ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপিকে ধ্বংস করার শক্তি কারো নেই: আব্বাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২১
বিএনপিকে ধ্বংস করার শক্তি কারো নেই: আব্বাস

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, যারা ভাবেন জিয়াউর রহমান কিংবা খালেদা জিয়া না থাকলে বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাবে, তাদের এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। বিএনপি একটি গণমানুষের দল।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের গড়া একটি দল, খালেদা জিয়ার লালন করা একটি দল, এই দলকে দেশি বা বিদেশি কোনো শক্তিরই ধ্বংস করার ক্ষমতা নাই।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জাতির প্রয়োজনে সবসময় হাজির হয়েছেন। নিজের মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে ’৭১ সালে তিনি বলেছিলেন ‘উই রিভল্ট’। তখন কিন্তু আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে দেশে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিএনপি প্রতিষ্ঠার পেছনেও জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেমের সরাসরি একটা ইঙ্গিত আছে। তিনি দেশকে ভালোবাসেন বলেই সবাইকে নিয়ে একটি দল গঠন করেছিলেন। এটা নিয়ে তার সঙ্গে আমার তখন ছোটখাটো তর্ক হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, এদের নিয়ে দল করা যাবে না। তিনি বললেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি জাতিকে বিভক্ত রেখে কখনও দেশের উন্নয়ন করা যায় না। সুতরাং সবাইকে নিয়েই করতে হবে। কথাটা আমার ভালো লাগলো।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানে জাতির প্রয়োজনেই এসেছেন, নিজের প্রয়োজনে নয়। আজকে আমরা দেখি ওই পদে যারা অবস্থান করেন তাদের সকলের আত্মীয়-স্বজন আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। কিন্তু জিয়াউর রহমান সাহেবের আত্মীয় কাউকে দেখিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। তিনি নিজের জন্য দল করেননি, কিংবা স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। প্রত্যেকটাই করেছেন দেশের মানুষের জন্য।

জিয়াউর রহমান কেন জাসাস প্রতিষ্ঠা করলেন সেই ব্যাখ্যা দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, তখন সাংস্কৃতিক জগতটা প্রায় ধ্বংসের মুখোমুখি। ওই সময় দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে টিকিয়ে রাখতে, বাঁচিয়ে রাখতে তিনি জাসাস প্রতিষ্ঠা করলেন। যুবসমাজের জন্য জাসাস, শ্রমিকদের জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়। কী করেননি জিয়াউর রহমান? আমরা তার দল করি, এটা গর্ব নিয়ে বলতে পারি।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা বিএনপির কর্মী হিসেবে গর্ববোধ করি। যখন আমাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কথা বলি তখন কিন্তু বুক শক্ত রেখে মুখ খুলে বলতে পারি যে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। জাতিকে একটা নতুন দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আজকে যদি আওয়ামী লীগ তাদের নেতা সম্পর্কে কথা বলতে যায়, এক গাদা মিথ্যা কথা বলে তাদের নেতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। তারপরও নেতা প্রতিষ্ঠা হয় না। ইতিহাস যা রচনা করে গেছেন, সেখান থেকে স্থানান্তর করার অবকাশ নেই। এখন তারা ইতিহাস রচনা করছেন।

জাসাস নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা জানেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তাকে মুক্তি দিচ্ছে না। এই মুক্তিটা আমাদের আদায় করে নিতে হবে। দাবি করা যাবে না। আমাদের নেত্রীকে চিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠাতেই হবে। এখানে জাসাসের একটা ভূমিকা থাকার দরকার আছে। সবাই জানে বেশ কিছু সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গোপনে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। তারা বাতাস খেয়ে বেড়াচ্ছে। আমার নেত্রী নির্দোষ, বিনা অপরাধে তাকে কারান্তরীণ করা হয়েছে। শুধু প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব নিয়ে তারা আটকে রেখেছে। তাদের ধারণা নেত্রীকে আটকে রাখলে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে। যেমনি তারা এক সময় মনে করেছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে মেরে ফেললেই বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাবে। আসলে তো তা হয়নি।

জাসাসের আহবায়ক চিত্রনায়ক হেলাল খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক চিত্রনায়ক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, জাসাসের যুগ্ম-আহবায়ক লিয়াকত আলী, মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী, জাবেদ আহমেদ কিসলু, কে এম খালেদুজ্জামান জুয়েল, শরীফ মাহমুদুল হক, ফেরদৌস ফকির, মো. আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ফারহানা চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন নিয়ন, রফিকুল ইসলাম স্বপন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।