ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ বৈশাখ ১৪৩২, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

সারাদেশ

যে কোনো সময় যমুনায় হারাতে পারে ঘরবাড়ি-স্কুল, জিও ব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা 

সাগর ফরাজী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৫
যে কোনো সময় যমুনায় হারাতে পারে ঘরবাড়ি-স্কুল, জিও ব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা 

জামালপুর: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে দীর্ঘ এক মাস ধরে চলা ভাঙনে অর্ধশত বসতবাড়ি যমুনা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরও অনেক ঘরবাড়ি।

 

জিও ব্যাগ ফেলেও ঠেকানো যাচ্ছে না ভাঙন। তাই নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্পের জন্য কাজ করা হচ্ছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।  

সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে উপজেলার চরডাকাতিয়া এলাকার একমাত্র চরডাকাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে।  

জানা গেছে, যমুনা নদীর বাম তীরের এ অঞ্চলে ভাঙনের খবর নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ভাঙনের কবলে হারিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অসংখ্য  মানুষ। এবার অসময়ের তীব্র ভাঙনে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে নদীগর্ভে গেছে অর্ধশত বসতবাড়িসহ ফসলি জমি। আর ভাঙন হুমকিতে রয়েছে চরডাকাতিয়া গ্রামের একমাত্র স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। জরুরিভাবে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্প (ফেলা) করা হলেও টেকেনি একদিনও। স্কুলটিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ছিলেন সাতজন৷ 

ওই এলাকার বাসিন্দা সালমান বলেন, ২০১১ সাল থেকে উপজেলার খোলাবাড়ি, হাজারী, মাগুরিহাট, খানপাড়া ও মাঝিপাড়াসহ প্রায় অর্ধশত গ্রাম নদীগর্ভে চলে গেছে। কিন্তু কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।  

ওবায়দুল ইসলাম নামের বাসিন্দার ঘর ভেঙেছে দুদিন আগে। তিনি বলেন, আমরা যমুনার এ রুপ দেখে অভস্ত। তবে অসময়ের ভাঙন কয়েকগুণ দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয় আমাদের।  

আমজাদ হোসেন নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, এ বছর এক মাস ধরে উপজেলার খোলাবাড়ি থেকে চরডাকাতিয়া হয়ে বড়খাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র ভাঙন চলছে। জিও ব্যাগ ফেলেও কাজে না আসায় অবশিষ্ট বসতভিটা, মসজিদ ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কিছু স্থাপনা হুমকিতে রয়েছে। স্কুলটিতে ভয়ে আর কেউ আসে না। এরই মধ্যে স্কুলটি ভেঙে নিলামে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।  

রহিমা বেগম নামের এক নারী বলেন, নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এলাকা ছাড়া আমার মতো অনেকেই সড়কের পাশে দুইচালা আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই। এছাড়া ফসলি জমি হারিয়েছি, কাজও পাই না। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছি আমরা। কোথায় যাব, কি করব? সব কেড়ে নিয়েছে নদী৷ 

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, জরুরিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে তীব্র ভাঙন ঠেকাতে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়া নিরীক্ষার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে স্থায়ী প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।