ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

গুম-খুন কাঙ্ক্ষিত নয়, তারপরও হচ্ছে: অসীম উকিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
গুম-খুন কাঙ্ক্ষিত নয়, তারপরও হচ্ছে: অসীম উকিল অসীম কুমার উকিল

ঢাকা: গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কাঙ্ক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) উদ্যোগে ‘জোরপূর্বক নিখোঁজ এবং রাষ্ট্রের দায়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন অসীম কুমার উকিল।

তিনি বলেন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কাঙ্ক্ষিত হতে পারে না। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়। এটি হওয়া যায় না। তারপরও হচ্ছে। এই জায়গাগুলোতে আমাদের সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ করা দরকার। রাজনীতির অস্থিতিশীলতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে গুমের মতো ঘটনাগুলো ধারাবাহিকভাবে ঘটছে। বাংলাদেশে রাজনীতির স্বাভাবিক গতিধারা ব্যাহত হয়েছে বারবার। স্বাভাবিক গতিধারা যখন ব্যাহত হয়েছে, তখন অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড সামনে চলে এসেছে। গুম, অন্তর্ধান যা-ই বলি না কেন, এগুলো অস্বাভাবিক বিষয়। আমাদের দায়িত্ব হলো এগুলো বন্ধ করা।

অসীম কুমার উকিল আরও বলেন, ’৭৫ উত্তর বাংলাদেশের রাজনীতিতে হাতেখড়ি নেওয়া মানুষ আমি। আমি যখন ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেই তখন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন মাহফুজ বাবু, তিনি অন্তর্ধান হয়ে গিয়েছিলেন। সেই ’৭৭, ’৭৮ এর কথা, সেই মাহফুজ বাবুর খোঁজ আজও পাওয়া যায়নি। এটা দীর্ঘদিন যাবত চলছে। রাজনৈতিক মাঠের একজন কর্মী হিসেবে মনে করি, এটি কাঙ্ক্ষিত নয়, এটি হতে পারে না। কেন তারপরও এগুলো হচ্ছে। যে কারণেই এগুলো হোক, বন্ধ হওয়া দরকার। এগুলো সবাই মিলে বন্ধ করা দরকার।

আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক বলেন, গুম যে কারণেই হোক না কেন, সেটি বন্ধ হওয়া জরুরি। কেন এমন হয়। গণতন্ত্রের ধারাগুলো শক্তিশালী করে এসব অস্বাভাবিক ঘটনা বন্ধ করা উচিত।

গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য রাজনীতিতে স্টেক হোল্ডারদের, বিশেষত যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন বা করতে চান, তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

অসীম কুমার উকিল বলেন, রাজনীতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ডগুলো হয়। এর ধারাবাহিকতায় এগুলো চলছে। গণতন্ত্রের ধারা বিকাশমান। এই ধারাকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। গণতন্ত্রের ধারা যত বেশি শক্তিশালী হবে, তত রাজনৈতিক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ফিরে আসবে। এসব অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এই গুম, খুন এগুলো কমে আসবে। একসময় বন্ধ হবে। গণতন্ত্রের ধারাকে শক্তিশালী করার প্রথম যে জিনিস, সেটা হলো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার পালাবদল এবং তা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে এক-এগারো চোখ রাঙানি দেয়। যারা দেশ পরিচালনা করেছেন, যারা করতে চান, তাদের স্বতঃস্ফূর্ত ও দায়িত্বপূর্ণ অংশগ্রহণে গণতন্ত্রের ধারা আরও শক্তিশালী হবে। তা হলেই সামনে এগিয়ে যাওয়া যাবে।

গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’ প্রসঙ্গে অসীম উকিল বলেন, এটা মায়ের ডাক হবে কেন? এটা দেশের ডাক, এটা সবার ডাক। মায়ের ওপর সব দায় চাপিয়ে দিয়ে নিজেদের আড়াল করছি কিনা, সেটা দেখা দরকার। দায়িত্বটা আমাদের, যারা দেশ পরিচালনা করছেন এবং যারা করতে চান। এটা সবার ডাক যখন হবে, তখনই আমরা সম্মুখপানে এগিয়ে যাব।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শহীদ নুর হোসেনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, নুর হোসেনের কথা মনে পড়ে, ১৯৮৭ সালে নুর হোসেন বুকে পিঠে স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক স্লোগানটা লিখেছিলেন। সেই জায়গা থেকেই দাঁড়িয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি গণতন্ত্রের ধারাগুলি বিকাশমান আছে। এই বিকাশমান ধারাগুলিকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। গণতন্ত্র যত বেশি শক্তিশালী হবে, রাজনীতির স্বাভাবিক ধারায় সবকিছু ফিরে আসবে। এই সমস্ত অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এই গুম-খুন কমে আসবে—এক সময় বন্ধ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।