ঢাকা: সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এখন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বিদায় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, খুব ঘাবড়ে গেছে। হাসিনা সরকার এত ঘাবড়ে গেছে যে, এখন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বিদায় দেওয়া শুরু করেছে। গত পরশু খবরের কাগজে বেরিয়েছে এ যে ঋণ নিয়ে কাজ করে, বিদেশ থেকে ধার নেয়, অন্যান্য সাহায্য সংস্থা থেকে ঋণ নেয় এখন আর শোধ করতে পারছে না। তারপর কী হবে? সমস্ত বিদেশি ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেবে। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত পরিষ্কার কথা, আপনাদের আর এদেশ শাসন করবার কোনো অধিকার নেই। আপনারা দুর্নীতি-দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে আজকে দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। আপনারা দয়া করে মানে মানে কেটে পড়ুন। যদি সরে না পড়েন তবে এদেশের মানুষ কীভাবে সরাতে হয় তা জানে।
খুলনার সমাবেশে জনতার ঢল নামবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্নভাবে চর্তুদিকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, বাধার সৃষ্টির করছে। ময়মনসিংহের বিভাগীয় সমাবেশে পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল। ঠিক একইভাবে খুলনায়ও তারা দুদিন আগে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে কী লাভ হয়? মানুষ কী থেমে থাকে। মানুষ হেঁটে দলে দলে বিভিন্নভাবে সমাবেশে উপস্থিত হয়। খুলনাতেও একই ঘটনা ঘটবে, খুলনাতেও লাখ লাখ মানুষ তাদের মতো করে সমাবেশে উপস্থিত হবে।
তিনি আরও বলেন, এ সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ একটাই- লুট। লুট করে করে তারা দেশের মানুষের কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে।
বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধৈর্য ধরেন। বিদ্যুৎ পেয়েছেন, আবারও বিদ্যুৎ পাবেন। তো আমাদের তো জীবন অতিষ্ঠ- লোডশেডিং লোডিশেডিং লোডশেডিং। প্রতিদিন ৪/৫ বার লোডশেডিং হয়। আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো চলে না, ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বন্ধ হচ্ছে। মালিকরা বলছেন, এভাবে যদি চলতে থাকে, যদি বিদ্যুৎ না পাই, গ্যাস না পাই তাহলে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিতে হবে। এসব ফ্যাক্টরি বন্ধ করলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যে দেশে তারা (সরকার) বিদ্যুৎ ঠিক মতো দিতে পারে না, সঞ্চালন লাইন করতে পারে না, বিতরণ করতে পারে না সেখানে এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার একটা মাত্র কারণ। যেটা করতে গেলে তো প্রচুর পরিমাণ চুরি করতে পারে, তারা কমিশন পায়। সেজন্য তারা এ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, নাসির উদ্দিন অসীম, মীর সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নীরব, মহানগর বিএনপির তাবিথ আউয়াল, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, রাজীব আহসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের হুমায়ুন কবির খান, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ মহানগর ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২২
এমএইচ/আরবি