ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩২, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

রংপুরে আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দি হাজারো পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:২৪, অক্টোবর ৬, ২০২৫
রংপুরে আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দি হাজারো পরিবার তিস্তার পানি বেড়ে এলাকা প্লাবিত

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় হঠাৎ বন্যায় তিস্তাপাড়ের অন্তত সাড়ে ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিস্তার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অব্যাহত বর্ষণের ফলে নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বেড়েছে।

এর প্রভাবে কোলকোন্দ, আলমবিদিতর, নোহালী, গঙ্গাচড়া সদর, লক্ষ্মীটারী ও মর্নেয়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

পানিবদ্ধ এলাকায় বাগডোগরা, মিনারবাজার, আনন্দবাজার, বিনবিনা, চর মটুকপুর, চিলাখাল, বাগেরহাট, চর শংকরদহ, কাশিয়াবাড়ী, ইচলি ও চর ছালাপাকসহ শতাধিক বাড়ি, স্কুল ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। কৃষি জমি এবং ফসলও পানিতে ডুবে গেছে।

এছাড়াও জেলার কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় আরও ৫শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।  

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেল থেকেই তিস্তার পানি দ্রুত বাড়তে থাকে। রাত ১১টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। যদিও পানি নামতে শুরু করেছে, তবুও নদীর তীরে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

চর শংকরদহের কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, রাতারাতি পানি বেড়ে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। এখন পানি নামছে, কিন্তু ভাঙনের কারণে আমরা জানি না কাল সকালে বাড়ি থাকবে কি না।

গৃহবধূ রহিমা বেগম বলেন, আমরা তিনদিন ধরে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি। বাচ্চা ও গরু নিয়ে পরিস্থিতি খুব কষ্টকর। এখনও ত্রাণ পাইনি।

এদিকে জেলার কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ, টেপামধুপুর, বালাপাড়া ও পীরগাছা উপজেলার তাম্বলপুর ও ছাওলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নিচু এলাকাগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ধানসহ বিভিন্ন ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।  

কোলকোন্দের কৃষক সালাম উদ্দিন বলেন, আমনের ক্ষেত দেড় একর ছিল। সব পানিতে তলিয়ে গেছে। গরু খাওয়ানোর ঘাসও নেই।

গঙ্গাচড়া উপজেলা ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করীম জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং তাদের সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।  

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ হেক্টর আমন ধান, ১ হেক্টর মাসকলাই, ২ হেক্টর বীজবাদাম এবং ০.৫ হেক্টর সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সক্রিয়। আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।

স্থানীয়রা দ্রুত ত্রাণ এবং নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।