খুলনা: খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নিয়ে পুলিশকে ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীকে অন্যায় আদেশ না পালনেরও আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে খুলনার ডাকবাংলো সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিএনপির গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গয়েশ্বর বলেন, আমাদের যুদ্ধটা পুলিশের বিরুদ্ধে না। পুলিশ বাহিনীকে বুঝতে হবে তারা জনগণের টাকায় চলে তাদের সেবা করার জন্যে। পুলিশ বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর বাসার চাকর-বাকর না; যে যা বলবে তাই শুনতে হবে। ভয় পাবেন না, সরকারের কোনো অন্যায় আদেশ পালন করবেন না।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির হিসেবে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে আওয়ামী লীগের চিহ্ন থাকবে না। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে শেখ হাসিনার সরকার নতুন পাঁয়তারা শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা জানগণকে বঞ্চিত করে বিনা ভোটে ক্ষামতায় টিকে থাকতে চায়। আন্দোলন ছাড়া বিএনপির সামনে আর কোনো পথ নেই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেন, অচিরেই আমরা ক্ষমতায় যাচ্ছি। খুলনা থেকে শপথ, শেখ হাসিনার অধীনে আর কোনো নির্বাচন করতে দেব না। আওয়ামী লীগের লোকেরা বলেছিল পদ্মার এপারে কোনো সমাবেশ করতে দেবে না। তারা একটু এসে দেখুক, লজ্জা পাবে। এখানে জনসমুদ্র হয়েছে।
খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘আমাদের খুলনায় গণসমাবেশে জনসমুদ্র আর এই বিশাল আয়োজন দেখে বিস্মিত তারেক রহমান। আওয়ামী লীগ ভেবেছিল তাদের বাধায় আমাদের কেউ আসবে না। তবে এখানে জমায়েত জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। তাদের দেখিয়ে দিয়েছি, আমাদের দুর্বল ভেবো না। রেলস্টেশনে বাধা দিয়েছিল, যশোরের নেতা-কর্মীরা আমাদের শক্তি দেখিয়ে দিয়েছে।
অমিত আরও বলেন, এই খুলনায় আজ লাখো কণ্ঠে বাঘের গর্জন শুরু হলো। ডিসেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের পতন আমরা ঘটাব। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব।
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মী হত্যা, হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশের অংশ হিসেবে খুলনায় বিএনপির এ বিভাগীয় সমাবেশ। এতে যোগ দিতে শুক্রবার রাতেই নেতাকর্মীরা খুলনায় আসতে থাকেন। পরে সকাল থেকে দলে দলে সমাবেশে যোগ দেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে খুলনা রেলস্টেশনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় বেশ কিছু জানালার কাঁচ। এছাড়া বৈকালী এলাকায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আগুন দেওয়া হয় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী এসব বিষয়ে উল্লেখ করে সমাবেশে বলেন, খুলনায় বিএনপির সমাবেশে বাধা দিয়েও ঠেকাতে পারেনি। সমাবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে সরকারের পেটোয়া বাহিনী ও পুলিশ। কিন্তু লাভ হয়নি। খুলনা বিভাগের প্রান্তরে প্রান্তরে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা। সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ জেলা মহানগর নেতারা বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
এমআরএম/এমজে