ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘নির্বাচনের আগে পা বুকে নিয়ে ভোট চায়, পরে চেনে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
‘নির্বাচনের আগে পা বুকে নিয়ে ভোট চায়, পরে চেনে না’ .

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে মানুষকে না চেনা ঠিক না। অনেকে নির্বাচনের আগে গরীবের পা ধরে বুকে নিয়ে ভোট চায়, নির্বাচনের পরে তাদের চেনে না।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নবনির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শামীম ওসমান। এ সময় উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে একথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, আপনি সবার আশা পূরণ করতে পারবেন না। তবে মানুষ যখন সমস্যা নিয়ে আসে তখন পিঠে হাত দিয়ে সাহস দেওয়া সম্ভব। পাশে থাকার আশ্বাসটুকুই মানুষ চায়। এটাই আমার মূল চাওয়া।

তিনি আরও বলেন, এখানে উপস্থিত সবাই আওয়ামী লীগ করেন না। এখানে অনেকে অন্য দলের আছেন। আমার কাছে এটা বিষয় না। আপনারা সবাই জনগনের প্রতিনিধি। এই সম্মান আল্লাহ আপনাদের দিয়েছেন। আপনারা নির্বাচনের আগে অনেক কথা বলেছেন। একজন মেম্বারের কিছু করার ক্ষমতা নেই যদি চেয়ারম্যান সাপোর্ট না দেয়। আবার চেয়ারম্যানরা এমপি ছাড়া কিছু করতে পারবেন না। প্রশাসন অন্য কথা। আপনারা যদি ব্যাক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য এখানে এসে থাকেন তাহলে আসসালামু আলাইকুম। আমি আপনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবো। আপনারা বিরুদ্ধে থাকলেও আমার আপত্তি নেই। আমার রাজনীতি আমার জন্য এবাদত। মানুষের জন্য কাজ করার চেয়ে বড় এবাদত কিছু নেই।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, আগামী নির্বাচন ২০২৩ সালে হলে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আল্লাহ হায়াৎ দিলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন। ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তবে এটা সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়। বড় বড় পরাশক্তির খেলার মধ্যে আমরা পড়েছি। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আমরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছি। এই জায়গাকে অনেকে নানাভাবে ব্যবহার করতে চায়। এদেশে অস্ত্র এসেছিল জাহাজ বোঝাই করে, এটা সত্য। করোনা না আসলে আমাদের জিডিপি দশের ওপর চলে যেত।

এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি চিন্তা করে দেখেছি নারায়ণগঞ্জে যত বড় বড় কাজ হয়েছে, এগুলোর নব্বই ভাগ আমাদের দ্বারা হয়েছে। লিংক রোড, স্টেডিয়াম, পঞ্চবটী থেকে মুন্সিগঞ্জ ফ্লাইওভার হবে, ডিএনডি প্রজেক্ট হয়েছে, সব এলাকাতেই রাস্তা হয়েছে। আমি যে পরিমাণ রাস্তার কাজ এনেছি, অন্য চারটা এলাকার এমপি মিলিয়ে সেটা আনতে পারে নি। আপনার আদায় করে নিতে হবে আমার কাছ থেকে।

শামীম ওসমান বলেন, আমি যখন কোন মন্ত্রণালয়ে ঢুকি, তখন সবাই বুঝে কিছু একটা ঘটবে। তখন যা চাই তারাতাড়ি দিয়ে দেয়। আমার নিজস্ব একটা স্টাইল আছে কাজের। আপনারাও প্রয়োজনে আমার টেবিল ভাঙেন, আমার আপত্তি নেই।

শামীম ওসমান আরও বলেন, আমি কাজ এনে দেব, কাজের চিন্তা করবেন না। সেন্টু (কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান) আগে অন্য দল (বিএনপি) করত, আরও আগে সে আওয়ামী লীগে আসতে চেয়েছিল। আমি বলেছি আগে কাজ করতে থাকো। কেউ মুখে দলে যোগ দিবে মন থেকে নয়, তা দরকার নেই। তারা কাজ করতে করতে এসেছে। এখন আমি চাচ্ছি মেম্বাররা প্রায়োরিটি অনুযায়ী লিস্ট করেন। আপনার এলাকার কাজগুলো চিহ্নিত করেন। সেভাবে আগে সাজিয়ে নিন এবং ফাইলটা আমাকে জমা দিন।  সেই ফাইলের কপি সবার কাছে থাকবে। এতে করে আমার মাথায় থাকবে কাজগুলো কি কি।

সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, হাতে সময় নেই, আপনাদের দ্রুত কাজ করতে হবে। যেহেতু নির্বাচন সামনে, সব এমপিরা এখন কাজের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে। পার্লামেন্টে সবচেয়ে লম্বা আমি। আমার কাজ না দিয়ে কেউ কাজ নিতে পারবে না।

তিনি বলেন, মানুষের ওপর অত্যাচার হলে সেই উন্নয়ন করে লাভ নেই। মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং আমাদের রুখতে হবে। ওসিকে এমন ভাবে কাজ করতে হবে যেন তার বিদায়ের সময় সবার চোখ দিয়ে পানি পড়ে। আমি চাই পঞ্চায়েত ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা। আল্লাহর হুকুম হলে এবং আপনারা একত্রে থাকলে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি বন্ধ থাকবে নিশ্চিত থাকেন। আপনাদের শুধু মাস দুই তিনেক ক্যাম্পেইন করতে হবে। আমাদের এসপি জেলা প্রশাসক ভাল মানুষ, আমরা টিম করে মিটিং করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
এমআরপি/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।