পোখারা, নেপাল থেকে: ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। পাহাড়ের ওপর থেকে রাক্ষসের মতো পানির স্রোত অাছড়ে পড়ছে পানিতে।
জুলাইয়ের ২৮ তারিখ বিকেল। মেঘে ঘেরা অাকাশ। এরকম এক জুলাইতেই ডেভিসের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল এই রাক্ষুসে ঝর্ণার স্রোত।
ঘটনাটি ঘটে ১৯৬১ সালের ৩১ জুলাই । ওই দিনটি ছিল সুইজারল্যান্ডের পর্যটক মিসেস ডেভিস ও তার স্বামীর জন্য ভয়ংকর একটি দিন। তারা পোখারায় এসেছিলেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে। পাতালে চাংয়ের সুন্দর টলটলে পানি দেখে ডেভিস পরিবার গুহার পানিতে না নেমে পারলেন না।
আসন্ন বিপদ সম্পর্ক কেইবা জানবে! নীরব, স্থির পানি হঠাৎ রাগান্বিত হয়ে উঠলো। পানির স্রোত গর্জে উঠলো।
হিংস্র পানি ডেভিস দম্পত্তিকে গ্রাস করতে শুরু করে। সৌভাগ্যক্রমে ডেভিসের স্বামী একটি পাথরখণ্ড আঁকড়ে ধরে পার পেলেন। কিন্ত ডেভিস পারলেন না। পানির আগ্রাসনকে উপেক্ষা করে কেউই পারলেন না ডেভিসকে উদ্ধার করতে।
তিনদিন পর ফুসরে নদীতে পাওয়া গেলো ডেভিসের মরদেহ। খবর দেওয়া হলো ডেভিসের বাবাকে।
ডেভির বাবার অনুরোধে কাসকি জেলা উন্নয়ন কমিটি ‘পাতালে চাংগো’ ঝর্ণার নামকরণ করে 'ডেভি'স ফল। '
ডেভির বাবা কিছু অর্থ অনুদান করেন এবং ডেভিস ফলকে ঘিরে একটি পার্ক তৈরির অনুরোধ করেন। বর্তমানে ১০ রোপানি এলাকাজুড়ে এই পার্ক। তেনসান-পোখারা হাইওয়ের পাশ ধরে চোরেপেতানে এলেই হাতের বামে পড়বে ডেভিস ফল।
ডেভিস ফল হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে গভীরতম গুহা। এর গভীরতা ৪৮ মিটার এবং ১ হাজার মিটার দীর্ঘ।
১৯৭০ সালে প্রথমবারের মতো সেখানে ভেঙ্গে পড়ে পাহাড়। এরপর পর্যায়ক্রমে ১৯৮০ এবং ১৯৮২ সালে।
ড. জেবাউরের মতো বিশেষজ্ঞদের মতে ৫০০ থেকে ৬০০ বছরের পুরনো গুপ্তেশ্বর গুহার ধারেই সৃষ্টি হয়েছে ডেভিস ফল।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৬
এমএন/আরএইচএস