ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‘সবার টাকায় তৈরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাত্র ৫৩ শতাংশ মানুষ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১২
‘সবার টাকায় তৈরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাত্র ৫৩ শতাংশ মানুষ’

ঢাকা: সারাদেশের মানুষের টাকায় তৈরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাত্র ৫৩ শতাংশ মানুষ। একথা বলেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব খান।

এছাড়া গ্যাস ঘাটতির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার বিকেলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিদ্যুৎ: প্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গ্যাস ঘাটতির কারণে আগে থেকেই ৭০০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। নতুন করে বন্ধ সার কাখানায় গ্যাস সরবরাহ শুরু করায় আরো ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হবে। গ্যাস ঘাটতির কারণে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশি চালাতে হচ্ছে। এতে করে ঘাটতি বেড়ে চলছে।

তিনি ‘ডিমান্ড সাইড ম্যানেজমেন্ট’ ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান। সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য দাম বাড়ানো প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন।

বিদ্যুৎখাতের জন্য কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠান না থাকায় অনেক মাসুল দিতে হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, বিদেশিরা যে সব পরামর্শ দেয় তাতে  তারা তাদের স্বার্থ দেখে আগে। অনুন্নত প্রযুক্তি তারা তৃতীয় বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়।

আমরা অনেক সময় না বুঝেই অনেক প্রযুক্তি গ্রহণ করি যা পরবর্তীতে আমাদের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দেয়। এজন্য একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, সারাদেশের মানুষের টাকায় তৈরি হয় বিদ্যুৎ। সেই বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাত্র ৫৩ শতাংশ মানুষ। বাকি ৪৭ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের বিদ্যুৎ দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে রাষ্ট্রের।

সেমিনারে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, সারাবিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিলেও বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েনি। আর মন্দা এড়ানো সম্ভব হয়েছে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোর কারণে।

বর্তমান সরকার সাড়ে তিন বছরে ৩৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। আগামী দেড় বছরে আরো দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন সচিব।

বিশেষ অতিথির ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি একেএমএ হামিদ বলেন, বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন পিডিবির সদস্য (প্রশাসন) হুমায়ুর কবীর খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিইবি’র সদস্য প্রকৌশলী নাদিরুজ্জামান মাহমুদ।

মূল প্রবন্ধে নাদিরুজ্জামান বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রণয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার, কনডেনসেড (অপরিশোধিত জ্বালানি তেল) থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করেন।

জিও থার্মাল (ভূ-গর্ভস্থ তাপ) পাওয়ার বিশাল সম্ভবনা থাকলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ থেকে বিদ্যু উপাদনের উদ্যোগ থমকে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বিনামূল্যে দেওয়া সিএফএল বাল্ব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বলেও উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, ১২ আগস্ট, ২০১২
ইএস/সম্পাদনা: আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।