বিদেশে অধ্যয়নরত মেধাবী শিক্ষার্থীদের ওয়ান ওয়ে (দেশ ছেড়ে যাওয়া বা দেশে ফেরা) ভ্রমণ ব্যয়ের মঞ্জুরি (বৃত্তি) দেবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ সুইডেন ট্রাস্ট ফান্ড।
বাংলাদেশের যেসব শিক্ষার্থী গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে উচ্চশিক্ষার্থে (স্নাতকপূর্ব, স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি) পূর্ণ বা আংশিক বৃত্তি নিয়ে বিদেশে গেছেন গেছেন, তারা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সাধারণত উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মেধাবীরা বৃত্তি পেলেও তাদের প্লেনের টিকিটের ঝামেলায় পড়তে হয়। টিকেট কেনার সময় অনেক ক্ষেত্রে সময়স্বল্পতা বিবেচনায় কেউ কেউ উচ্চমূল্যে টিকিট কিনতে বাধ্য হন। তার সঙ্গে থাকে নানা রকম চক্রের দৌরাত্ম্য।
এসব ভোগান্তি থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা লুফে নিতে পারেন বাংলাদেশ সুইডেন ট্রাস্ট ফান্ডের এই বৃত্তি।
বৃত্তির আবেদনের যোগ্যতা এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় নূন্যতম ২য় বিভাগ, কিন্তু ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালের শিক্ষার্থীদের জন্য নূন্যতম জিপিএ ২.৫০ থাকা অত্যাবশ্যক। স্নাতক বা স্নাতোকত্তর ডিগ্রির ক্ষেত্রে ৪ স্কেলে ৩.২০ বা সমমান এবং ৫ স্কেলে ৪ সিজিপিএ বা সমমান থাকতে হবে।
প্রার্থীদের প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নূন্যতম স্কোর-TOFEL (500 Paper based/ 80 online), ILETS – 5.5, SAT-1400, GRE-900 (Old System, 200 New System) অথবা GMAT থাকতে হবে। কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্রে- যেমন, রাশিয়ান ভাষায় স্নাতক, স্পেশালিস্ট বা মাস্টার্স কোর্সের জন্য বা অনুরূপ অন্য দেশে অন্য কোনো বিষয়ের জন্য TOFEL, IELTS, GRE বা GAMAT প্রয়োজন নেই।
সবশেষে শিক্ষার্থী যদি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশি বা বিদেশি অন্য কোনো উৎস থেকে ভ্রমণ মঞ্জুরি বা এয়ার টিকিট ফ্রি না পান, তবে তিনি আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হয়। কাগজ-পত্র প্রস্তুতি শেষে http://bstf.erd.gov.bd/app/standard/login/login.php লিংকটিতে গিয়ে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করতে হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার পড়বে, প্রার্থী/ প্রার্থীর অভিভাবকের আয়কর সনদ, যেখানে আয় ও আয়ের উৎস সংক্রান্ত তথ্যাদি থাকতে হবে।
প্রথমে অনলাইনে আবেদন করে TIN নাম্বার সংগ্রহ করতে হবে। তারপর উক্ত TIN নাম্বার ব্যবহার করে আয়কর অফিস বা অঞ্চল থেকে বিনামূল্য আয়কর সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে। আয়করের জন্য রেজিস্ট্রেশন করলে আয়কর দিতে হবে ব্যপারটা এমন নয়। বাংলাদেশের সকল নাগরিকের TIN থাকা প্রয়োজন, অনেকটা জাতীয় পরিচয়পত্রের মত। সুতরাং চাইলে যে কেউ এমনকি একজন কৃষকও আয়কর নিবন্ধন করতে পারেন। আয়কর সনদ সম্পন্ন হলেই সিংহভাগ কাজ শেষ।
পরবর্তী সময়ে বৃত্তিপ্রাপ্তির অর্থাৎ Acceptance Letter অথবা Fellowship/Scholarship Award এর একটি কপি, বৃত্তির সংস্থা/ প্রতিষ্ঠান/ বিশ্ববিদ্যালয় হতে Travel Cost প্রদান করা হয়নি বা হবে না এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। অধিকাংশক্ষেত্রে এসব কাগজপত্রের কোনোটিই শিক্ষার্থী পায় না। এক্ষেত্রে নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের ডিন বা কর্তব্যরত প্রধানের নিকট আবেদন করলে, তিনি এসব সার্টিফিকেট প্রদান করবেন। অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব কাগজে, সিল ও স্বাক্ষর থাকতে হবে।
এবার Academic সনদপত্রসমূহ – SSC, HSC, Bachelor, Master এর ট্রান্সক্রিপ্ট ও সার্টিফিকেটসমূহ, এয়ার টিকিটের মূলকপি (ভাড়ার পরিমাণ উল্লেখসহ), ক্ষেত্রবিশেষে প্রযোজ্য হলে TOFEL, IELTS, GRE, GAMAT বা SAT এর সার্টিফিকেট ও নিজস্ব স্বাক্ষর Scan করে JPG ফাইল তৈরি করতে হবে। আয়কর সনদ ভুলে গেলে চলবে না। তাও একই ফরম্যাট তৈরি করতে হবে।
উপর্যুক্ত সব কাগজপত্রের অরিজিনাল কপি স্ক্যান করে JPG ফরম্যাট ফাইল প্রস্তুত করতে হবে। প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেই http://bstf.erd.gov.bd/app/standard/login/login.php লিংকে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। যথাযথভাবে আবেদন সম্পন্ন করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি আবেদনের Soft-Copy পাওয়া যাবে ইমেইল বা অ্যাকাউন্টেই। এই আবেদনের Soft-Copy প্রিন্ট করে নির্দিষ্ট স্থানে নিজের স্বাক্ষর দিতে হবে।
তারপর কাগজপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি ও ১ কপি সত্যায়িত ছবিসহ আবেদনের হার্ডকপি আগামী ৩১ আগস্ট ২০১৬ তারিখের মধ্যে- সহকারী প্রধান, এফ অ্যান্ড এফ- ৩ শাখা, কক্ষ- ১৯ , ব্লক ১৬, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, শের-ই-বাংলানগর, ঢাকা-১২০৭ ঠিকানায় পাঠাতে হবে।
কিন্তু অনলাইনে আবেদনের শুরু ১৭ এপ্রিল থেকে ১৬ জুন বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে।
লেখক
মোহাম্মদ হামিদুল হক
শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল রিসার্চ নিউক্লিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, মস্কো, রাশিয়া।
ইমেইল: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৬
এইচএ/