শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের হল রুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আব্দুল হাই সিকদারের লেখা ‘জ্যোতির্ময় জিয়া এবং কালো মেঘের দল’ বই’র চতুর্থ সংস্করণ’র মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে দূরে থাকায় বিএনপির সমালোচনা করে দলটির সুহৃদ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সব দায়-দায়িত্ব তাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপর অর্পণ করে তারা (বিএনপি নেতারা) খুব ভুল করছেন। উনাকে (খালেদা) ছাড়া বিএনপি চলবে না- এটা যেমন সত্য, উনাকে (খালেদা) রাস্তায় নামতে হবে সেটাও তেমনি সত্য।
বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দিয়ে সরকার সব চেয়ে বড় অন্যায় করেছে উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, বিরোধী দলকে সরকার একটু বেকায়দায় ফেলতে চাইবেই, তাই বলে ওটাকে ওজুহাত করে রিজভী সাহেব আর প্রেস কনফারেন্স ও স্টেটমেন্ট না দিয়ে কমিটিতে থাকা ৬শ’ লোক প্রতি সপ্তাহে একখানে বসেন না, মৌন সমাবেশ করেন না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার উচিত হবে শিমুল ছাড়া আরেকজন ব্যক্তিগত সহকারী নেওয়া। তিনি হবেন নারী। উনি প্রতিদিন সকাল ৯টায় খালেদা জিয়ার বাসায় যাবেন। ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত থাকবেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে ব্রেকফাস্ট করবেন। দরজায় দাঁড়িয়ে কর্মীদের সঙ্গে খালেদা জিয়াকে কথা বলিয়ে দেবেন।
জাফরুল্লাহ বলেন, বিএনপির প্রায় ১০ হাজার নেতা-কর্মী জেলে আছেন। নেতাদের উচিত হবে প্রতিদিন এসব কর্মীর পরিবারকে ফোন দেওয়া, খোঁজ-খবর নেওয়া। দেখবেন দেশে কেমন জাগরণ সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রাণ হলো কর্মীরা। খালেদা জিয়া যেমন বিএনপির জন্য অপরিহার্য, তেমনি কর্মী ছাড়াও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় যেতে পারবেন না। তাছাড়া হাসিনার জায়গায় আপনারা এসে আমাদের কী দেবেন, কী পরিবর্তন হবে?- তাও আমরা জানতে চাই।
সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার পরামর্শ দিয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন জনের সঙ্গে জিয়াউর রহমান আলাপ করতে, জানতে চাইতেন, বুঝতে চাইতেন। এখন বিএনপির উচিত হবে যতগুলো বিরোধী দল আছে সবার সঙ্গে বসা, সম্মিলিত যুক্তফ্রন্টের কথা চিন্তা করা। না হলে বহুদিন বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে হবে, মূল আসনে যেতে পারবেন না।
সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, জিয়াকে ছোট করার জন্য অনেকে তাকে শেখ মুজিবের সঙ্গে তুলনা করেন। এতে জিয়া ছোট হন না বরং শেখ মুজিব খাটো হন। জিয়া এবং শেখ মুজিব আলাদা মযার্দা ও আলাদা উচ্চতার মানুষ।
অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, চীন থেকে সাবমেরিন কেনার পর ভারত চোখ রাঙ্গাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য না হলে দেশ সার্বভৌমত্বের সংকটে পড়ে যাবে।
ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বাংলাদেশ’র সভাপতি প্রোকৌশলী আশরাফুদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, মোড়ক উন্মোচন হওয়া বইয়ের লেখক কবি আব্দুল হাই সিকদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বাংলাদেশ’র মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এজেড/এসএইচ