ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের (স্বাচিপ) সম্মেলনকে ঘিরে নতুন নেতৃত্বের আশা করছে নেতাকর্মীরা।
২৫ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
স্বাচিপ নেতারা জানান, বর্তমানে দেশে স্বাচিপের সদস্য সংখ্যা ১৫ হাজারেরও বেশি। সংগঠনটির প্রতি ৫ বছর পর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর স্বাচিপের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলেও ওইদিন কমিটি গঠনের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দিয়ে সম্মেলন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান সভাপতি ও অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসারে পাঁচ বছর পর অর্থাৎ ২০১৮ সালের নভেম্বরে পরবর্তী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। মহামারি করোনার কারণে গোটা বিশ্ব থমকে যাওয়ার স্বাচিপের সম্মেলনের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
ইতোমধ্যে সম্মেলনকে ঘিরে চিকিৎসকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। স্বাচিপের শীর্ষ পদে স্থান পেতে চিকিৎসকদের অনেকেই প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও দলীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করে দোয়া চাইছেন।
স্বাচিপের সিনিয়র কয়েকজন নেতা বলেন, ২০২৪ সালের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে স্বাচিপের নেতৃত্বে পরীক্ষিত নেতাদের পদ দিতে হবে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দল ক্ষমতায় থাকায় অনেক সুযোগসন্ধানী কথিত স্বাচিপ নেতা তৈরি হয়েছে। স্বাচিপের দুর্দিনে যাদের দেখা যায়নি এখন তাদের অনেকেই বড় নেতা সাজছেন। এ কারণে এবারও দলীয় প্রধানের কাছ থেকেই স্বাচিপের শীর্ষ নেতা অর্থাৎ সভাপতি ও মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের ঘোষণা আসতে পারে।
স্বাচিপের সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান ছাড়াও সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ও বিএসএমএমইউয়ের সাবেক উপাচার্য প্রখ্যাত নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, কোষাধক্ষ্য অবসরপূর্ব ছুটিতে যাওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. ইউসুফ ফকিরের নাম শোনা যাচ্ছে।
মহাসচিব পদে বর্তমান মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ ছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, ডা. জুলফিকার আলী লেলিন, সদস্য ডা. তারিক মেহেদী পারভেজ, ডা. আবু রায়হানের নাম শোনা যাচ্ছে।
সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইকবাল আর্সেনাল বাংলানিউজকে বলেন, স্বাচিপের সম্মেলন আরও আগে হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। ২৫ নভেম্বর হতে যাচ্ছে। সারাদেশ থেকে কাউন্সিলররা আসবেন। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
নেতৃত্বে এবার কারা আসবেন এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাচিপের এ নীতিনির্ধারক বলেন, নেতৃত্বের বাছাই নিয়ে কাউন্সিলরদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। কেউ চায় চলমান নেতৃত্ব বজায় থাকুক যেন দেশব্যাপী যে রাজনৈতিক মাঠ চাঙ্গা হচ্ছে সেটা সামলাতে পারে। আবার অনেকে (কাউন্সিলর) চায় নতুন নেতৃত্ব এসে সংগঠনকে গতিশীল করুক।
তবে সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করবেন সেভাবেই নির্ধারণ হবে বলে জানিয়েছেন স্বাচিপের এ নেতা।
স্বাচিপের কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয় সংগঠনকে গতিশীল করতে। সে হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে পারেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বাচিপ গঠিত হয়। স্বাচিপের প্রতিষ্ঠাকালে অধ্যাপক এম. এ. কাদেরী সভাপতি ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন।
এরপর ২০০৩ সালের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে অধ্যাপক আ ফ ম রুহুল হক সভাপতি ও অধ্যাপক এম ইকবাল আর্সলান মহাসচিব নির্বাচিত হন।
২০১৫ সালে ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে স্বাচিপের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা সম্মেলনে কমিটির ভার স্বাচিপের নেতাকর্মীর ওপর ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে এম ইকবাল আর্সলান সভাপতি ও এম এ আজিজ মহাসচিব নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪, নভেম্বর ২৩, ২০২২
এনবি/জেডএ