ঢাকা: টরন্টো চৈতন্যমেলা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে গত ১২ মার্চ ষোড়শ শতাব্দীর বাঙালি দার্শনিক যুগশ্রষ্টা শ্রীচৈতন্যদেবের জীবন ও কর্মকে উৎযাপন করতে আয়োজন করা হয় চৈতন্যমেলা। বহু ধর্ম, বহু জাতির বিপুল সংখ্যক শ্রোতা-দর্শকের উপস্থিতিতে আলোচকেরা বর্তমান অশান্ত পৃথিবীতে শ্রীচৈতন্যদেবের মানবতাবাদের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
১২ মার্চ স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় সুজিত কুসুম পাল পালের উপস্থাপনায় সাত ঘণ্টাব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন ড. দিলীপ চক্রবর্তী। উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি শ্রীচৈতন্যদেবের গুরুত্ব তুলে ধরে তার সৃষ্ট মানবতার পথকে অনুসরণের জন্যে চৈতন্যমেলা আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এরপর বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে চৈতন্যদেব ও বৈষ্ণবধর্ম নিয়ে রচিত বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় রচিত প্রায় চারশ বইয়ের প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পণ্ডিত প্রসেনজীৎ দেওঘরীয়া। প্রবাসে চৈতন্যচর্চায় এ গ্রন্থরাজি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি অভিমত পোষণ করেন।
বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে শুরু হয় ১৯৫৩ সালে সুচিত্রা সেন, পাহাড়ী স্যান্যাল, বসন্ত চৌধুরী প্রমুখ অভিনীত ভারত সরকারের পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য’।
সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পর্ব। শুরুতেই ইতিহাসের প্রেক্ষিতে শ্রীচৈতন্যদেবের জীবন ও দর্শনের ওপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশন করেন লেখক ও গবেষক সুব্রত কুমার দাস।
চৈতন্যদেবকে শান্তি ও প্রেমের প্রতিভূ আখ্যায়িত করে আরও বক্তব্য রাখেন রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী কৃপাময়ানন্দ, বিচেস-ইস্ট ইয়র্ক এলাকার এমপি নাথানিয়েল এরসকিন-স্মিথ, বিচেস-ইস্ট ইয়র্ক এলাকার এমপিপি আর্থার পটস, টরন্টো ইসকনের প্রতিনিধি মাদার সত্যভামা, বৌদ্ধ পণ্ডিত ড. ভান্তে শরণপালা এবং মুক্তচিন্তক আকবর হোসেন।
অনুষ্ঠানে কানাডার অন্টারিও প্রদেশের প্রিমিয়ার ক্যাথলিন উইনের শুভেচ্ছাবার্তা পড়ে শোনান মিসিসাগা ইস্ট-কুকসভিল এলাকার এমপিপি দীপিকা ডামেরলা।
এছাড়া, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ-কানাডা হিন্দু মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের মেম্বার ও সাবেক সভাপতি নির্মল কর, হিন্দু ধর্মাশ্রমের সভাপতি আশিস রায় এবং টরন্টো দুর্গাবাড়ির সভাপতি ড. সুশীতল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সুব্রত কুমার দাস রচিত ‘শ্রীচৈতন্যদেব’ গ্রন্থের পাঠ-উন্মোচন করেন নাথানিয়েল এরসকিন-স্মিথ, আর্থার পটস এবং গ্রন্থের স্পন্সর বিশিষ্ট রিয়েল-স্টেট ব্যবসায়ী মানিক চন্দ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, পণ্ডিত প্রসেনজীৎ দেওঘরীয়া, গোপা চৌধুরী, স্নিগ্ধা চৌধুরী, জয়া দত্ত সেনাপতি, মহুয়া পারিয়াল, তমা পাল, এবং প্রতিষ্ঠা দেওঘরীয়া। তবলায় সহযোগিতা করেন সজীব চৌধুরী। মন্দিরাতে ছিলেন অজয় বণিক। এছাড়া নৃত্য পরিবেশন করেন, পারমিতা সেন তিন্নি, মাতৃকা পাল এবং শ্রেয়া সাহা। সাংস্কৃতিক পর্বের উদ্বোধনীতে সমবেত ভজন পরিবেশন করে শ্রেয়া, জগন্নাথ, ধ্রু, নির্যা, ভাস্কর, মধুরিমা এবং শৌভিক। বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক পর্বটি পরিচালনা করেন চয়ন দাস এবং কল্যানীয়া পুরবী।
রমাপদ পাল ও দলের কীর্তনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৬
আরএইচ