/টিআই