ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ কার্তিক ১৪৩২, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক শতবর্ষী সামসুদ্দিনের জীবনাবসান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:০৫, অক্টোবর ২২, ২০২৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক শতবর্ষী সামসুদ্দিনের জীবনাবসান বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক শতবর্ষী মো. সামসুদ্দিনকে চলতি বছরের ১৭ মার্চ শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম

যশোর: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী বৃটিশ সেনা যশোরের শতবর্ষী মো. সামসুদ্দিন (১০১) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।

বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২২ অক্টোবর) ভোরে ইন্তেকাল করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে গোলাম মোস্তফা হেলা। তিনি আমৃত্যু বৃটিশ সরকারের কাছ থেকে সরকারি ভাতা লাভ করেছেন।   

শামসুদ্দিন বিশ্বাসের বাড়ি যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়া গ্রামে। তবে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন মাদ্রাজে ১৯২৪ সালের জুন মাসে। তিনি প্রায় ২০ বছর যশোর শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলায় মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করতেন। তার ছেলেরা গ্রামে বসবাস করেন।  

চলতি বছরের ১৭ মার্চ জেলা সশস্ত্র বোর্ডের এক সভায় মো. সামসুদ্দিনের ইতিহাস জানার পর যশোরের জেলা প্রশাসক তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে ছুটে গিয়েছিলেন।  

সেদিন তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ঈদ উপহার হিসেবে নগদ অর্থও প্রদান করেছিলেন জেলা প্রশাসক। বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়েছিলেন তার সান্নিধ্যে।  

সেসময় জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘এমন একজন মানুষ এ শহরে (যশোর) অবস্থান করেন এটা খুবই গর্বের বিষয়’। ল্যান্স কর্পোরাল সামসুদ্দিন কর্মজীবনে আরো ছিলেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে।  

পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ১১ বছর বয়সে ১৯৩৫ সালে তিনি ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগদান করেছিলেন। তার সৈনিক নম্বর ছিল ৬৪১৪৬০। ১৯৩৯ থেকে শুরু করে ১৯৪৫ সাল-পুরো ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ময়দানে ছিলেন এই যোদ্ধা।

প্রায় সাত মাস আগে স্মৃতি রোমন্থন করে ল্যান্স কর্পোরাল মো. সামসুদ্দিন জানিয়েছিলেন, যুদ্ধ চলাকালে একবার সিঙ্গাপুরে তিন হাজার সহযোদ্ধাসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সে অবস্থায়ই টানা তিন মাস যুদ্ধ চালিয়েছিলেন তারা। বিশ্বযুদ্ধের পরও সেনাবাহিনীর চাকরিতে ছিলেন তিনি।

১৯৪৭ সালের দেশভাগ হয়ে গেলে মো. সামসুদ্দিন যোগ দিয়েছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। পরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশে চলে আসেন। যোগ দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। এর কিছুকাল পর অবসরে যান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এ লড়াকু যোদ্ধা।

মো. সামসুদ্দিনের দুই ছেলে, দুই মেয়ে। স্ত্রী জাহেদা খাতুন মারা গেছেন ১৯৯৯ সালে।  

এসএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।