ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

রাজনীতি

শিক্ষককে মারধরকারী ছাত্রলীগের সেই ২ নেতার নামে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২২
শিক্ষককে মারধরকারী ছাত্রলীগের সেই ২ নেতার নামে মামলা

শরীয়তপুর: শরীয়তপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (শরীয়তপুর) সরকারি কলেজের বিএম সোহেল নামক এক শিক্ষককে মারধর ও লাঞ্চিত করার অভিযোগে কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি সোহাগ বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল জমাদ্দারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

শুক্রবার (০১ এপ্রিল) রাতে কলেজের অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ বাদী হয়ে পালং থানায় এ মামলা করেন।

এদিকে, সোহাগ বেপারী ও রাসেল জমাদ্দারের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত বুধবার (৩০ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ভাইভা ছিল। এসময় এক্সটার্নালদের আগমন উপলক্ষে তাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। এতে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি সোহাগ বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল জমাদ্দারকে দাওয়াত না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা দলবল নিয়ে বাংলা বিভাগে হাজির হন। সেই সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানকে গালাগাল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে একই বিভাগের শিক্ষক বিএম সোহেল সেখানে প্রতিবাদ করলে তাকে সবার সামনেই লাথি-কিল-ঘুষি মারেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক বিএম সোহেল। পরে বিষয়টি প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালকে জানানো হয়।  

তবে অভিযুক্ত সোহাগ বেপারী ও রাসেল জামাদ্দারকে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক সোহেলের কাছে কাছে ক্ষমা চাওয়ার মধ্য দিয়ে বিষয়টি সুরাহা হয় বলে জানান কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান। পরে বৃহস্পতিবার সকালে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবর ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ উজ্জামান স্বাক্ষরিত একপত্রে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ের ওই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।  

এদিকে ঘটনার পর শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠে। অবশেষে নানা নাটকীয়তার পর শুক্রবার রাতে মামলা করা হয়। শিক্ষার্থীরা সোহাগ বেপারী ও রাসেল জমাদ্দারকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। এছাড়াও সামাজিক মাধ্যমে সোহাগ বেপারী ও রাসেল জমাদ্দার ছাত্রদলের সাবেক কর্মী বলে বেশকিছু ছবি ভাইরাল হয়েছে। অনেকের দাবি তারা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী।

অন্যদিকে, সোহাগ বেপারী কলেজের ছাত্রই না বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, কলেজের নথিতে সোহাগ বেপারী নামে আমাদের কোনো ছাত্র নেই। কলেজের ছাত্র না হয়েও তাকে এই কলেজে ছাত্রলীগের সভাপতি কেন করা হয়েছিল, তা আমার বোধগম্য নয়। এর আগেও তিনি বিভিন্ন ধরনের অঘটন ঘটিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, পালং থানায় সোহাগ বেপারী ও রাসেল জমাদ্দারের নামে মামলা করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবর বাংলানিউজকে বলেন, যারা কমিটিতে আসবেন তাদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ছাত্র হতে হবে। ২০১৮ সালে তৎকালীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী উক্ত কমিটির অনুমোদন দিয়েছিল। তখন আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। ছাত্রলীগে কোনো অপরাধীর স্থান নেই। কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দ্বায়ভার ছাত্রলীগ নেবে না। দলীয় শৃঙ্খলার অভিযোগে ইতোমধ্যেই ওই কলেজ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।

পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।