ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ ভাদ্র ১৪৩২, ২১ আগস্ট ২০২৫, ২৬ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

গ্রেপ্তার না করায় ৫ ঘণ্টা পর থানা থেকে ফিরে গেলেন রনিসহ শিক্ষার্থীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:১৫, আগস্ট ২০, ২০২৫
গ্রেপ্তার না করায় ৫ ঘণ্টা পর থানা থেকে ফিরে গেলেন রনিসহ শিক্ষার্থীরা থানায় অবস্থানরত থাকাকালীন শিক্ষার্থীরা

স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত মহিউদ্দিন রনিসহ শিক্ষার্থীরা ৫ ঘণ্টা বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় অবস্থান করলেও তাদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।

গ্রেপ্তার না হওয়ায় মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানা কম্পাউন্ড ত্যাগ করেন তারা।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে রনিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজেদের গ্রেপ্তারের দাবিতে থানার ভেতরে প্রবেশ করেন।

এ সময় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (দক্ষিণ) বেলাল হোসাইন-পিপিএম, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) অলক কান্তি শর্মাসহ কর্মকর্তারা থানার অভ্যর্থনা কক্ষেই রনিসহ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার হওয়া বিএম কলেজ ছাত্র সুহানের মুক্তির দাবি তোলেন এবং অন্যথায় নিজেদের গ্রেপ্তারের কথা বলেন। এ সময় রনি ও অতিরিক্ত উপ–কমিশনার বেলাল হোসাইনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন উপ–কমিশনার ইমদাদ হুসাইন।

আলোচনার সময় রনি বলেন, পুলিশ কমিশনার বিএম কলেজ ছাত্র সুহানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটির আমরা প্রতিবাদ জানাই। তিনি ২০১৮ সালের একটি ছবি দেখিয়ে সুহানকে ‘ডেভিল’ বলেছেন, কিন্তু বর্তমানে তেমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবেন না। সুহান একজন জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো, জয় বাংলা বলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের লোকজন যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তারা বাহিরে থাকবে, আর দালাল ও সিন্ডিকেট সদস্যরা ঘুরে বেড়াবে। কিন্তু মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলা জুলাই যোদ্ধারা কারাগারে যাবে।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে পুলিশ কমিশনার বলেছেন আমাকে ধরতে পুলিশ নাকি তারা করেছে। কিন্তু আমাকে ধরতে তারা করতে হবে কেন? আমি থানায় এসেছি—এখন আমাকে গ্রেপ্তার করা হোক। গ্রেপ্তার করলেও যদি স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার হয় এবং সাধারণ মানুষের উপকার হয়, তাহলে সেই কারাবরণ আমিসহ সহযোদ্ধারা মাথা পেতে নেবেন।

পরে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘক্ষণ পুলিশের সঙ্গে কথা বলে থানা কম্পাউন্ডে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক শেষে তারা ফিরে যান।

শিক্ষার্থীরা জানান, পুলিশ সুহানের মুক্তির বিষয়ে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা গ্রহণ এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনো বাধা না দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে পুলিশ।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ–কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন বলেন, থানা হচ্ছে নাগরিকদের সেবা নেওয়ার জায়গা। এখানে সেবা নিতে যে কেউ আসতে পারেন, শিক্ষার্থীরাও এসেছিল। আমরা তাদের দাবির কথা শুনেছি এবং কী করা সম্ভব সেটিও জানিয়েছি।

তিনি জানান, সুহানকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানাননি।

মেডিকেল স্টাফের দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি রনি থানায় এলেও তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযোগ করা নাগরিকের অধিকার। তবে তা তদন্ত করা পুলিশের কাজ। তদন্তে যদি রনির সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়, তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে শুধু ইচ্ছামতো গ্রেপ্তার করা যায় না।

** স্বেচ্ছা কারাবরণের জন্য থানায় অবস্থান শিক্ষার্থীদের

এমএস/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।