ঢাকা, সোমবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০০ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা করে মরদেহ সাতক্ষীরায় গুম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ৫:০২ পিএম, এপ্রিল ২৭, ২০২৫
ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা করে মরদেহ সাতক্ষীরায় গুম সবুজ ও রিপন

যশোর: একুশ লাখ টাকা আত্মসাতের জন্যে রেজাউল নামে এক  ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা করে মরদেহ সাতক্ষীরায় গুম করা হয়েছে। একই বাড়ির পাশাপাশি ফ্ল্যাটে থাকা ভাড়াটিয়া এই হত্যার মাস্টার মাইন্ড।

তার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন সীমান্তবর্তী বেনাপোলের অপর একজন ব্যবসায়ী।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সবুজ ওরফে রবিউল এবং রিপন হাওলাদার নামে দুজনকে আটকের পর তাদের নামে মামলা গ্রহণ করেছে যশোর কোতোয়ালি থানা। ব্যবসায়ী রেজাউল নিখোঁজ হওয়ার এক মাস তিনদিন পর মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। রেজাউলের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত।

সবুজ এবং রিপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে এনে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। জমি বিক্রির ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের লক্ষ্যে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে আটকরা জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছে রেজাউলকে হত্যা করে মরদেহ সাতক্ষীরায় গুম করা হয়েছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের জন্য সাতক্ষীরায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জানা যায়-ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম যশোর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইসহক সড়কে তেমাথায় (দুলালের মোড়) কামরুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। একই বাড়ির অপর ফ্ল্যাটে থাকতেন সবুজ ওরফে রবিউল। তিনি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তালতলা এলাকার হবি গাজীর ছেলে।

রেজাউল ও সবুজ বাড়ির মালিকের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান ভাড়া নিয়ে পৃথক ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তাদের মধ্যে রেজাউল টেইলার্সের সঙ্গে ছিটকাপড় এবং সবুজ ফাস্ট ফুডের ব্যবসা করতেন। পাশাপাশি থাকার সুবাদে তাদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। অন্যদিকে সবুজের সঙ্গে চোরাচালানের সূত্রে ভালো সম্পর্ক ছিল বেনাপোলের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে রিপন হাওলাদারের।

পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, রেজাউল পৈত্রিক সূত্রে দুই শতক জমি পেয়েছিলেন। সেখানে একটি বাড়িও ছিল। সবুজ ও রিপন ব্যবসার মাধ্যমে বেশি রোজগারের লোভ দেখিয়ে রেজাউলকে ওই জমি বিক্রি করতে বলেন। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তারা ক্রেতার কাছ থেকে টাকা নিয়ে রেজাউলকে দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করিয়ে দেন।

সেই টাকা দেওয়ার কথা বলে রেজাউলকে ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ি থেকে মোবাইলে ফোন করে ডেকে নিয়ে যান সবুজ। এরপর থেকে রেজাউলের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। দু’একদিন পর থেকে সবুজও নিজের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে উধাও হয়ে যান।

রেজাউলের আত্মীয় মতিয়ার রহমান জানান, রেজাউল নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই সবুজকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। পরে জানা যায় এ হত্যার ঘটনায় তার সঙ্গে রিপনও জড়িত রয়েছে। কিন্তু রিপন সরাসরি রেজাউলের সঙ্গে কোনো আলোচনায় যুক্ত ছিল না বলে তাকে ঠিকভাবে ধরা যাচ্ছিল না। তবে সবুজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তার বাড়ি আশাশুনি পর্যন্ত যায় পুলিশ। সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল। সে কারণে সবুজের জড়িত থাকার বিষয়টি এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সবুজ হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, অপহরণের পর রেজাউলকে হত্যা করে মরদেহ তার গ্রামের বাড়ির এলাকায় গুম করা হয়েছে। এই বক্তব্যের সত্যতা জানতে তাকে নিয়ে সাতক্ষীরার আশাশুনির উদ্দেশে রওনা দেবে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৫
আরএ

বাংলাদেশ সময়: ৫:০২ পিএম, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ /

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।